একনজরে গুলশান ১
গুলশান ১ সম্পর্কে
ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত এলাকার নাম নিতে গেলে নিঃসন্দেহে সেখানে গুলশান ১-এর নাম থাকবে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থাকায় প্রতিটি কর্মদিবসই থাকে মানুষের পদচারনায় মুখর। আর এসবকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য খাবারের দোকান, রেস্টুরেন্ট এবং আনুষাঙ্গিক স্থাপনা। হাতের কাছেই ১ নম্বর গোলচত্বরে আছে ডি.সি.সি মার্কেট যেখানে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে। তবে সব ছাড়িয়ে গুলশান হল দেশের প্রথম সারির একটি আবাসিক এলাকা। দেশের সবচেয়ে ধনী এবং বর্ণাঢ্য মানুষেরাই কেবল এখানে একটি বাসা বা জমির মালিক হতে পারে। সকল সুযোগসুবিধা এবং চমৎকার যোগাযোগব্যবস্থা মিলিয়ে গুলশান নিঃসন্দেহে ঢাকার সবচেয়ে বাসযোগ্য এলাকার একটি।
গুলশান ১ এলাকা সম্পর্কে বিস্তারিত
আবাসিক এলাকা হিসাবে গুলশান ১
একথা সত্য যে গুলশান এখন ঢাকার অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা হয়ে উঠেছে। তবে মেইন রোড থেকে একটু ভেতরের দিকে গেলেই দেখা মেলে চমৎকার একটি বাসযোগ্য কমিউনিটির। গুলশান ১ এবং সংলগ্ন নিকেতন বসবাসের জন্য খুবই শান্তিপূর্ণ এলাকা হিসাবে স্বীকৃত। বাচ্চাদের জন্য যেমন আছে স্কুল, সেই সাথে আছে অফিস-ব্যাংক এবং বিপণী বিতান। আছে নানান ব্র্যান্ডের শপ। একটি আবাসিক এলাকার সকল সুবিধা এখানে উপস্থিত। নিকেতন এমন একটি হাউজিং প্রজেক্ট যেখানে মোটামুটি আশপাশের সবাই সবাইকে চেনে। ফলে সমমনা মানুষের মধ্যে গড়ে উঠে চমৎকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।
গুলশান ১-এ প্রপার্টি
গুলশানকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল একটি সাজানো গোছানো আবাসিক এলাকা হিসাবে। সেই সাজানো গোছানো ভাবটি ঠিকই আছে কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে এটি একটি ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা। ছোট বড় সবধরনের প্রতিষ্ঠানের অফিস আছে এই এলাকায়। মেইন রোড ধরে এগুলোই আপনি সিটিস্কেপ টাওয়ার, গ্লাস হাউজ, ক্রিস্টাল প্যালেস বা পুলিশ প্লাজার মত সুবিশাল ও সুউচ্চ ভবন দেখতে পাবেন। শুধু বড় বড় বাণিজ্যিক ভবনই নয় বরং দেশের সবচেয়ে অভিজাত এবং বিলাসবহুল বাংলো বা ভিলার দেখাও মিলবে এই গুলশানেই।
যাতায়াত ব্যবস্থা
নগরজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যাতায়াতব্যবস্থা। আর একটি উন্নত এলাকার যাতায়াতব্যবস্থাও হবে উন্নত। গুলশানের আছে নিজস্ব বাস সার্ভিস যা ঢাকা চাকা এবং গুলশান চাকা নামে দুটো কোম্পানির ব্যানারে চলাচল করে। এছাড়া বাড্ডা থেকে মহাখালি রুটে সব বাস গুলশান ১ গোলচত্বর হয়েই যাওয়া আসা করে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের জন্য রিকশা তো থাকছেই। তবে গুলশান ১ যেখানে অন্যসব এলাকার যাতায়াত থেকে ভিন্ন তা হল এর স্পেশাল ফেরি সার্ভিস। হাতিরঝিল ওয়াটার বোট নামে এই সার্ভিস নিশ্চিত করে মানুষের সহজ ও দ্রুত যাতায়াত। এভাবেই গুলশান ১ হয়ে উঠেছে যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ হাব।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
আলিশান গুলশানে সবাই থাকতে চায় পরিবার পরিজন নিয়ে। আর অভিজাত এই এলাকায় আছে বেশ কিছু উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিখ্যাত অনেকগুলি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল যেমন চিটাগাং গ্রামার স্কুল, ইসলামিক ইন্ট্যারন্যাশনাল স্কুল, অস্ট্রেলিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং সি ব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল আছে গুলশান ১-এ। তাই এখানে মেলে উন্নত শিক্ষার নিশ্চয়তা।
চিকিৎসা সুবিধা
বাণিজ্যিক কারণে এবং ভোজনরসিকদের জন্য গুলশান ১ খুবই পরিচিত যায়গা। তবে এই এলাকা কিন্তু চিকিৎসা সুবিধার দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই! সিউরসেল মেডিক্যাল সেন্টার, গুলশান মেডিকেয়ার, কিউর মেডিক্যাল সেন্টার এবং ফেয়ারওয়েজ মেডিক্যাল সেন্টারের মত অসংখ্য ক্লিনিক এবং মেডিক্যাল সেন্টার দিয়ে গুলশান ১ স্বয়ংসম্পূর্ণ।
চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা
আবাসিক এলাকা হিসাবে গুলশান ১ প্রসিদ্ধ। সবুজে ঘেরা এ এলাকায় চাইলেই চমৎকার সময় কাটানো সম্ভব পরিবার পরিজন নিয়ে। আর সেজন্য সবার প্রিয় গন্তব্য হল গুলশানের চমৎকার পার্কগুলো। নিকেতন আবাসিকের লাগোয়া রয়েছে চমৎকার সাউথ পার্ক।
এছাড়া চিত্তবিনোদনের জন্য যে হাতিরঝিলে সারা ঢাকা থেকে মানুষ ঘুরতে আসে তা অবস্থিত ঠিক গুলশান ১ এর পাশেই। গুলশান ১ এ আরো আছে শুটিং ক্লাব। এটি অবশ্য যারা প্রফেশনাল সুটার তাদের জন্যই উপযুক্ত।
মসজিদ
সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণের জন্য সব এলাকাতেই দরকার বিশেষ স্থাপনার। গুলশান ১-এও বিখ্যাত কিছু মসজিদ আছে। ১ নং ডিসিসি মার্কেট থেকে মেইন রোড ধরে পুলিশ প্লাজার দিকে যেতে হাতের ডানেই পড়বে বিশাল গুলশান ১ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।
আশপাশের এলাকা
গুলশান ২, মহাখালী, তেজগাঁও এবং বাড্ডার মত ৪টি প্রধান এলাকার মাঝখানে অবস্থিত হওয়ায় গুলশান ১এর গুরুত্ব বেড়ে যায় অনেকাংশে। তাই এসব এলাকার মধ্য দিয়ে চলাফেরা করার বিশেষ সুবিধা ভোগ করেন গুলশান এলাকাবাসী। এছাড়াও বনানী, ফার্মগেট বা এয়ারপোর্টের মত এলাকাতেও খুব সহজে পৌঁছানো সম্ভব গুলশান ১ থেকে।
গুলশান ১-এ জীবনযাপন
খাবার এবং রেস্টুরেন্ট
গুলশান ১এ খাবারের অপশনের কোন শেষ নেই। এই এলাকায় এক মুহুর্ত হাঁটলেই আপনি উপস্থিত হবেন নতুন কোন রেস্টুরেন্টের পাশে। টাইমআউট, পিজ্জা হাট, কেএফসি, নর্থ এন্ড, গ্লোরিয়া জিনস, পুর্ণিমা রেস্টুরেন্ট, গুলশান প্লাজার মত অসংখ্য ফুড হাব এবং রেস্টুরেন্ট গুলশান ১ কে করে তুলেছে ভোজনরসিকদের জন্য এক স্বর্গরাজ্য।
শপিংএর গন্তব্য
গুলশান ১ চমৎকার একটি বাণিজ্যিক এলাকা যেখানে রয়েছে অসংখ্য দোকানপাট। ছোটখাট দোকান থেকে শুরু করে বিশ্বখ্যাত নানান ব্র্যান্ড, ডিসিসি’র মত বিশাল মার্কেট বা পুলিশ প্লাজার মত শপিং মল, সবই আছে এখানে। পাইকারী মূল্যে খুচরা পণ্য ক্রয়ের জন্য গুলশান ১ ডিসিসি মার্কেটের সুনাম আছে সমগ্র ঢাকাজুড়ে। আর বিভিন্ন সুপারশপ তো থাকছেই!