বসুন্ধরা এলাকার বিস্তারিত
একনজরে বসুন্ধরা আ/এ
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, অনেকের কাছেই স্বপ্নের সামিল। আবাসিক এলাকা হিসেবে আলাদা জনপ্রিয়তা আছে বসুন্ধরার। মূল শহরের কোলাহল থেকে খানিকটা দূরে, ছায়াঘেরা শান্ত পরিবেশে সুপরিল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে চমৎকার এই এলাকাটি। আর একারণেই অনেকের কাছে বসুন্ধরায় একটি বাড়ি থাকা মানে ঢাকার মাটিতে যেন স্বর্গের সুখ খুঁজে পাওয়া। শিশুদের জন্য স্কুল যেমন রয়েছে, তেমনি এখানে রয়েছে নামকরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বৃহত্তম শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্কও অবস্থিত বসুন্ধরার সাথেই। সুচিকিৎসার জন্য বসুন্ধরায় রয়েছে অ্যাপোলো হাসপাতাল।
বসুন্ধরা এলাকা সম্পর্কে
পারিবারিক ও সামাজিক সুবিধাদি
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা যেমন থাকার জায়গা হিসেবে অসাধারণ, তেমনি অসাধারণ বসুন্ধরাবাসীদের মধ্যে গড়ে ওঠা সৌহার্দ্য। কমিউনিটির সকলেই নীতি-নৈতিকতার মধ্যে থেকে একে অপরের সাথে দারুন সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেন। নিজের এলাকা নিজেই পরিচ্ছন্ন রাখার দারুণ প্রচেষ্টা রয়েছে বসুন্ধরাবাসীর মধ্যে। মাত্র পঁচিশ বছর আগেও যেখানে কেবল ধূ ধূ মাঠ কিংবা জল ছাড়া কিছুই ছিল না, আজ সেখানেই গড়ে উঠেছে সম্প্রীতির বন্ধনে আধুনিক নগরজীবনের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
বসুন্ধরায় প্রপার্টি
পরিকল্পনা ছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় থাকবে বাংলো বা ছিমছাম সাজানো গোছানো বিত্তশালীদের বাড়ির আধিক্য। তবে সময়ের সাথে সাথে এই এলাকায় মধ্যবিত্ত এবং উচ্চমধ্যবিত্ত মানুষও বসবাস করতে শুরু করেছে। এই এলাকার অধিকাংশ ভবনই ডেভেলপার কোম্পানির নির্মাণ করা। ৮০০ থেকে ৩২০০ স্কয়ার ফিটের মধ্যে অধিকাংশই ২ বেড এবং ৩ বাথের অ্যাপার্টমেন্ট। অনেকগুলো স্কুল এবং তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থাকলেও, অধিকাংশ বাণিজ্যিক কার্যক্রম বসুন্ধরা গেইটের সামনের অংশে হয়ে থাকে। গ্রামীণফোনের অফিস “জিপি হাউজ” এবং যমুনা ফিউচার পার্কও দাঁড়িয়ে আছে বসুন্ধরায় প্রবেশের গেট সংলগ্ন এলাকায়।
বসুন্ধরার যাতায়াত ব্যবস্থা
অভ্যন্তরীণ এবং শহরমূখী, এই দুই রকমের যাতায়াত ব্যবস্থাই আছে বসুন্ধরায়। এলাকার ভেতরে যে কোনো জায়গায় যাতায়াতের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত রিকশা । সেইসাথে যে কেউ চাইলে ব্যক্তিগত যানবাহনও ব্যবহার করতে পারেন। বসুন্ধরার বাণিজ্যিক অংশটির সামনের প্রধান সড়কটি হল প্রগতি সরণি। এখান দিয়ে চলাচল করে সিএনজি, ট্যাক্সিসহ বিভিন্ন রুটের বাস। যে কারণে এখান থেকে শহরের যে কোনো প্রান্তে যাতায়াত করা খুবই সহজ। অবশ্য পার্কিং-এর ক্ষেত্রে খানিকটা ঝামেলা পোহাতে হতে পারে আপনাকে। ব্যক্তিগত গাড়ি পার্কিং-এর জন্য ভাল একটি জায়গা খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন এখানে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা, ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল এন্ড কলেজসহ আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমৃদ্ধ এই এলাকাটি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়- নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এন.এস.ইউ), ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আই.ইউবি) এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এ.আই.ইউ.বি) অবস্থিত বসুন্ধরার ভিতরেই।
হাসপাতাল
বাংলাদেশের অন্যতম অভিজাত হাসপাতালও কিন্তু অবস্থিত এই বসুন্ধরাতেই। বহুবছর ধরে সেবার কাজে নিয়োজিত অ্যাপোলো হাসপাতাল, চিকিৎসার মানের দিক দিয়েও দিয়ে যাচ্ছে তাদের সেরাটাই। হাসপাতালটি এলাকার ব্যস্ততম অংশ থেকে একটু দূরে অবস্থিত। যাতে দ্রুত এবং সহজে যাতে হাসপাতালে পৌছানো যায় সেজন্য রয়েছে পর্যাপ্ত গাড়ি, সিএনজি এবং রিকশা। বাড়ির কাছেই এটি অবস্থিত হওয়ায় যে কোনো জরুরি অবস্থায়, দ্রুত চিকিৎসার নিশ্চয়তা পান বসুন্ধরাবাসীরা।
মসজিদ
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে অসংখ্য মসজিদ। প্রায় প্রতিটি ব্লকেই রয়েছে প্রতিদিনের নামাজসহ জুম্মাবার এবং ঈদের জামাতের জন্য চমৎকার ব্যবস্থা।
আশপাশের এলাকা
ঢাকা শহরের যে কোনো জায়গায় সহজে যাতায়াতের জন্য বসুন্ধরার তুলনা হয় না। এয়ারপোর্ট হোক কিংবা গুলশানের ব্যস্ত এলাকা, বসুন্ধরা থেকে চলে যাওয়া যায় খুব সহজে। শহরের সবগুলো রাস্তার সংযোগ রয়েছে বসুন্ধরার সাথে। রয়েছে শহরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পূর্বাচল নিউ টাউনের সংযোগ সড়ক, যেখানে ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে ভবিষ্যতের ঢাকা।
বসুন্ধরায় জীবনযাপন
খাবার এবং রেস্টুরেন্ট
ছোট ছোট ফুড স্টল থেকে শুরু করে পিজ্জা হাট এবং কেএফসির মতো বড় রেস্টুরেন্ট, ভোজন বিলাসীদের আনাগোনায় মুখর থাকে বসুন্ধরার প্রতিটি খাবারের দোকান। অন্যান্য এলাকার ফুডকোর্টের মতোই, এই এলাকার ফুড কোর্টগুলোও সুনাম কুড়িয়েছে বেশ।
কেনাকাটা এবং চিত্তবিনোদন
বসুন্ধরার প্রধান সড়কেই রয়েছে বেশকিছু শপিং স্পট। জামাকাপড়, জুতা, ব্যাগ থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় যেকোনো পণ্য, সবই পাওয়া যায় এখানে। ছোট ছোট ইলেক্ট্রিক গ্যাজেট কিংবা ইলেকট্রিক সামগ্রীও কেনা যাবে আশেপাশের দোকানগুলো থেকে। কিন্তু এসব কিছু ছাড়িয়ে, গোটা বসুন্ধরার অলঙ্কার বলা চলে যমুনা ফিউচার পার্ককে।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিং মলটির নাম যমুনা ফিউচার পার্ক। বিশাল এই শপিং মলের ভিতরে পাওয়া যাবে না এমন কিছুই নেই। নামকরা সব ব্র্যান্ডেড শপ রয়েছে এখানে। এই শপিং মলের সবচেয়ে উপরের তলায় রয়েছে বিশাল ফুড কোর্ট যেখানে আপনি পেয়ে যাবেন বার্গার কিং থেকে শুরু করে পিজ্জা হাটের মত ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। আছে স্থানীয় অনেক বিখ্যাত খাবারের দোকানও। এছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাজ মুভি দেখবার জন্য একটি চমৎকার স্থান।