অবকাঠামো এমন একটি শব্দ যার একাধিক দিক এবং গুরুত্ব রয়েছে। যেকোন ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কাজ করার উৎসাহ বা দীক্ষা দিয়ে থাকে এই অবকাঠামো। যেকোন কিছুর অবকাঠামো আমাদের নতুন কিছু সূচনা করার সাহস যোগায় এবং দিক নির্দেশনা দেয়। তেমনি রিয়েল এস্টেট খাতও সরাসরি নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলের অবকাঠামোর সাথে সম্পর্কিত। কোন স্থাপনা নির্মাণের সময় এই অবকাঠামোগত মানদণ্ডগুলোই আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। রিয়েল এস্টেট খাতে অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে আরও জানতে পড়তে থাকুন।
রাস্তা, মহাসড়ক, পরিবহন এবং গণপরিবহন ব্যবস্থায় অবকাঠামো
এই রাস্তা বা পরিবহনের জন্যই আজ বিভিন্ন দূরবর্তী এলাকা বা অঞ্চলে যাতায়াত করা সহজ ও দ্রুততর হয়েছে। এই রাস্তা বা পরিবহন ব্যবস্থার জন্যই বিভিন্ন এলাকার সাথে যাতায়াত বা যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি ব্যবসায়িক অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে, আজ এই এলাকাগুলো ধীরে ধীরে গ্রাম থেকে শহর এবং শেষে মেগাসিটিতে পরিণত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক এই সমস্ত উন্নয়ন ও সুযোগ সুবিধার জন্য অনেক মানুষ এই সমস্ত এলাকাকে কাজ ও বসবাসের জন্য বেছে নেন। এই এলাকাগুলোর বাণিজ্যিক শৃঙ্খলা বা পরিকল্পনা ব্যতিক্রমভাবে সাজানো হয়েছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে সে এলাকায় বসবাসরত মানুষজনের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা এখান থেকেই আমরা বুঝতে পারি।
ইউটিলিটির ব্যবহার
ইউটিলিটি বলতে আমরা বোঝাচ্ছি গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ। উন্নত এলাকায় মৌলিক ইউটিলিটি সরবরাহের জন্য আধুনিক অবকাঠামো থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এইগুলো রিয়েল এস্টেট খাতের জন্য সর্বাধিক প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত দিক যা জনসাধারণের জন্য অবশ্যই টেকসই এবং সহজেই ব্যবহার যোগ্য হতে হবে। ইউটিলিটি সুবিধা ছাড়া কোন জায়গাই থাকার জন্য উপযুক্ত নয়। একটি আদর্শ বাসস্থান রিয়েল এস্টেট খাতের এই উপাদানের উপর নির্ভর করে।
স্যানিটেশন, নর্দমা ও বর্জ্য ব্যবস্থা
এমন যেকোন জায়গা যেখানে রিয়েল এস্টেট ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে তা নিঃসন্দেহে আকাশ ছোঁয়া সাফল্য পাবে। এবং এই সমস্ত জায়গায় কখনই লোকালয়ের অভাব হবে না। মানে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থাকবে সবসময়ই। আর যেখানে মানুষের সংখ্যা বেশি সেখানে বরাবরই, দ্রুত বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয়ে থাকে বেশি। কেননা, সেখানে ঘনবসতি বেশি দেখে বর্জ্য ব্যবস্থায় চাপও বেশি থাকে। আর এই চাপ মোকাবিলা করার জন্যই অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে না হয়ে থাকে তাহলে, জলাবদ্ধতা, মশা, জলবাহিত রোগের হার, দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি এই সমস্ত সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। সুতরাং, এরই মাধ্যমে রিয়েল এস্টেট উন্নয়নের অবকাঠামোগত গুরুত্ব সম্বন্ধে আমরা বুঝতে পারি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো
যেকোন বড় শহরেই থাকে নানারকমের মানুষ। যার ফলে একেক মানুষের চাহিদা একেক রকম। যেকোন প্রাকৃতিক সংকট বা দুর্যোগের সময় যে সংকট মোকাবিলা করতেও প্রয়োজন একটি শক্তিশালী অবকাঠামোর। যাতে করে যেকোন সংকটের সময়, জরুরীভাবে সকল দুর্যোগের ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হয়। ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে হাসপাতাল সবকিছুই এমনভাবে প্রস্তুত রাখা যেন বিপদের সময় যথাযথ সাপোর্ট দিতে পারে।
সবুজ কাঠামো
একটি সবুজ শহর মানে সুস্থ ও সমৃদ্ধির শহর। নগরায়ন এবং শিল্পায়নের সাথে সবুজের ছোঁয়া সব সময়ই শহরের নান্দনিকতাকে তুলে ধরে। এইজন্যই নগর পরিকল্পনাকারীরা, আজকাল স্থাপত্য নকশায় সবুজ কাঠামো বা সবুজ শহরের ধারণাকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। গাছগাছালিতে ভরা শহর মানেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে সুন্দর এবং আরও সবুজ করার প্রচেষ্টা।
এগুলোই ছিল রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা। রিয়েল এস্টেট খাতে এগুলোই মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে। এই অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা রিয়েল এস্টেট খাতের প্রতি স্তরে রয়েছে।