Reading Time: 4 minutes

জীবনে কখনই বাসা বদলাতে হয় নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া আসলেই কঠিন। নানা প্রয়োজনে অনেককেই বাসা বদল করতে হয় প্রতিনিয়ত। আর বাসা বদলের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত সবধরনের জিনিসপত্র প্যাকিং করার বিষয়টি। যতই বিরক্তিকর কিংবা সময়সাপেক্ষ হোক না কেন, বাসা বদল করতে গেলে প্যাকিং করতেই হবে। অন্য সবকিছুর মতই, জিনিসপত্র গোছগাছ করার আগেই যদি আপনি ঠিকঠাকভাবে প্ল্যানিং করে নেন তাহলে মিটে যায় অনেক সমস্যাই। আর এই ব্লগটি এমনই কয়েকটি টিপস নিয়ে যা বাসা বদলের সময় জিনিসপত্র প্যাকিং করার জন্য হবে সহায়ক।   

১. অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দেবার সময় এখনই!

অপ্রয়োজনীয় জিনিস
অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দিন এভাবেই

বাসা মানেই হল একটি সংসার। আর সংসারে দরকারী জিনিসের কোন শেষ নেই। জিনিসপত্র যত বাড়তে থাকে, একই সাথে বাড়তে থাকে অপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংখ্যাও। যখন একটি বাসায় আপনি বাস করছেন, তখন আনাচে কানাচে, এখানে সেখানে হয়ত জায়গা হয়ে যায়। কিন্তু বাসা বদলের সময় এসব জিনিসই হয়ে উঠে সবচেয়ে বড় সমস্যার কারণ। তাই যদি দ্রুত সব জিনিস প্যাক করতে চান তাহলে উৎকৃষ্ট সময় এসব অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দেবার। এগুলো হতে পারে পুরনো কাপড়, ছবি, ম্যাগাজিন বা খবরের কাগজ, হতে পারে পুরনো খেলনা বা আসবাব যা এখন আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। শুধু শুধু বয়ে না বেড়িয়ে এগুলোকে ফেলে দিন আর প্যাকিং করার সময় জায়গা বাঁচান। হ্যাঁ, পুরনো কিছু ছবি বা এরকম জিনিস আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বিশেষ স্মৃতির কারণে। তাহলে সেসব জিনিসকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখুন। ছবিকে ফ্রেমে জায়গা দিন, পুরনো কাপড়কে রাখুন গুছিয়ে। 

২. বাক্সের গায়ে লেবেলিং করতে ভুলবেন না!

বাক্স
বাক্সের গায়ে করুন সঠিক লেবেলিং

বাসা বদলের সময় যে জিনিসগুলো আপনি বাক্সে ভরছেন, তা কিন্তু সারাজীবন বাক্সে থাকবে না। জিনিসপত্র প্যাকেট করার অর্থই হল সে প্যাকেট আপনাকে খুলতে হবে। আর নতুন বাসায় গিয়ে যদি আপনি খেই হারিয়ে ফেলেন যে কিসের মাঝে কী আছে, তাহলে বিপদ। এ বিপদ থেকে রক্ষা পেতে দরকার বাক্সের গায়ে আলাদা লেবেলিং।  সবকিছু ঠিকঠাকমত গুছিয়ে প্যাক করা হয়ে গেলে, আলাদা আলাদা বক্সের গায়ে লিখে ফেলুন কী আছে সেগুলোর ভেতর। যেমন, রান্নাঘরের জিনিস যার মাঝে আছে, সেখানে লিখতে পারেন – কিচেন। কাচের জিনিস থাকলে “সাবধান! কাচের জিনিস!” লেখা দেখলে যে কেউ একে সাবধানে নাড়াচাড়া করবে। আর নতুন বাসায় গিয়ে আপনি বুঝতে পারবেন কীভাবে আনপ্যাকিং শুরু করা যায়।

৩. বাক্সগুলোকে প্রস্তুত রাখুন সম্ভাব্য ঝড়ঝাপ্টার জন্য

বাবল র‍্যাপ
সম্ভব হলে ইউজ করুন বাবল র‍্যাপ

বাসা বদল মানেই বিশাল এক ঝক্কি। বাসার প্রতিটা জিনিসের উপর দিয়ে এসময় বয়ে যায় ঝড়ঝাপ্টা। তাই আপনার প্যাকেট বা বাক্সগুলোকে রেডি রাখতে হবে যেন সেই ঝড়ঝাপ্টাগুলো সে নিতে পারে। এজন্য ভঙ্গুর জিনিসগুলোকে পারলে বাবল র‍্যাপ দিয়ে মুড়িয়ে নিন। বাবল র‍্যাপ সংগ্রহ করা সম্ভব না হলে কাপড় দিয়ে মুড়ে দিন সব সামগ্রী। বাক্সের নিচে এবং পাশ দিয়ে পুরাতন খবের কাগজ দিয়ে দিলেও তা কিছুটা আঘাত সহনীয় হয়। অর্থ্যাৎ আপনার জিনিসপত্র প্যাকিং করার সময় সেগুলোকে আসন্ন সম্ভাব্য ঝড়ঝাপ্টার জন্য প্রস্তুত করে রাখুন।

৪. বাক্সের জায়গা নষ্ট করবেন না

বাক্স
বাক্সের জায়গার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করুন

প্যাকিং করার সময় বাক্সের স্পেসের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করুন। কোন বাক্সেই যেন কোন জায়গার অপচয় না হয়। অবশ্য তা করতে গিয়ে উপরে লেখা লেবেলিং অংশে কিছুটা ঝামেলা বেধে যেতে পারে। একই প্যাকেটে লিভিং রুম আর রান্নাঘরের জিনিসপত্র ঢুকে যেতে পারে। কিন্তু একই প্যাকেটে দুটি লেবেল দিতে তো আর দোষ নেই! তাই বুদ্ধি খাঁটিয়ে কয়েকটি জিনিস একটি প্যাকেটে রাখুন। বাক্সের সব স্পেস ব্যবহার করলে যেমন জায়গা বাঁচবে সাথে সাথে বাঁচবে বাড়তি প্যাক বহন করার খরচও। এছাড়া আটসাটভাবে প্যাক করলে ভেতরের জিনিস নড়াচড়া করার জায়গা থাকবে না, ফলে ভাঙ্গার সম্ভাবনাও যাবে কমে।

৫. ভারী জিনিসপত্র প্যাকিং করার জন্য আলাদা বাক্সের ব্যবহার

ভারী জিনিস
ভারী জিনিস সাবধানে মুভ না করলে এমন বিপদে পড়তে হবে!

এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ টিপস। ভারি কোন কিছু নাড়াচাড়া করা অনেক কঠিন ব্যাপার। তাই যেসব জিনিস একটু বেশি ভারী সেগুলোকে আলাদা এবং তুলনামূলক ছোট কিছুতে বহন করার ভাল। এতে এগুলো বহন করতে যেমন সুবিধা হয় তেমনি আলাদাভাবে চোখেও পড়ে। যেমন, বই সাধারণত বেশ ভারী হয়। এমন বই বহনের সময় চাকাযুক্ত সুটকেসে মধ্য নিলে তা মুভ করা সহজ হয়ে যায়।

বাসা বদলের সময় জিনিসপত্র প্যাকিং সংক্রান্ত এ টিপসগুলো আপনার কেমন লাগলো? এমন আরও টিপস জানতে এবং নতুন নতুন লেখা পড়তে বিপ্রপার্টি ব্লগের সাথেই থাকুন!

Write A Comment