Reading Time: 4 minutes

বর্তমান সময়ের কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা আমাদের সবার ভেতরে তৈরি করেছে গভীর ক্ষত। যদিও এ ঘটনাগুলোর জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমরা নিজেরা দায়ী। যথাযথ অগ্নি সচেতনার অভাবে একের পর এক ঘটে চলেছে মর্মান্তিক এ ঘটনাগুলো। সম্প্রতি এই সব ঘটনা দেখার পর থেকেই আমরা অনেকেই হয়ে উঠেছি সচেতন। নেয়া হচ্ছে যথাযথ নিরাপত্তা ভিত্তিক পদক্ষেপ। তবে এই সব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চাই আরও সচেতনতা। জেনে নিতে হবে অগ্নি সচেতনতা সম্বন্ধে সঠিক তথ্য ও পরিকল্পনা। কেননা আমাদের নিজেদের দায়িত্ব একে অপরকে সচেতন করা। চলুন তবে জেনে নেই, রিয়েল এস্টেট সেক্টরে অগ্নি সচেতনতা সম্বন্ধে কিছু বিষয়।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা   

এফআর টাওয়ারের ছবি
এফআর টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের চিত্র

বিগত বছরে ঘটে যাওয়া নিমতলী, বসুন্ধরা সিটি এবং তাজরীন গার্মেন্টসসহ ভয়াবহ এসব অগ্নিকান্ডের সাক্ষী এই রাজধানীবাসী। দূর্ভাগ্যবসত এই দুর্ঘটনা গুলো এখনো থামেনি! চকবাজার এবং এফআর টাওয়ার তারই এক তপ্ত দৃষ্টান্ত। আফআর টাওয়ারে এই দূর্ঘটনার পর আমরা জানতে পারলাম বনানীর মত বাণিজ্যিক এলাকায় এইসব আধুনিক ভবনেও অগ্নি সচেতনতার এত অভাব রয়েছে। এই নিরাপত্তার অভাবেই জীবন শেষ হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক মানুষের। অগ্নি সচেতনতা থাকলে হয়তো এই শতাধিক মানুষের গল্প আজ ভিন্ন হতো। ঢাকা ট্রিবিউনের মতে ২০১৮ তে গড়ে সারা বছর জুড়ে দৈনিক প্রায় ৫৩ টির মত অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমশ যেন বেড়ে না যায় সেই লক্ষ্যে আমাদের সবারই হতে হবে আরও সচেতন।

অগ্নি সতর্কতা

ম্যাচ বক্সের ছবি
ছোট ছোট বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিৎ

ম্যাচের কাঠির আগুন এক মূহুর্তেই ছড়িয়ে যেতে পারে সমস্ত ঘরে। আগুনের ছোট্ট একটি ফুল্কি ঘটাতে পারে বিশাল এক অগ্নিকান্ড। তাই আমাদের হওয়া চাই পদে পদে সাবধান। আর এই সাবধানতার শুরু আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে। প্রতিনিয়ত আমরা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছি। এর যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি রয়েছে নানান অসুবিধা। ঘরের ফ্যান থেকে শুরু করে লাইট এমনকি ফোনের চার্জার সবকিছুতেই রয়েছে কিছু না কিছু ঝুঁকি। খানিকটা সাবধানতা আপনাকে বাঁচিয়ে দিবে এমন সব ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে। উদাহরণ সরূপ, বলা যায় আমরা অনেকেই ঘরে ব্যবহার করি নানা পাওয়ারের বাল্ব। আমরা অনেকেই আছি ক্লজেট রুমে এই বাল্বগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য জ্বালিয়ে রাখি যা মোটেও নিরাপদ নয়। কারণ এই বাল্বগুলো গরম হয়ে কাপড়ের মধ্যে তৈরি করে অতিরিক্ত তাপ যার ফলে ঘটতে পারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। এছাড়া সকল হোম এপ্লায়েন্সের বৈদ্যুতিক সংযোগের প্রতি দিন বাড়তি মনোযোগ। এই সকল সতর্কতা মেনে চললেই ভয়াবহ অগ্নিকান্ড থেকে আমরা সকলেই রেহাই পাবো।

অগ্নি প্রতিরোধমূলক সতর্কতা

এক্সিটের চিনহ
পূর্ব পরিকল্পনাই একমাত্র পন্থা ঝুঁকি কমানোর

আমরা ইতিমধ্যে জেনে নিয়েছি আগুন লাগার কিছু সম্ভাব্য কারণ। কিন্তু শুধু সচেতনতা দিয়ে দূর্ঘটনা কখনই থামানো সম্ভব নয়। তাই অগ্নিকান্ড কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন তারও একটি আগাম পরিকল্পনা থাকা জরুরী। অগ্নি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন ৩ টি বিষয়ের তা হল, স্মোক ডিটেকটর, ফায়ার এলার্ম সিস্টেম এবং আগুন লাগলে ভবন থেকে বের হবার পরিকল্পনা। বাসায় যত ধরনের অগ্নি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিন না কেন আগুন যেকোনো সময় জ্বলে উঠতে পারে। অতএব, আপনার প্রয়োজন একটি পরিকল্পনা করা যা আপনাকে সংকটের পড়লে মূহুর্তে সাহায্য করবে। আপনার পরিবারের সাথে বসে আগে আগুন লাগলে ভবন থেকে বেড় হবার পথ গুলো কোথায় আছে তা বের করুন এবং আগে থেকেই একটি মহড়া আয়োজন করুন। পরিবারের সকল সদস্যকে কিভাবে রক্ষা করা যায় এ ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। এ পন্থাগুলো ছাড়াও আরও বিভিন্ন উপায়ে দুর্ঘটনার সময় অগ্নি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। 

সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে  

বিপ্রপার্টি সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড
অগ্নি সচেতনতাই একমাত্র সমাধান

বাংলাদেশের বৃহৎ রিয়েল এস্টেট মার্কেটপ্লেস বিপ্রপার্টি অগ্নি সচেতনতা জোরদারের লক্ষ্যে ডেভেলপার, প্রপার্টির মালিক এবং আবাসিক বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশে অনবরত কাজ করে যাচ্ছে। যাতে করে হাজারো জীবন বেঁচে যেতে পারে। বিপ্রপার্টির অসংখ্য অগ্নি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চলছে অনলাইন অফলাইন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। এমনকি বিপ্রপার্টি প্রপার্টি মালিকদের সচেতন করবার লক্ষ্যে অগ্নি সতর্কতা ও নিরাপত্তা তথ্য সম্পর্কিত বোর্ড প্রদান করে যাচ্ছে। যাতে করে এই সকল ভয়াবহ দুর্ঘটনা গুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। একটি ছোট প্রচেষ্টা, একটি ছোট ভাবনা থেকে আসতে পারে বড় কোন পরিবর্তন। বিপ্রপার্টি আস্থা রাখে, একটি ছোট্ট প্রচেষ্টা বয়ে আনতে পারে একেকটি অপার সম্ভাবনা! আর সচেতনতা বৃদ্ধি, হতে পারে সেই এক প্রচেষ্টা যা কিনা দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে পারবে অনেকাংশে।

একটি লিফট এবং সাইনবোর্ড
বিপ্রপার্টির অগ্নি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন

বিপ্রপার্টির ইউটিউব চ্যানেলের “প্রপার্টি ট্যুর” এর প্রতিটি ভিডিওর শেষে রয়েছে অগ্নি নিরাপত্তা ও প্রতিরোধে ‘ফায়ার সেফটি প্রটোকল’, এটি দেখার মাধ্যমে ভিউয়ার্সরা জানতে পারবে কিভাবে অগ্নি সম্পৃক্ত সচেতনতা গ্রহণ করা উচিৎ এবং অগ্নিকান্ডের সময়ে কি কি করলে সকলে নিরপদে  জীবন বাঁচানো সম্ভব।

টেক্সট ইমেজ
‘ফায়ার সেফটি প্রটোকল’

অগ্নি সচেতনতা ও নিরাপত্তা সম্বন্ধে জানানোর মানে আপনাকে ঘাবড়ে দেয়া নয়। বরং আপনাকে ও আপনার পরিবারকে কিভাবে নিরাপদে রাখবেন তা দেখিয়ে দেয়া। কেননা, দিনশেষে এটা আমাদেরই দায়িত্ব একে ওপরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাই যথাসম্ভব অগ্নি সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাতে করে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের হাত থেকে আমরা নিরাপদে থাকতে পারি। সচেতনতামূলক এমন আরও লেখা পড়তে চোখ রাখুন বিপ্রপার্টি ব্লগে। 

Write A Comment