Reading Time: 3 minutes

যে কোন জিনিসের আদর্শ হতে হলে কিছু বিশেষ গুণ থাকা আবশ্যক। কোন একটি এলাকা আদর্শ হতে হলে সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য চাই নগরজীবনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা হাতের মুঠোয়। এলাকার পরিবেশ থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা কিংবা চিত্তবিনোদনের সুবিধা, সবই থাকতে হয় সে এলাকায়। আর এসব কিছু মাথায় রাখলে চট্টগ্রামের খুলশীকে নিঃসন্দেহে বসবাসের জন্য একটি আদর্শ এলাকা ধরা যায়। খুলশী যে শুধু চট্টগ্রামের সবচেয়ে উন্নত একটি এলাকা তাই নয়, এটি যে কোন দিক বিবেচনায় বসবাসের জন্য আদর্শও বটে। কেন এটি আদর্শ একটি এলাকা? চলুন দেখে নেয়া যাক।

শান্ত, নিরিবিলি, পাহাড়ঘেরা পরিবেশ

খুলশী আবাসিক
খুলশী গড়ে উঠেছে পাহাড়ঘেরা পরিবেশে

খুলশী এলাকাটি চারিদিকে চমৎকার পাহাড়ঘেরা। এমন মনোমুগ্ধকর এলাকা দেখে মুগ্ধ না হয়ে থাকা কঠিন। বাংলাদেশ মূলত সমতল ভূমি। এখানে পাহাড়ের সংখ্যাই হাতে গোনা। সেখানে এমন পাহারঘেরা আবাসিক এলাকা তো বিরল। আর এমন নয়নাভিরাম পরিবেশে গড়ে উঠা এলাকাটি শুধু দেখতে সুন্দর তাই না। বরং এটি গড়ে উঠেছে চমৎকার একটি কমিউনিটি হিসাবে। 

পাহাড়, নদী, সৈকত, হ্রদ, বন বা সমুদ্র, চট্টগ্রামে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কোন অভাব নেই। কিন্তু খুব কম মানুষেরই ভাগ্য হয় পাহাড়ঘেরা কোন এলাকায় বাস করতে যেখানে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ঘর থেকেই উপভোগ করা যাবে প্রতি মূহুর্তেই। খুলশীর বাসিন্দারা নিঃসন্দেহে এদিক থেকে সৌভাগ্যবান। 

যাতায়াতব্যবস্থা

খুলশীর রাস্তা
খুলশীতে আছে চমৎকার যোগাযোগব্যবস্থা

চট্টগ্রামের যে কোন এলাকার সাথে খুলশীর আছে চমৎকার যাতায়াতব্যবস্থা। বলাই বাহুল্য, আদর্শ কোন আবাসিক এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা হতে হবে খুবই উন্নতমানের। তাই খুলশীতে থাকলে আপনি থাকছেন নগরের হট্টগোল থেকে বাইরে অথচ সব কিছু থেকে খুব কাছেই! জাকির হোসেন রোড দিয়ে খুব সহজে পৌঁছে যাওয়া যাবে ব্যস্ত জিইসি মোড়ে। যে কোণ বাণিজ্যিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা চিত্তবিনোদনের জায়গায় যাওয়াও অনেক সহজ এখান থেকে। আর শপিং এর জন্য আছে সেন্ট্রাল প্লাজা, খুলশী মার্ট কিংবা দি বাস্কেটের মত উন্নতমানের শপিংমলগুলো।

ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছে খুলশীর উপর দিয়েই। শহরের ভেতর চলাচলের জন্য বেশ কিছু বাসস্টপেজও আছে এখানে। আর যে কোন প্রয়োজনে দিনরাত সবসময় মেলে রিকশা বা সি এন জি। 

খুলশী এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

পরিবারের অনুজদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা পাওয়া যাবে এমন এলাকায় থাকতে চান বেশিরভাগ মানুষ। এলাকায় ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কী না, এই মাপকাঠিতেও খুলশী পাশ মার্ক পেয়ে উতরে যাবে। সরকারি মহিলা কলেজ, ওমরগণি এম.ই.এস. বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ, ইস্পাহানি স্কুল ও কলেজ, সরকারি গার্লস স্কুল, নাসিরাবাদ টেকনিক্যাল টেইনিং কলেজের মত চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে খুলশীতে। তাই পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা নিয়ে চিন্তা করলেও খুলশী চমৎকার একটি এলাকা। 

চিত্তবিনোদনের স্থান

ফয়েজ লেক
ফয়’স লেক

আপনি পরিবারের সাথে আনন্দঘন সময় কাটাতে চান কিংবা নিজে নিজের সাথে, খুলশী এলাকায় আছে চিত্তবিনোদনের সব ব্যবস্থাই। আগেই বলা হয়েছে এই এলাকার অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের বিষয়ে। এছাড়াও খুলশীর খুব কাছেই আছে ফয়’স লেকের মত জায়গা যা শুধু চট্টগ্রামই নয় বরং সারা দেশের মানুষের জন্যি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য।

বিভিন্ন আধুনিক বিনোদনের সুবিধার সাথে সাথে ফয়’স লেকে আছে সবুজের সমারোহ। যে কোন অবস্থাতেই যা পারে মন ভাল করে দিতে। তাই খুলশী যদি হয় আপনার এলাকা তাহলে ফয়’স লেকে আপনি চলে যেতে পারবেন যখন তখন!
এছাড়া, চিটাগাং চিড়িয়াখানাও আছে এর সাথে লাগোয়া জায়গায়। আর চিড়িয়াখানা তো ছোট বড় সবারই প্রিয়। 

বিনিয়োগের জন্য চমৎকার এলাকা

আপনার কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগের জন্য খুলশী নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয় এক এলাকা। বিনিয়গের বিপরীতে আয় বা রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (আর.ও.আই) খুলশী এলাকায় অনেক বেশি। এছাড়া এখানে বেশ অনেক অপশনও আছে প্রপার্টির জন্য। কিছুটা সুলভ মূল্যে প্রপার্টি খুঁজলে আছে দক্ষিণ খুলশী। আর অভিজাত, বিলাসবহুল জীবনের জন্য সব ধরণের প্রপার্টি মিলবে খুলশীর উত্তরভাগে।
খুলশী এলাকাটি যেন প্রাকৃতিক পরিবেশ আর আধুনিক আবাসন, এ দুয়ের মিলনমেলা। আপনি প্রথমবারের মত বাড়ি কিনতে আগ্রহী হোন কিংবা একাধিক, চট্টগ্রামে প্রপার্টি কেনার কথা উঠলে খুলশীকে অস্বীকার করার উপায় নেই।

এসবের বাইরেও খুলশীতে বসবাসের আছে আরও বেশ কিছু সুবিধাজনক দিক। ভারতীয় এবং রাশিয়ান দূতাবাস রয়েছে এই এলাকায়। টেলিভিশন ভবন, দামপাড়া পুলিশ লাইনও খুব কাছেই, একটি এলাকার আদর্শ হতে আর কী লাগে? অর্থ্যাৎ খুলশী হল সমগ্র চট্টগ্রামের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ ও উন্নত এলাকার একটি। তাই আপনি চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করতে চান কিংবা পরিবার নিয়ে বসবাস, খুলশী হতে পারে উভয় দিক দিয়েই আদর্শ। 

Write A Comment