Reading Time: 3 minutes

প্রপার্টিতে বিনিয়োগ করা বরাবরের মতোই বেশ লাভজনক একটি সিদ্ধান্ত। বর্তমান সময়ে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা যখন তুঙ্গে, তখন অনেকেই প্রপার্টিতে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে বাড়ি নির্মাণের ঝামেলা এড়াতে অনেকেই সরাসরি রেডি ফ্ল্যাট কিনছেন। বাড়ি নির্মাণের জন্য ব্যয়ের পরিমাণটা যেহেতু অনেক বেশি হয়, তাই বাড়তি অর্থ জোগাড় করা সহ পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যায়বহুল মনে করেন অনেকেই। এক্ষেত্রে কন্সট্রাকশন লোন হতে পারে আপনার জন্য দারুণ এক সমাধান। জমির মালিকানা থাকার শর্তে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে আবেদনের মাধ্যমে আপনি কন্সট্রাকশন লোন পেতে পারেন খুব সহজে।        

কন্সট্রাকশন লোন কী? 

কন্সট্রাকশন লোন বিষয়ে বিস্তারিত জানার আগে চলুন জেনে নেই কন্সট্রাকশন লোন কী এবং কোন ক্ষেত্রে আপনি এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোন বাড়ি নির্মাণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উক্ত বাড়ি নির্মাণ বাবদ খরচের জন্য স্বল্পমেয়াদে যে আর্থিক সহায়তা বা লোনের জন্য আবেদন করা হয়, সাধারণ অর্থে এটিই কন্সট্রাকশন লোন হিসেবে পরিচিত। জমি কেনা, উক্ত জমিতে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা, অনুমতি নেয়া, কাঁচামালের খরচ বহন এবং বাড়ি নির্মাণ বাবদ শ্রমিকের মজুরি প্রদান সহ প্রতিটি বিষয়ই কন্সট্রাকশন লোনের আওতাধীন থাকে। আর তাই বাড়ি নির্মাণের সাথে সম্পৃক্ত এ সকল খরচ বহন করার জন্যই মূলত কন্সট্রাকশন লোনের জন্য আবেদন করা হয়।                                                                                                                                            

কন্সট্রাকশন লোন কীভাবে কাজ করে? 

ভবিষ্যতে যারা বাড়ির মালিক হতে যাচ্ছেন, তাদেরকে বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী কেনার জন্য এবং শ্রমিকের মজুরি প্রদান বাবদ যে অর্থ ধার নেয়ার প্রয়োজন হয়, তা কন্সট্রাকশন লোন নেয়ার মাধ্যমে প্রপার্টির মালিকরা পরিশোধ করতে পারেন। এমনকি যে জমিতে বাড়ি নির্মাণ করা হবে, সেটি কেনার জন্যও এই কন্সট্রাকশন লোনের এই অর্থ ব্যবহার করা সম্ভব। তবে আপনি যদি ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট প্রপার্টির মালিক হয়ে থাকেন, তবে লোনের টাকা আপনি জামানত হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন। সাধারণত ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে বাড়ি নির্মাণের প্রক্রিয়া সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, কন্সট্রাকশন লোন দেয়া হয়। তবে আপনি চাইলে পরবর্তী সময়ে কন্সট্রাকশনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর নির্মিত ভবনের বিপরীতে হোম লোনও নিতে পারবেন।    

বাংলাদেশে কন্সট্রাকশন লোন কতটা জনপ্রিয়? 

বিভিন্ন ধরনের হোম লোন এর মধ্যে কন্সট্রাকশন লোন নেয়ার প্রচলন বাংলাদেশে বেশ আগে থেকেই আছে। যদিও তা কন্সট্রাকশন লোন হিসেবে নয়, বরং হাউজ বিল্ডিং লোন হিসেবেই বেশি পরিচিত।

তবে বর্তমান সময়ে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানই বন্ধকী ঋণ বা হোম লোন দেয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আর এ লক্ষ্যেই অর্থায়নের পদ্ধতিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হচ্ছে। 

কন্সট্রাকশন লোনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে যে যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন 

গতানুগতিক হোম লোন বা মর্টগেজ থেকে কন্সট্রাকশন লোন অথবা হাউজ বিল্ডিং লোনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি যোগ্য কিনা, তা কিছুটা ভিন্নভাবে দেখা হয়। একেক ব্যাংকের ক্ষেত্রে এই যোগ্যতা পরিমাপের মানদণ্ড একেক রকমের হয়ে থাকে। তবে প্রধান যে বিষয়গুলো এতে প্রাধান্য পায়, তা হল  –   

১। কর্মজীবী হওয়া ​​(ন্যূনতম ২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা)

২। জমির মালিকানা থাকা

৩। বয়স সর্বনিম্ন ২৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ৬৫ বছর 

কন্সট্রাকশন লোনের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলপত্র 

১। পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স, এনআইডি কার্ড

২। বিগত ২ মাসের বেতনের স্লিপ

৩। সাম্প্রতিক সময়ের ইউটিলিটি বিলের কপি

৪। বিগত ২ মাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট

তবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে  আপনি কন্সট্রাকশন লোন বাবদ আনুমানিক নির্মাণ পরিকল্পনার মোট ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৮০% অর্থ পাওয়ার যোগ্য হবেন, এর চেয়ে বেশি নয়।  

হোম লোন নেয়া হোক কিংবা কন্সট্রাকশন লোন, বাড়ি নির্মাণের সময় আর্থিক সহায়তা নিলে তা পুরো প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করে তুলে। আর তাই আপনি যদি কন্সট্রাকশন লোন নেয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে এই লোন বিষয়ে যথাযথ ধারনা নিয়ে নিন আগেভাগেই।  

Write A Comment

Author