Reading Time: 4 minutes

ইদানীং অ্যাপার্টমেন্টগুলো এত ছোট করে তৈরি করা হয় যে, কিচেনের জন্য তেমন একটা স্পেস রাখা হয়না। আগে যৌথ পরিবারের জন্য ছিল বড় বাসাবাড়ি। এখন বেশিরভাগ মানুষই নিজের মতো ছোট সংসার নিয়ে থাকতে পছন্দ করেন। এখনকার সময়ে সাড়ে সাতশ থেকে পনেরশ স্কয়ার ফিটের অ্যাপার্টমেন্টে কিচেন তেমন বড় হবে না, এটাই স্বাভাবিক। তাই বেশিরভাগ অ্যাপার্টমেন্টে দেখা যায় ছোট কিচেন। এবং কিচেন স্পেস ছোট হলে ঘরের গিন্নি থেকে যে অনেক অভিযোগ হরহামেশা শুনতে হয় তা হল, “কিচেনটা ছোট হয়ে গেছে, আরও একটু বড় হলে ভালো হত” বা “ছোট কিচেনে একজন কাজ করলে আরেক জন নড়াচড়া করার উপায় থাকে না।” এই সমস্যার সমাধান মিলবে না তা হয় নাকি? কিছু টিপস মেনে চলতে পারলেই কিচেন স্পেস মনের মত করে ব্যবহার করা সম্ভব।

দেয়ালের উপরে তাক তৈরি করুন 

ফ্রাইপ্যান ঝুলিয়ে রাখা আছে
কিচেন স্পেস অনেকটাই বেঁচে যাবে

কিচেন স্পেস যখন কম তখন আপনার ভাবতে হবে এই কম স্পেসে কিভাবে সবকিছু ঠিকঠাক আঁটানো যায়। দেয়ালের উপরের অংশ যতটুক সম্ভব ব্যবহার করুন। দেয়ালের উপরে কাঠের তৈরি তাক লাগিয়ে নিন কিংবা দেয়ালে হুক বসিয়ে নিন। যাতে করে রান্নার ফ্রাইপ্যান ও আরও জিনিসপত্র ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এতে কিচেন স্পেস এর সঠিক ব্যবহারও হলো, আপনার প্রয়োজনও মিটে গেল। কিচেনের দেয়াল অনেকটা সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকে, তাই প্রয়োজনে দেয়ালটি যথাযথ ব্যবহার করুন। কিচেন যত হালকা আর খোলামেলা হবে তত দেখতে বড় লাগবে।  

কেবিনেট ব্যবহার করুন 

কেবিনেটের ছবি
আপনি সব জিনিস আলাদা করে রাখতে পারবেন

কিচেন স্পেস কম হলে সেখানে সুন্দর করে মানিয়ে যাবে এমন আসবাবপত্র নির্বাচন করা জরুরী এবং তার জন্য আসবাব কেনার কিছু টিপস জেনে তবেই কেনা উচিত। এক্ষেত্রে কেবিনেট যেমন উপকারী তেমনি দেখতে সুন্দর। তাই কিচেন স্পেস ব্যবহারের জন্য কেবিনেট তৈরি করুন। কেবিনেট আপনার অনেকটুকু জায়গা বাঁচিয়ে দিবে। আপনি চাইলে কেবিনেটের ভেতরে কয়েকটি ড্রয়ারও তৈরি করতে পারেন, এতে আপনি বিভিন্ন জিনিস আলাদা করে রাখতে পারবেন। কেবিনেটের নকশার জন্য বাজারে রয়েছে হাজারো কেবিনেট, কিন্তু কাঠ ও লোহার তৈরি কেবিনেট টেকসই হয় বেশি দিন। যেহেতু, এটা কিচেনের জন্য তাই এমন কিছু বাছাই করা ভালো যা দীর্ঘমেয়াদী হবে।

সিঙ্গেল সিঙ্ক বা আন্ডার মাউন্ট সিঙ্ক ব্যবহার করুন 

সিঙ্ক
সিঙ্গেল সিঙ্ক দেখতে ভীষণ আধুনিক এবং সুন্দর

যে ভুলটি কম বেশি সবাই করে থাকে সেটি হলো, ডাবল সিঙ্ক কিচেনে বসিয়ে নেয়া। এটাও ঠিক যে কিচেনের ধোয়া মোছার কাজটি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়ের ব্যাপার। এজন্য কিচেনের কাজের সুবিধার্থে অনেকে ডাবল সিঙ্ক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু, এটি যে কতটা কিচেন স্পেস নষ্ট করে তা বলা বাহুল্য। পরিবারে যদি সদস্য সংখ্যা কম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে, ডাবল সিঙ্ক অপ্রয়োজনীয়। কিচেন স্পেস অনেকটাই বেঁচে যাবে যদি সিঙ্গেল সিঙ্ক ব্যবহার করেন। আপনি চাইলে আন্ডার মাউন্ট সিঙ্ক ব্যবহার করতে পারেন। এগুলোও কিচেনের স্পেস অনেকটা বাঁচিয়ে দিবে। দেখতেও ভীষণ আধুনিক এবং সুন্দর।

মাল্টি পারপাস যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন 

লেবু কাটার
স্পেস অনেকটা বেঁচে যাবে

বাজারে এখন অনেক মাল্টি পারপাস কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। সেগুলো কিনে আনুন। কেনার আগে অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ড দেখে নিন, তা নাহলে সময় আর পয়সা দুটোই নষ্ট হবে। এই সব মাল্টি পারপাস যন্ত্রপাতির সুবিধা হল একবারে অনেকগুলো কাজ করে নেয়া যায়। এবং এগুলো রাখার জন্যও বেশি স্পেস দরকার হয় না। যেহেতু এক সাথে অনেক কাজ করতে পারবেন সেহেতু, কিচেনের অন্য অপ্রয়োজনীয় জিনিস আপনি সরিয়ে ফেলতে পারবেন।

অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে দিন 

অপ্রয়োজনীয় জিনিস
অপ্রয়োজনীয় সবকিছু ফেলে দিন দেখবেন অনেক স্পেস পেয়েছেন

অনেক সময় এমন হয় অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য কিচেন আরও আঁটসাঁট দেখায়। হয়তো আপনি কাজের ব্যস্ততায় খেয়াল করা হবে না কিন্তু বেশিরভাগ সময় কিচেন ভর্তি করা থাকে যত অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দিয়ে। যার ফলে কিচেনে দরকারের জিনিস রাখার জায়গা থাকে না। এমনকি কিচেনে কাজ করতেও হয় অস্বস্তি। তাই আগেই সময় নিয়ে কিচেন পরিষ্কার করে ফেলুন, অপ্রয়োজনীয় সবকিছু ফেলে দিন। দেখবেন অনেকটুকু স্পেস আপনি নিজেই পেয়ে গেছেন। তখন হুট করে মনে হবে “আমার কিচেন এত বড় ছিল কবে থেকে!”

জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখুন 

কিচেন
সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন

অপ্রয়োজনীয় সবকিছু তো ফেলে দিলেন,এবার কি? ওপরের সব টিপস প্রয়োগের পরেও দেখবেন তেমন একটা স্পেস বের হচ্ছে না, কেন জানেন? কারণ তা ঠিকমত গোছানো নেই বলে। এবার বাকী সবকিছু প্রয়োজনমত গুছিয়ে নিন। সুন্দর করে গোছানো কিচেন যেমন দেখতে ছিমছাম লাগে তেমনি আয়তনে বড় দেখায়। সব সময় চেষ্টা করবেন গুছিয়ে রাখার। কিচেন আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের একটি রুম। তাই প্রতিবার কাজ শেষে পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। রান্নার পর ব্যবহৃত জিনিস পরিষ্কার করে যথাস্থানে গুছিয়ে রাখার অভ্যাস করা ভালো।

অনেকেই আছেন যারা কিচেনকে অনেক বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন, তাদের জন্য রান্না খুব আনন্দের একটি কাজ। এবং আপনার যদি মনে হয়ে থাকে ব্যবহারের কিচেনটি তেমন বড় নয়, সেক্ষেত্রে এই টিপসগুলো ব্যবহার করতে পারেন। কিচেন স্পেস ব্যবহারের এই কয়েকটি টিপস আপনার কেমন লেগেছে অবশ্যই জানিয়ে দিন কমেন্টে!

Write A Comment