Reading Time: 4 minutes

ঈদ মানে বরবরই আনন্দ। আর এই আনন্দ আরও এক ধাপ বেড়ে যায় যখন কেনাকাটার বিষয়টি সামনে আসে। নতুন জামা পরে ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়া যেন আমাদের সংস্কৃতি। তাই ঈদের আগের রাত পর্যন্ত চলে ঈদ কেনাকাটা। ছোট বড় সকলেই এই দিনকে ঘিরে কেনাকেটা করে। উপহারে উপহারে এই দিনটি বেশ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি যেনে একটু আলাদা। তাই ঈদের কেনাকাটা করার আগে মাথায় রাখতে বেশ কিছু ব্যাপার। 

স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা

বসুন্ধরা সিটি

আমরা সবাই জানি বর্তমান পরিস্থিতির কথা। ঘরের বাইরে বের হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। তাই বাসা থেকে বের যদি হতেই হয় সেক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে কিছু বিধি নিষেধ। সরকার ইতিমধ্যেই শপিংমল খোলা রাখার সময় সীমিত করে দিয়েছেন। সুতরাং, সরকারের নির্দেশিত সময় অনুযায়ী কেনাকাটা শেষ করতে হবে। কেনাকাটার সময় অবশ্যই নিরপাদ দূরত্ব মেনে চলতে হবে। মাস্ক পুরোটা সময় পরিধান করতে হবে। হাত একটু পর পর স্যানিটাইজ করতে হবে। যদিও ঈদের সময় অনেক ভিরভারাক্কা হয় তাই কঠিন হলেও যে দোকান বা শপিংমলে ভিড় বেশি সেগুলো এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। শপিং এর সময় যতটা সম্ভব ক্যাশ আদান প্রদান থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করুন। এবং কার্ডটি সাথে সাথে স্যানিটাইজ করুন। দোকানের শপিং ব্যাগ এড়িয়ে চলুন। নিজের প্লাস্টিক ব্যাগ বহন করুন এবং স্যানিটাইজ করুন কিছুক্ষণ পর পর। যেহেতু রোজার মাস বাইরে খাওয়া-দাওয়া হয়তো তেমন হবে না। তারপরও যারা রোজা রাখেন না তারা অবশ্যই পানির বোতল ও কিছু খাবার বক্সে নিয়ে বের হবেন। এই সমস্ত উপায়ে আপনি বাইরে থেকেও নিরাপদ থাকতে পারবেন। 

ঘুরে দেখবেন যে সমস্ত শপিং মল 

ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছে রাজধানীর শপিংমলগুলোতে। করোনার প্রকোপের মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসছে অনেক মানুষ। রাজধানীর ওয়ারী, বেইলি রোড, নিউ মার্কেট এলাকা, এলিফ্যান্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্রেতাসমাগম চোখে পড়ার মতো। ঢাকার সব মার্কেটগুলো ইতিমধ্যেই খুলে গেছে। শহরের বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, রাপা, মেট্রো, সীমান্ত সম্ভার, টোকিও স্কয়ার, উত্তরার যমযম টাওয়ার, মৌচাক মার্কেট, গাবতলি, নিউমার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা ছোট বড় সব দোকান আর মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছে। আপনি চাইলে শপিং এ যাওয়ার আগে দেখে নিতে পারে ঢাকার কিছু সেরা শপিংমল কবে কবে খোলা থাকবে এবং কখন থেকে কখন। 

ঈদ উপলক্ষে ছাড় 

ঈদ উপলক্ষে ছাড়

প্রতি ঈদেই বেশীরভাগ শপিং মল ও মার্কেটে ঈদ ছাড় চলতে থাকে। ঈদের সময় সুপার শপগুলো যেমন আগোরা, মীনা বাজার, স্বপ্নসহ আরও অনেক সুপারশপগুলোতে চলতে থাকে ছাড়। ঈদের বাজারটা চাইলে এখান থেকে অনায়াসে করে নিতে পারেন। এগুলো ছাড়াও অসংখ্য নামী দামী ব্র্যান্ডের শোরুমে চলে “ঈদ সেল’। আর এই সব খবর সহজেই পেয়ে যাবে দৈনিক পত্রিকা বা ফেসবুকের পাতায়। ছাড়ে পোশাক কেনার সবচেয়ে বেশি সুবিধা হচ্ছে মোটামটি কম মূল্যে অনেকগুলো পোশাক পাওয়া যায়।

অনলাইনে শপিং 

Sailor online store

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঈদের সেই চিরচেনা জমজমাট চিত্রটি এখন নেই। মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে কেনাকাটার বদলে মানুষ ঘরে বন্দি, তবুও জীবন থেমে নেই। এ সময় অযথা মার্কেটে না ঘুরে অনলাইনে কেনাকাটা করাটাও হবে বুদ্ধিমানের কাজ। অনেকেই মনে করেন অনলাইন মানেই টাকার শ্রাদ্ধ। সত্যি বলতে ঘরে বসে নিরাপদে পছন্দসই জিনিস যদি পাওয়া যায় এখানে না হয় একটু টাকা বেশিই খরচ হল। দিনশেষে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাই মূল বিষয়। অনলাইন বলতে ফেসবুকে বিভিন্ন পেইজে বিক্রি হচ্ছে মনের মত সব পোশাক। কি নেই এখানে বড় থেকে শুরু করে বাচ্চা সবার জন্য সব রকম পোশাক রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি অনলাইন শপে আনা হয়ে থাকে নজরকারা পোশাক। এমনকি এগুলো দেখানোও হয়ে থাকে লাইভের মাধ্যমে। লাইভের মাধ্যমে ঘরে বসে কাঙ্ক্ষিত পোশাকের খুঁটিনাটি দেখে কেনার আনন্দই আলাদা। এখন তো ফ্যাশনেবল সব ব্র্যান্ডও অনলাইনে ড্রেস লাইন লঞ্চ করে থাকে। যেহেতু করোনার প্রকোপ এখনো কমেনি তাই ঘরে বসে ঈদের কেনাকাটাটা করে নিলে সবচেয়ে ভালো। কোন প্রকার ঝুঁকি নেওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। 

কেনাকাটা করতে বের হবার আগে যা যা করবেন

লিস্ট

  • কি কি কিনবেন তার একটা লিস্ট করে রাখুন। তাহলে কোন জিনিস কিনতে ভুলে যাবেন না।
  • বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আলমারি, ড্রয়ার ইত্যাদি তালা দিয়ে বের হোন। আর বাসা খালি থাকলে ঠিকমতো তালা দেয়া হয়েছে নাকি ভালোভাবে চেক করুন।
  • একটি ব্যাগ রেডি করুন যেটাতে আপনার দরকারি সমস্ত কিছু রাখা থাকবে। 
  • ছোট বাচ্চাদের শপিং মলে না নেওয়াই শ্রেয়। তবুও যদি নিতে চান এক্ষেত্রে ব্যাগে কিছু খাবার ও পানি (গ্লুকোজ মেশানো হতে পারে) রাখুন।
  • শপিং এ যাওয়ার সময় আরামদায়ক পোশাক এবং জুতা পড়ুন।
  • কেনাকাটা করার সময় পার্স, মানিব্যাগ, সেলফোন সাবধানে রাখুন। কেননা এ সময় সবচেয়ে বেশি পিকপকেটিং হয়।
  • গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন। দরকারে রিকশা ব্যবহার করুন কিংবা পায়ে হেঁটে যান। 

এরকম খুঁটিনাটি কিছু বিষয় মনে রাখলে কেনাকাটার সময় অনেক ধরনের ঝামেলা ও বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর শপিং হয় আনন্দময়। সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ কেনাকাটা হোক সুন্দর ভাবে। 

Write A Comment