Reading Time: 4 minutes

দেশ এবং জাতি হিসেবে বিগত বছরের অনেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজ এই পর্যন্ত এসে পৌঁছেছি আমরা। দৃঢ় মনোভাব এবং আশাবাদী চেতনার ফলেই আজ আমরা অতীতের সকল ঘটনাকে অতিক্রম করে একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছি। মানচিত্রের বুকে একটি ছোট দেশ হওয়া সত্যেও ডিজিটালাইজেশন এবং উন্নয়নের জন্য আমরা আজ এগিয়েছি অনেক পথ। এখানে আমরা আলোচনা করব কি কি কারণে প্রপার্টি ক্রেতাদের কাছে এশিয়ার মধ্যে ঢাকা জনপ্রিয় ? চলুন তবে জেনে নেই, ঢাকা জনপ্রিয় কেন?

অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ

ক্যালকুলেটর এবং কলম
ক্রমবর্ধমান গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি

বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের পাঁচটি দ্রুত ক্রমবর্ধমান দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম একটি দেশ। বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ অর্থ বছরে জিডিপি শতকরা ৭.৩ হারে বৃদ্ধি পাবে। কেনই বা পাবে না? ক্রমবর্ধমান ব্যবসা খাত হিসেবে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের খুব শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। কেননা, হাজারো ব্যবসাসফল স্টার্ট-আপ, অসংখ্য কৃষি শিল্পের উদ্ভাবন এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন শিল্পের কথা না বললেই নয়। আজ এই সবকিছু বিশ্ব ব্যবসা খাতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি এনে দিয়েছে পাওয়ার হাউজ হিসেবে। গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা ক্ষেত্র এবং সেই সাথে তৈরি হয়েছে অসংখ্য সুযোগ। এবং বর্ধিত জনসংখ্যার সাথে হাউজিং খাতে বেড়েছে মানুষের চাহিদা। এছাড়া, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রেও এসেছে উন্নয়ন। আর এসব প্রাপ্তির জন্য এ দেশের মানুষেরও রয়েছে যথেষ্ট অবদান। আশাবাদী মনোভাব এবং অদম্য চেষ্টার জন্যই আজকের এই ফলাফল। এটি সত্যিই খুব অবাক করা বিষয় যে আমরা সময়ের সাথে পরিবর্তনকে মানিয়ে নিয়েছি এবং এগিয়ে গিয়েছি ।  হয়েছে রানা প্লাজার মত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, ঘটেছে রাজনৈতিক বিবাদ হরতাল-দাঙ্গা-মিছিল, রাষ্ট্রে আঘাত এনেছে ২০১৬ সালের সন্ত্রাসী হামলা। কিন্তু কোন কিছুই জাতি হিসেবে আমাদেরকে দমাতে পারেনি! আমরা সকল বাঁধা ছাপিয়ে এগিয়ে গিয়েছি আগামীর দিকে। জাতি হিসেবে আমরা কতটুকু শক্তিশালী এটি তারই উদাহরণ কেবল। অতএব, জীবন গড়ার সকল উপাদান উপস্থিত রয়েছে এখানে, অপেক্ষা কেবল আপনার পছন্দের সুযোগটি বেঁছে নেয়ার!  তাই হয়তো এতটা ঢাকা জনপ্রিয় ।

সহজলভ্যতা

ক্রেডিট কার্ড
ঢাকায় যেকোন প্রপার্টি পাওয়া যায় সাশ্রয়ী মূল্যে

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এবং হাউজিং খাতে মানুষের যে চাহিদার তার ভিত্তিতে ঢাকায় প্রপার্টির মূল্য এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন, ভারত ও ভিয়েতনামের চেয়ে অনেক কম। এবং নিঃসন্দেহে ঢাকায় বসাবসের কথা বলতে গেলে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য যে বিষয়টি তা হচ্ছে বসবাসের সহজলভ্যতা। জীবনমান থেকে শুরু করে খাবার, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং বিনোদনের সুযোগ সবকিছুই খুব সহজেই এখানে পাওয়া যায়। যদি এশিয়ার অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করা হয় তবে অবশ্যই ঢাকায় সাশ্রয়ী মূল্যে সেরা হাউজিং অফারটি আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন। উদাহরণ স্বরূপ, মুম্বাইয়ে প্রতি স্কয়ার ফিটের দাম শুরু হয় ১২,০০০ রুপি থেকে ৩২,০০০ রুপি পর্যন্ত যা কিনা ঢাকার থেকে অনেকাংশে বেশি! এমন দামে ঢাকায় রয়েছে হাজারো অপশন। যদিও লোকেশন এবং অন্যান্য আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে মূল্য বাড়বে কিংবা কমবে! ঢাকার প্রেক্ষাপটে চিত্র কিছুটা ভিন্ন, মিরপুরে প্রতি স্কয়ার ফিটের মূল্য ৪,০০০ টাকা, উত্তরায় ৬,৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত। এবং গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডির মত অভিজাত এলাকায় দৃশ্য সম্পূর্ন ভিন্ন, প্রতি স্কয়ার ফিট বিক্রয় হচ্ছে আকাশচুম্বী মূল্য ২৩,০০০ টাকায়। নিশ্চিন্তে বলা যায় ঢাকা আপনাকে নিজের পছন্দের ঠিকানা খুঁজে পেতে অনেক অপশন প্রদান করবে। একবার নিজের ঠিকানা খুঁজে পেলে এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা খুব একটা চিন্তার বিষয় নয়। পাবলিক অনেক যানবাহন আপনার জীবনকে করে তুলবে আরও সহজ। ঘর থেকে বের হলেই পেয়ে যাবেন বাস, সিএনজি এবং রিকশা। তাছাড়া, ডিজিটাল এই সময়ে উবার এবং পাঠাও এর মত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলোর কল্যাণে আমরা ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছি গাড়ি কিংবা বাইক। এমনকি ট্র্যাফিক এর অবস্থা ও গতিবিধি ঘরে বসেই দেখতে পারছি। বাসা কিংবা যাতায়াত খরচ ছাড়াও অন্যান্য খরচ তুলনামূলকভাবে কম এখানে। আমাদের দেশের অর্থনীতি প্রধানত উৎপাদন শিল্প ও কৃষি শিল্পের কারণে ভাল করছে। পোশাক থেকে শুরু করে খাবারের শাক সবজি সবকিছুরই মূল্য খুব কম এখানে।  আমাদের দেশে গার্মেন্টসগুলো আন্তর্জাতিক মানের পোশাক তৈরি করে থাকে যা রপ্তানি হয় সারা বিশ্বে। বেশিরভাগ সময়ে যে পোশাকগুলো রপ্তানি থেকে বাদ পড়ে যায় তা দেশের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হয়! এবং এইসব পোশাকের চাহিদা কোন অংশেই কম নয়। অন্যদিকে, সুপারশপগুলো ছাড়াও প্রায় সব এলাকায় রয়েছে কাঁচাবাজার যেখানে পাওয়া যায় পাইকারি মূল্যের শাকসবজি। এই সুবিধাটি আপনার মাসিক খরচের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দিবে। জীবন তালিকার এই বিষয়গুলোই ঢাকা জনপ্রিয় হবার অন্যতম কারণ।  

অপার সম্ভাবনা

খালি রাস্তা
সুযোগের হাতছানি সবসময়

যে দেশে সুযোগ সবসময় কড়া নাড়ে সম্ভবত সেই দেশকেই উন্নয়নশীল দেশ বলা হয়ে থাকে! এবং বিশ্ব দরবারে এমন এক দেশের প্রতিই সকলের থাকে বিশেষ নজর। আমাদের বর্তমান উদ্ভাবনের কল্যাণে ডিজিটাল বিশ্বে আমাদের সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এবং ইতিমধ্যে অনেক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আমাদের ঝুলিতে এসেছে। সম্ভাবনার দূরদৃষ্টি এবং ইউনিক স্টার্টআপ গুলোকে আমরা প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি বলেই আজকের এই বিনিয়োগ অর্থের প্রাপ্তি। এই ইউনিক স্টার্টআপ গুলোর কারণেই আজ আমরা আন্তর্জাতিক ব্যবসাক্ষেত্রে আগের থেকে নজরে এসেছি বেশি। সময়ের সাথে আমরা এভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ হয়ে উঠবে একটি উন্নত দেশ!      

Write A Comment