Reading Time: 3 minutes

আনন্দে থাকার একটি কারণ খুঁজে পাই বলেই ঈদুল ফিতরের এই দিনটি আমাদের সকলের কাছে খুব অপেক্ষার ও খুশির। ছোটদের ঈদের দিনটি অন্যান্য দিন থেকে বেশ আনন্দে কাটে। ঘুম থেকে উঠে নতুন জামা পরে, ঈদগাহে গিয়ে নামায আদায় করে, ঘরের তৈরি মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে প্রিয়জনকে আলিঙ্গন করে ঈদ মোবারক শুভেচ্ছা বিনিময় করে দিনটি খুশিতে তারা অতিবাহিত করে থাকে। সেই সাথে দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার ফলে আল্লাহ্‌ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আনন্দ এই দিনের খুশি আরও বাড়িয়ে দেয়। ভালোবাসা, আনন্দ এবং উৎসবের আমেজে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে এই দিনটি। আপনি কিভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন? এটিই আমাদের আজকের লেখার বিষয়। সেই সাথে বিশ্বব্যাপী এই দিনটি কিভাবে পালিত হয় এবং এর গুরুত্ব সম্বন্ধে আলোচনা করব।

ঈদুল ফিতরের অর্থ

নামাজ পড়ছে এমন এক ব্যক্তির ছবি
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে আনন্দের একটি দিন

বিশ্বজুড়ে মুসলমানেরা অত্যন্ত আনন্দ এবং গুরুত্ব সহকারে ঈদের দিনটি উদযপন করে থাকে। শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে পৃথিবীর সব জায়গায় এই দিনটি উদযাপিত হয়। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে এই খুশির দিনটি। একটি মাস সংযম করার পর, রোজা রাখার পর এই দিনটি বয়ে আনে পরিবার নিয়ে আনন্দ ও মনভরে উদযাপন করার সুযোগ। রমজান মাসে মুসলিমরা কেবল খাবার থেকে বিরত থাকে না, বিরত থাকে সবধরনের খারাপ কাজ থেকেও যা ইসলামে মানা। রমজান মাসের জন্য যেমন পূর্ব প্রস্তুতি চাই তেমনি প্রয়োজন রমজানে সুস্থ থাকা। কেননা হুট করে আমাদের ডেইলি রুটিনে চলে আসে পরিবর্তন। সারা মাস আমরা চলি এক নতুন রুটিনে। মেনে চলি অনেক নিয়ম কানুন তাই হয়তো ঈদের দিনটি এতটাই আনন্দের হয়ে ওঠে। যারা সারা মাস রোজা রাখেন, তারাবীহ সালাত আদায় করেন এবং কোরআন পাঠ করেন এই একটি দিন তাদের জন্য অনেক অর্থবহ। ঈদের নামাজ আদায় করে প্রিয়জনদের সাথে ঘুরে ফিরে এবং মজাদার খাবার খেয়ে আমরা সবাই এই দিনটি কাটাই।  

সংস্কৃতিতে ঈদ

বাংলা দেশের পতাকা
উৎসবের থেকে বেশি কিছু এই ঈদুল ফিতর

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়াতে ঈদুল ফিতর দেশের সবচেয়ে বৃহৎ উৎসবের মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। ইসলামিক সংস্কৃতিতে গড়ে উঠেছে এই দেশের কাঠামো। ঐতিহ্য থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত চিন্তা ভাবনা সবকিছুতেই রয়েছে ইসলামিক চেতনার ছোঁয়া। তাইতো, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও অংশগ্রহণ করে এই খুশির দিনে এবং ভাগাভাগি করে নেয় সমান আনন্দ। দেশের সবস্তরের মানুষ ঈদ উপলক্ষে পেয়ে থাকে তিন দিনের সরকারী ছুটি, ঈদের আগের রাত হতে ঈদসহ ঈদের পরদিন অব্দি চলে এই সরকারী ছুটি। তবে এই বছর কিছুটা ভিন্ন, অফিস থেকে অতিরিক্ত ছুটি গ্রহণ কারলে দীর্ঘ সময় ধরে উদযাপন করা যাবে ঈদুল ফিতর।  

যেভাবে ঈদ উদযাপিত হয়  

ঈদের জামাত
ঈদের সকালে দলে দলে সকলে যোগ দেয় ঈদের নামাযে

আমরা আগেও বলেছি, ঈদ এখন আর কেবল ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখন ঈদ উদযাপন করে। এটি একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে তাই কোন অ্যাকটিভিটির অভাব নেই। চাঁদ রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় নানা রকম আয়োজন। মাঝরাত অব্দি চলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর খাওয়া-দাওয়া। সকল বয়সী মেয়েরা হাতে মেহেদি দিয়ে আঁকে নানা নকশা। উৎসবের এই আমেজটি ঈদের আগের দিন থেকে শুরু হয়, চলতে থাকে ঈদের পর কয়েকদিন পর্যন্ত। আর এই দিনগুলোতে প্রিয়জনদের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। ঈদের সম্ভবত এই কাজটিই সবচেয়ে আনন্দের। প্রিয়জনদের সাথে কাটানো প্রতিটা মূহুর্তই অনেক মূল্যবান তার মধ্যে তা যদি কাটে ঈদের সময়ে তাহলে তো কথাই নেই।

বিশ্বজুড়ে ঈদ   

মানুষের জমায়াত
বিশ্বজুড়ে ঘটা করে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর

বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মুসলমান এই দিনটিকে আনন্দের সাথে উদযাপন করে থাকে। পৃথিবীর প্রায় সব কোণে রয়েছেন মুসলমানেরা। কমবেশি প্রায় সব দেশেই ঈদের দিনটি একই ভাবে উদযাপন হলেও  কিছু তো ব্যতিক্রম থাকবেই। যেমন সৌদি আরবে ঈদের নামাজ শেষে সকলে তার বাবা মার বাসায় একত্রিত হন এবং বাচ্চাদের দেন খেলনাসহ নানা উপহার। এছাড়া তারা আদর এবং ভালবাসা দিয়ে মহৎ উপায়ে ঈদ পালন করে থাকেন। অনেকেই প্রচুর পরিমাণে খাবার কিনে দুস্থদের দাড়ে রেখে আসেন। গ্রীসে ঈদের দিনে ছোটরা বড়দের হাতে চুমু খায় এবং বিনিময়ে পেয়ে যায় হাত ভর্তি চকলেট, খেলনা এবং টাকা। পশ্চিমা দেশগুলিতে ঈদ উদযাপনের জন্য আয়োজন করা হয় নানা রকম মেলা এবং গেট টু গেদার। এবছরও এমন করেই হয়তো ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। 

ঈদুল ফিতর পরম কাঙ্ক্ষিত একটি উৎসবের একটি। বছর ঘুরে এই দিনটি আমরা ফিরে পাই। পরম আনন্দে এবং হাস্যউজ্জল সময়ের মধ্যে দিয়ে এই দিনটি সকলের অতিবাহিত হোক। ঈদের দিনটি নানা ভাবে কাটানো যায় তবে যেভাবেই কাটানো হোক না কেন অন্তরে শান্তি এবং মুখে হাসি ফোটা চাই শতভাগ। কেমন গেলো আপনার ঈদুল ফিতর উদযাপন কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলবেন না!

Write A Comment