Reading Time: 4 minutes

খোলামেলা কিচেন সবাই পছন্দ করে। কিন্তু ওপেন কিচেন কতটুকু পছন্দ এ নিয়ে দন্দ থাকতে পারে। কিন্তু ওপেন কিচেনেরও সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো ভাল মত জেনে বুঝে তবেই না সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। ওপেন কিচেনের ধারণাটা একটু পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত বসার ঘর বা খাবার ঘরের সাথেই এই ওপেন কিচেনগুলো ডিজাইন করা হয়ে থাকে। ওপেন কিচেনের অন্যতম সুবিধা হল, অন্য ঘরের সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ থাকায় পরিবারের সাথে সময়টা বেশি কাটানো যায়। আর গল্পে গল্পে রান্নার কাজও হয়ে যায়। কিন্তু,  ওপেন কিচেনের সুবিধা-অসুবিধা এখানেই শেষ নয়! আরও জানতে পড়তে থাকুন।

“ওপেন কিচেন বনাম ক্লোজড কিচেন”

ওপেন কিচেন এবং ক্লোজড কিচেনের
ওপেন কিচেন এবং ক্লোজড কিচেনের মধ্যেকার তফাৎটা বুঝতে হবে

যেকোন সিদ্ধান্ত নেবার আগে আপনাকে ওপেন কিচেন এবং ক্লোজড কিচেনের মধ্যেকার তফাৎটা বুঝতে হবে। আপনি যদি প্রাইভেট একটা কিচেন পছন্দ করেন সেক্ষেত্রে ক্লোজড কিচেন আপনার জন্য উত্তম আর আপনি যদি খোলামেলা কাজ করতে পছন্দ করেন এক্ষেত্রে ওপেন কিচেন নিতে পারেন। রান্নার সময় বেশি গোলযোগ বা গন্ধ হলে এক্ষেত্রে ক্লোজড কিচেন বেশ উপকারী। যারা নিয়মিত রান্না করেন তারা ক্লোজড কিচেন পছন্দ করেন অন্যদিকে যারা নিয়মিত রান্না করেন না তারা ওপেন কিচেন পছন্দ করেন। এছাড়া যেহেতু, রান্নাঘরের সংস্কার করাও এত সহজ নয় তাই যত্ন সহকারে বাজেটের মধ্যে রান্নাঘর ডিজাইন করতে হয়!

ওপেন কিচেন সম্বন্ধে কিছু কথা 

ওপেন কিচেন
পরিবারের জন্য রান্না করার পাশাপাশি একে অপরের সঙ্গ পাওয়া গেল

নব্বই দশকের গোড়ার দিকে এই ওপেন কিচেনের ধারণাটি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। অনেকের কাছেই এই ওপেন কিচেন বেশ প্রিয় ছিল কেননা, খোলামেলা একটা আবেশ দেয় এবং বেশ ওয়েলকামিং পরিবেশ এনে দেয়। পরিবারের জন্য রান্না করার পাশাপাশি একে অপরের সঙ্গ পাওয়া গেল। ওপেন কিচেন একসাথে লিভিং রুম এবং ডাইনিং রুমের সাথেও যুক্ত! সুতরাং ডেকোরের দিক থেকেও রান্নাঘরের প্রাধান্য সমান । এছাড়াও রান্নাঘরের মেঝেও এমন বাছাই করতে হয় যা সহজেই, অন্য ঘরের সাথে মানিয়ে যায়। মোটামটি ১০০ স্কয়ার ফুটের জায়গা থাকলেই ওপেন কিচেন তৈরি করতে পারবেন। এ ধরনের রান্নাঘরে অবশ্যই কিচেন হুড বা চিমনির ব্যবস্থা রাখতে হবে। না হলে পুরো ঘর ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যাবে। চুলার পেছনের দিকে এখন টিনজাতীয় একধরনের ধাতব উপাদান পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করা যেতে পারে। না হলে অবশ্যই টাইলস ব্যবহার জরুরি। রান্নার কাজ শেষ হলে পুরো জায়গা দ্রুতই পরিষ্কার করে নিতে হবে। রান্নাঘর পরিষ্কার রাখারও একটা বিষয় থাকে, যেহেতু ওপেন কিচেন আপনাকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে নয়তবা মেহমানের সামনে লজ্জায় পড়তে হবে। 

ওপেন কিচেনের সুবিধা

ওপেন কিচেন
প্রাকৃতিক আলো থাকবে

ওপেন কিচেন হলে যে সুবিধাটা বেশি তা হল, এটা খোলামেলা। চারদেয়ালে বদ্ধ নয়! এবং খোলামেলা হওয়াতে আলোবাতাসের কোন কমতি থাকে না। এমনি আপনাকে দিনের বেলায় বাহারি বাতি ব্যবহার করতে হবে না! প্রাকৃতিক আলো থাকবে ভরপুর। এবং আপনি যদি মাউন্ট কিচেন রেঞ্জ হুড বা কাস্টমাইজ রেঞ্জ হুড ব্যবহার করতে চান এক্ষেত্রে ওপেন কিচেনের সুবিধাটাই বেশি। এমনকি খাবার রান্না করাও তখন আর কোন আলাদা কাজ মনে হবে না। পরিবারের সাথে গল্পে আড্ডায় রান্নার কাজ নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে। এমনকি আপনার রান্নার কাজের পরিবারের অনেকেই দেখা যাবে সাহায্য করছে। এমনটা ক্লোজড কিচেনে খুব কম হয়। এছাড়া মেহমান এলে আপনি মেহমানকে আপ্যায়নও করতে পারছেন এবং একই সাথে তাদের সময়ই দিতে পারছেন। এছাড়া আর একটি চমৎকার সুবিধা হচ্ছে, আপনার যদি অত্যধিক সুন্দর বাসনকোসন থাকে সেগুলো আপনি সুন্দর করে শোকেস করতে পারছেন। এছাড়াও কিচেন সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতে পারছেন, করতে পারছেন নানারকম ডেকোর! আর একটি সুবিধা হচ্ছে রান্নাঘরে রান্নার ফলে সৃষ্ট গরম ভাব ওপেন কচিনে অনেকটা কমে আসে।

ওপেন কিচেনের অসুবিধা

কুকিং আপ্লায়েন্স
রান্না ঘরের শব্দ আপনি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন না

ওপেন কিচেনের একটা বড় অসুবিধা হচ্ছে, রান্না করার সময় যেকোন ধরণের এলোমেলো অবস্থা আপনি লুকাতে পারছেন না। অর্থাৎ যতবারই আপনি রান্না করছেন ততবারই আপনাকে সবকিছু সঠিক জায়গায় গুছিয়ে রাখতে হচ্ছে! নয়তবা এলোমেলো রান্নাঘর আপনাকে দেখতেই হচ্ছে। এছাড়াও, ওপেন কিচেনের আর একটি সমস্যা হল, রান্না ঘরের শব্দ আপনি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন না। কেননা,হতে পারে প্রেশাকুকারের শিটির শব্দ বা ব্লেন্ডারের শব্দ আপনি চাইলেই কমিয়ে আনতে পারবেন না। এছাড়া কাজের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া যেকোন শব্দ পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরক্ত করতে পারে। তাছাড়া, রান্নার সময় আমরা এমন অনেক উপকরণ ব্যবহার করি যেগুলো বেশ গন্ধযুক্ত! সেটাও পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরক্ত করতে পারে। কিন্তু এই স্বাভাবিক কাজটাও আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই। অথচ ক্লোজড কিচেনে আপনি চাইলেই দরজা লাগিয়ে এবং এক্সহস্ট ফ্যান চালিয়ে দুর্গন্ধ দূর করতে পারছেন। 

ওপেন কিচেনের সুবিধা-অসুবিধা দুটোই রয়েছে কিন্তু যে সিদ্ধান্তই নেন না কেন! অবশ্যই ভেবে নিবেন। ওপেন কিচেনেও চাইলে নানারকম কেবিনেটের তৈরি করে নিতে পারেন। কিচেনেও ট্রেন্ডি ভাব থাকাটা জরুরী। তাই কিচেন তৈরি করার পূর্বে কালার স্কিম দেখে নিতে ভুলবেন না। আর আজকের এই আর্টিকেল কেমন লেগেছে জানাতে কমেন্ট করুন!

Write A Comment