Reading Time: 4 minutes

অনেকেই আছি যারা নতুন বাসা বা নতুন এলাকায় শিফট করছি। অনেকে বেছে নিচ্ছি নিজের সুবিধামত এলাকা। কারও হয়তো অফিসের কাছে বাসা আবার কারও ইউনিভার্সিটির কাছে। কিন্তু এগুলো ব্যক্তিগত কারণ, এগুলো ছাড়া কীভাবে বুঝবো কোন এলাকায় আসলে বসবাসের জন্য আদর্শ? কেবল মনের মত বাসা পেলেই যে বেছে নিতে হবে এমনটা নাও হতে পারে। কেবল সাধ্যের মধ্যে অ্যাপার্টমেন্ট পেলেই অনেকে শিফট করে ফেলেন পরে গিয়ে কিছু দিন পর থেকে অনুভব করেন যে এই এলাকায় অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তেমন নেই! অনেকে তো এলাকার সাথে মানিয়ে নিতেও পারে না। নতুন বাসায় উঠেই আবার বদলে ফেলা এক বিশাল ঝামেলা। তখন হয়তো না মানিয়ে নেওয়া এলাকাতেই থেকে যেতে হয়। বাসা বদলের সিদ্ধান্ত কোন সহজ বিষয় নয়। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যে এলাকায় শিফট করতে চাচ্ছেন সে এলাকাকে করতে হবে নিবিড়ভাবে যাচাই বাছাই। কিন্তু কীভাবে করবেন সেটা ভাবছেন? আর ভাবনা নেই। আজকের ব্লগে আলোচনা করবো, যে কয়েকটি বিষয় থাকলে বুঝবেন আপনার এলাকা বসবাসের জন্য সেরা । তাহলে শুরু করা যাক…

এলাকা
অনেকেই নিরিবিলি থাকতে ভালোবাসে তাদের জন্য এই সমস্ত বিষয় যাচাই করা অত্যন্ত জরুরী

কমিউনিটি বা লাইফস্টাইল

অনেকেই এই বিষয়টি শুরুর দিকে এড়িয়ে যায়। তবে যখন এলাকায় বসবাস শুরু করে তখন এই বিষয়টির সাথে দেখা দেয় অমিল। দেখা যায় আপনার আশেপাশের এলাকাগুলো হয়তো আপনার চাহিদামত হয়নি বা আপনি যেমনটা পছন্দ করেন তেমনটি পাননি। বেশি লোকালয়, বাসার ঠিক কাছেই দোকানপাঠ, বাসার নিচেই হয়তো বসে যায় বাজার কিংবা বাসার পাশেই এলাকার মানুষের রাতজাগা আড্ডা এই সমস্ত বিষয়গুলো বসবাসের জন্য বেশ বিরক্তিকর। তাই কোন এলাকায় শিফট করবার আগে অবশ্যই এই সমস্ত বিষয় যাচাই করা উচিত। অনেকেই নিরিবিলি থাকতে ভালোবাসে তাদের জন্য এই সমস্ত বিষয় যাচাই করা অত্যন্ত জরুরী। লাইফ স্টাইলের পাশাপাশি আর একটি বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে কমিউনিটি কেমন। কমিউনিটিতে কি ঐক্য রয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানা। কমিউনিটির গৃহীত পদক্ষেপগুলো কেমন ছিল সফলতা কেমন ইত্যাদি। কমিউনিটি এলাকার বাসিন্দাদের সুযোগ সুবিধার খেয়াল কতটুকু সে সম্বন্ধেও জেনে রাখা ভালো!

অপরাধের পরিমাণ 

পরিবার ও নিজের নিরাপত্তা সবার কাছেই প্রধান বিষয়। যেকোন নতুন এলাকায় শিফট করার আগে আপনাকে অবশ্যই সে এলাকা সম্বন্ধে খোঁজ নিতে হবে। বিশেষ করে এলাকায় চুরি ডাকাতি বা অন্যান্য অপরাধ কি রকম হয়। বা এগুলো রোধ করার জন্য এলাকায় কেমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন সে সম্বন্ধেও জানতে হবে। যে এলাকায় চুরি ডাকাতি হবে তাহলে সে এলাকায় নিজের বা পরিবারের জান মালের কোন নিরাপত্তা নেই এতে কোন সন্দেহ নেই।  

মনিপুর স্কুল, মিরপুর

মানসম্মত স্কুল ও কলেজ 

একটি এলাকাকে বসবাসের যোগ্য করে তোলে সে এলাকায় উপস্থিত থাকা উপাদানগুলো। আর সেই উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম এই স্কুল ও কলেজ। পরিবারে ছোট্ট সদস্যের জন্য স্কুলটা কাছে হওয়া বেশ জরুরী। রোজ যাতায়াতে যেন সুবিধা হিয় সেদিক থেকেও স্কুলের কাছে বাসা নেওয়া অনেকের। সুতরাং, আপনার এলাকায় বা এলাকার আশেপাশে স্কুল ও কলেজ কেমন আছে সেদিকে নজর দিন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেই আমাদের এমন এলাকা বেছে নেওয়া উচিত যেখানে মানসম্মত স্কুল কলেজ থাকবে

আউটডোর অ্যাক্টিভিটি 

কেবল খেয়ে পরে বাঁচাকে বাঁচা বলে না! আমরা জীবনের সবগুলো উপাদানকে উপভোগ করার নামই জীবন। আর শহুরে জীবনকে উপভোগ করতে গেলে কিছু প্রাথমিক বিষয় সবসময়ই মাথায় আসবে। তা হচ্ছে পার্ক, রেস্টুরেন্ট বা ঘোরার জায়গা। কেবল এলাকা ঘেটে পছন্দের অ্যাপার্টমেন্ট নিলেই যে হিসেব চুকে যাবে তা কখনোই না। কোন এলাকা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে সেখানে রেস্টুরেন্ট বা ঘোরার জায়গা কেমনা আছে? কিংবা পার্ক বা খেলার মাঠ কেমন আছে এই সমস্ত বিষয় অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। একটা এলাকায় সবকিছুই থাকতে হয়। তা নাহলে ঘুরতে কিংবা খেতে অন্য এলাকায় সবসময় যাওয়া হয়ে উঠে না। তাই এই বিষয়গুলো থাকলে নিঃসন্দেহে আপনার এলাকা বসবাসের জন্য সেরা । 

স্বাস্থ্য সেবা
আমাদের উচিত সর্বপ্রথম স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

স্বাস্থ্যসেবা 

বসবাসের জন্য যে এলাকাই বেছে নেন না কেন স্বাস্থ্যসেবার কথাটি অবশ্যই ভেবে নিতে হবে। বাসার কাছাকাছি কোন হাসপাতাল রয়েছে কিনা তা জানতে হবে। হাসপাতাল না থাকলেও কোন ক্লিনিক রয়েছে কিনা সে বিষয়ে ধারণাথাকতে হবে। অনেক সময় হাসপাতাল না থাকলেও ডাক্তারের চেম্বার থাকে যেখানে একজন ডাক্তার ২৪ ঘন্টা কর্মরত থাকবে। এমন চেম্বার রয়েছে কিনা সেটাও খেয়াল করতে হবে। নাহলে বিপদের সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা। এছাড়া, বাসার কাছাকাছি কোন ফার্মেসী রয়েছে কিনা সেটাও যাচাই করে নিন। আমাদের উচিত সর্বপ্রথম স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। 

যোগাযোগ ব্যবস্থা

আপনার এলাকা বসবাসের জন্য সেরা বা সাশ্রয়ী কিনা তা বোঝার আর একটি মাপকাঠি হচ্ছে সেই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আসলে কতটুকু ভালো। আপনার এলাকা থেকে কতগুলো গণপরিবহনের যাতায়াত রয়েছে সেটা জানতে হবে। এমন একটি এলাকা বসবাসের জন্য আদর্শ যেখান থেকে শহরের যেকোন এলাকায় যাতায়াত হবে খুব সহজে। সবসময় রিকশা ও সিএনজির আনাগোনা থাকা। এতে করে আপনি যেকোন জরুরী কাজে বাড়ির বাইরে গেলে সহজেই রিকশা ও সিনজি পাওয়া যাবে। তাছাড়াও, যাতায়াতের জন্য সবসময় রিকশা ও সিএনজি থাকা খুব জরুরী।

বসুন্ধরা সিটি
বসুন্ধরা সিটি

কেনাকাটার সুবিধা 

আপনার এলাকা বসবাসের জন্য সেরা তখনই হবে যখন সেখানে প্রয়োজন বা অপ্রয়োজনে কেনাকাটা করার সুবিধা থাকবে। বাজার বা ঘরের কোন কেনাকাটা সবকিছুতেই আমাদের ছুটতে হয় এলাকার মার্কেট  কিংবা শহরের জনপ্রিয় কোন শপিংমলে। যে এলাকায় বসবাস করছেন সেখানে যদি আশেপাশে বাজার বা শপিংমল না থাকে তাহলে দৈনন্দিন জীবনে আপনাকে পরতে হবে নানা সমস্যায়। তাই বসবাসের জন্য এলাকা বেছে নেওয়ার আগে অবশ্যই এই বিষয়গুলো যাচাই করুন এবং বসবাসের জন্য সঠিক এলাকা খুঁজে নিন। 

আপনার এলাকা বসবাসের জন্য সেরা কিনা তা এই তালিকা দেখে সহজেই জানতে পারবেন। আপনার এলাকায় কি এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ? না থেকে থাকলে লিখুন কোনটি নেই এবং জানাতে কমেন্ট করুন ব্লগে।

Write A Comment