বেডরুম, লিভিং রুম, বাথরুম কিংবা কিচেন এই ৪টি স্পেস নিয়েই আমাদের যত চিন্তা! কিভাবে ডিজাইন করব? কিভাবে নতুন ট্রেন্ড ব্যবহার করবো? কিভাবে নতুন কিছু করা যায়? কতশত চিন্তা সবসময়ই মাথায় ঘুরপাক খায়। কিন্তু, এইসব চিন্তার ভিড়ে চাপা পড়ে যায়, আমাদের অ্যাপার্টমেন্টের ডাইনিং রুমটি। ব্যবহার করতে গেলে ঐ ৪টি স্পেসের থেকে কোন অংশেই কিন্তু কম ব্যবহার হয় না। বরং দিনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আমরা ডাইনিং রুমেই সারি। তিনবেলা খাবার খাওয়া, বিকেলের চা নাস্তা এমনকি, ঘরের আড্ডা অনেক সময় ডাইনিং রুমেই সেরে নেই আমরা! সুতরাং, এই অংশটুকুর গুরুত্ব অনেক। প্রয়োজন সঠিক চর্চা এবং ডিজাইন! হ্যাঁ, কিছুটা নতুনত্ব আনলেই আপনার ডাইনিং রুম ডিজাইন একদম বদলে যাবে! আপনি চাইলে নিজেই বাসা ডিজাইন করতে পারেন কিংবা নিতে পারে কোন পেশাদার ডিজাইনার। তবে তার আগে নিজে কিছু রিসার্চ করে নিন, সুবিধা হবে। বাসা ডিজাইন করবার পাশাপাশি আপনি চাইলে বাসার ছোটখাটো সংস্কারও করে নিতে পারেন। সামান্য পরিবর্তনও ঘরের পরিবেশ বদলে ফেলতে পারে।
স্পেস জোনিং
অনেক সময় দেখা যায়, কিচেন, লিভিং রুম এবং ডাইনিং রুম একসাথে মেশানো থাকে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমরা কিচেন স্পেস এবং লিভিং রুমের সাঁজ সজ্জা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এবং ডাইনিং রুমটি অবহেলায় থেকে যায়। এমন সমস্যা থেকে সমাধান এনে দিতে পারে, “স্পেস জোনিং”। ডাইনিং রুমকে লিভিং রুম এবং কিচেন থেকে আলাদা করতে, আপনি পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া, ফলস-ওয়ালও ব্যবহার করতে পারেন। যখন আপনার ডাইনিং রুম, লিভিং রুম ও কিচেন থেকে আলাদা হয়ে যাবে আপনার ডাইনিং রুম ডিজাইন করতে বেশ সুবিধা হবে। আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন, কি কি জিনিস উচিত নতুন যোগ করা কিংবা বাদ দেয়া।
দেয়াল রঙ
বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে নানা টেক্সচারের রঙ। আপনি চাইলে পছন্দমত রঙ যেকোন সময়ই কিনে আনতে পারেন। স্পেস জোনিং এর পর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি সেটা হল, আলাদা করা স্পেসকে রাঙিয়ে ফেলা। যাতে করে লিভিং রুম এবং কিচেন স্পেস সহজেই বোঝা যায়। সেক্ষেত্রে, লিভিং রুম ও কিচেন স্পেস থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটা রঙ ব্যবহার করা ভালো। আপনি চাইলে কনট্রাস্ট রঙ বাছাই করতে পারেন। এটা আধুনিক এবং সুবিধাজনকও হবে! দেয়াল রঙ বরাবরই বাসার চেহারা বদলাতে কার্যকরী।
আসবাব
ডাইনিং রুম ডিজাইন করতে আসবাবপত্রের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই ডাইনিং রুমের ডিজাইনে ডাইনিং টেবিলটির ভূমিকা বেশি। তাই আপনি চাইলে ডাইনিং টেবিলটি গতানুগতিক ধাঁচের না নিয়ে বরং একটু নতুন নকশার নিতে পারেন। গোল কিংবা চারকোণা আমরা সচারাচর ব্যবহার করেই থাকি। এবার, না হয় ভিন্ন ধাঁচের আসবাব ব্যবহার করলেন। বাজারে রয়েছে নানা নকশার আধুনিক সব ডাইনিং টেবিল। আপনি চাইলে কাঠের কিংবা স্টিলের তৈরি আসবাব পত্র নিতে পারেন। ভারি আসবাব পত্র এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এবং আসবাব বাছাই এর ক্ষেত্রে হালকা রঙ যেমন সাদা ও পেস্টাল রঙগুলো সহজেই মানিয়ে যায়।
সিলিং
বাসার সিলিং অনেক বেশি অবহেলিত! এটা স্বীকার করতেই হবে। অথচ মাথার উপর এই সিলিংকে একটু সাজিয়ে নিলেই ঘরের চেহারা বদলে দিতে পারে। আপনি চাইলে অনেকভাবেই ঘরের সিলিং ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমত, আপনি পছন্দমত রঙ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও, বাজারে পাওয়া যায় অনেক বাহারি বাতি। ঘরের রঙের সাথে মানিয়ে নিয়ে বাতি কিনতে পারেন। এছাড়াও, সিলিং আর্ট এখন বেশ জনপ্রিয় এটাও চাইলে করতে পারেন। কিংবা ঝুলিয়ে দিতে পারেন ঝাড়বাতি। ঘরকে যেমন আলোকিত করবে তেমনি, আনবে আভিজাত্যের ছোঁয়া। ডাইনিং রুম ডিজাইন করতে শুধুমাত্র ঝাড়বাতিই যথেষ্ট।
তৈজসপত্র
ডাইনিং রুম যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায়, তৈজসপত্র ছাড়া। ব্যবহারের তৈজসপত্রগুলো যদি অনেকদিনের হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে, বদলে ফেলাই ভালো। বাজারে আছে নানা ডিজাইনের বাহারি সব তৈজসপত্র। কাঁচ, সিরামিক্স, ষ্টীল এবং মাটির তৈরি অনেক তৈজসপত্র আছে যেগুলো ব্যবহার যেমন, সহজ তেমনি দেখতে ভীষণ নান্দনিক। রঙিন তৈজসপত্র ব্যবহার করলে ডাইনিং রুম অনেক উজ্জ্বল দেখায়। বিভিন্ন শেপের বিভিন্ন ডিজাইনের তৈজসপত্র রয়েছে, সময় করে খুঁজে নিন তাহলেই, আধুনিক হয়ে যাবে আপনার ডাইনিং রুম ডিজাইন।
কেমন লেগেছে এই টিপসগুলো? এখান থেকে কোন টিপসটা আপনি প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন? আমাদের জানাতে এখনই কমেন্ট করুন।