Reading Time: 3 minutes

মিউটেশন খতিয়ান বা নামজারি, রিয়েল এস্টেট এর ভাষায় এর মানে হলো জমির পূর্ববর্তী মালিকের নামের জায়গায় খতিয়ানে নতুন মালিকের নামের পরিবর্তন করা। এই নাম পরিবর্তের প্রক্রিয়াটি ‘মিউটেশন খতিয়ান’ অথবা ‘নামজারি’ দুইটি নামেই পরিচিত। আর এই প্রক্রিয়াটির আইনানুগ দলিল বা নথি মূলত নামজারি বা মিউটেশন খতিয়ান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রপার্টির মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধাপটির গুরুত্ব তাই অনেক বেশি বলেই গণ্য করা হয়। কেননা, এই নথির অবর্তমানে, প্রপার্টির পূর্ববর্তী মালিক যদি চায় তবে সে যেকোনো মুহূর্তেই প্রপার্টি বিক্রি করে দিতে পারবেন। 

আর তাই মালিকানা পরিবর্তনের সময় অবশ্যই নামজারির কাজটি সম্পন্ন করতে হবে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে। সাধারণত ২টি প্রক্রিয়ায় মিউটেশন খতিয়ান বা নামজারির জন্য আবেদন করা যায়। প্রথমত, ভূমি অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বরাবর সরাসরি গিয়ে এই নামজারির প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা। আর দ্বিতীয়ত, নামজারি আবেদনের ওয়েবসাইটে গিয়ে ঘরে বসেই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে অনলাইনে মিউটেশন খতিয়ান বা নামজারি জন্য আবেদনের একটি ইনফোগ্রাফিক এখানে দিয়ে দেয়া হলো।  

অনলাইনে নামজারির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইনে নামজারির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া

অনলাইনে নামজারির জন্য ধাপে ধাপে আবেদন এর প্রক্রিয়া

১।  অনলাইনে আবেদন করার জন্য মিউটেশন খতিয়ান বা নামজারি আবেদন এর ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। এখানে আপনি তথ্য পূরণ করার জন্য অনেকগুলো খালি ঘর বা অপশন দেখতে পাবেন। তবে আপনি যদি এই অপশন গুলোতে ক্লিক করেন, তবে লাল রঙে হাইলাইট করা কিছু ঘর আপনি দেখতে পাবেন, যে ঘরগুলো প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অবশ্যই পূরণ করতে হবে। তবে এই ঘরগুলো পূরণ করার আগে আপনাকে সঠিক ‘মালিকানা স্বত্ব’ অপশনটি নির্বাচন করতে হবে।

screenshot - 1

২।  এবার ‘জমির তথ্য’ অংশে গিয়ে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে ঘরগুলো পূরণ করুন। এই ধাপে প্রতিটি অপশনে গিয়ে তথ্য পূরণ করার দরকার হয়তো নাও হতে পারে। তবে ভবিষ্যতের যেকোনো জটিলতা (যদি এমন কিছু ঘটে) এড়িয়ে চলতে চাইলে আগে থেকেই সকল তথ্য পূরণ করে রাখা উচিত।

screenshot - 2

৩। প্রক্রিয়ার এই ধাপে, দুইটি ভিন্ন তথ্যের জন্য দুইটি বিভাগ দেখতে পাবেন। এর মধ্যে একটি অপশন হল ঐচ্ছিক। মিউটেশন খতিয়ানের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে মালিকানা স্বত্ব দাবি করা ছাড়াও যদি আপনার অন্য কোন উদ্দেশ্য থেকে থাকে তবেই এই অপশনটি পূরণ করতে হবে, নতুবা না করলেও চলবে। তবে অন্যটির জন্য উল্লেখিত ঘরে অবশ্যই বর্তমান মালিকের নাম এবং ঠিকানা দিতে হবে।     

screenshot - 3

৪। প্রক্রিয়ার এই অংশেও ভিন্ন দুইটি বিভাগ রয়েছে। একটিতে আবেদনকারীর তথ্য এবং অন্যটিতে বিক্রেতার তথ্য দেয়ার জন্য। আর এই অংশে আপনাকে দুইটি বিভাগের সকল তথ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে আপনি যদি আবেদনকারীর প্রতিনিধি হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে চেক বক্সে টিক দিয়ে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিতে হবে।     

screenshot - 4

৫। সব শেষ এই ধাপে এসে প্রয়োজনীয় সব দলিল  jpg, png, অথবা pdf ফরম্যাট এ সংযুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনীয় দলিল এর মধ্যে রয়েছে সব বায়া দলিলের সার্টিফায়েড কপি, খতিয়ান, জমির খাজনা রশিদ, আবেদনকারী বা তার প্রতিনিধির এনআইডি কার্ড এবং অন্যান্য দলিল সমূহ। 

৬। এবার ‘দাখিল’ বাটনে ক্লিক করার পর ওয়েবসাইটে আবেদন ফর্মের একটি প্রিভিউ দেখা যাবে। যেখানে ফর্মে উল্লেখ করা নথিভুক্ত সকল তথ্য আপনি দেখে নিতে পারবেন। এছাড়াও প্রয়োজনীয় যে সকল দলিল সংযুক্ত করতে হবে সে ব্যাপারেও আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন।

বিভিন্ন উপায়ে মালিকানা স্বত্ব হস্তান্তর করা যেতে পারে।  সেটা হতে পারে কাবালা বা বিক্রি, উপহার, বিনিময়, উইল, ওয়াকফ, উত্তরাধিকার বা সরকারের মাধ্যমে। ভূমিহীন থেকে খাস জমির বন্দোবস্ত যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক, জমির নতুন মালিকের নামজারি না করা পর্যন্ত কেউই জমির কোন অংশের মালিকানা স্বত্ব দাবি করতে পারবে না। আর তাই অনলাইনে নামজারির জন্য আবেদন প্রক্রিয়াটি দুই পক্ষের জন্য এখন বেশ সহজ হয়ে গিয়েছে। 

Write A Comment

Author