ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনা বা ভাড়া করে থাকা, কোনটি উত্তম? আমাদের দেশের আবাসনক্ষেত্রে এটি খুবই কমন একটি প্রশ্ন। অনেকের জন্য বাসা ভাড়া করে থাকাই একমাত্র উপায়। অনেকে আবার সামান্য ঝুঁকি নিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলার সামর্থ্য রাখলেও, ভাড়া বাসাতেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আবার কেউ কেউ মনে করে মাসে মাসে ভাড়া না টেনে বরং কষ্ট করে বাসা একটি কিনে ফেলাই বোধহয় ভাল। সারা জীবনের জন্য পাওয়া গেল একটি স্থায়ী ঠিকানা। কিন্তু আসলে কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত? কোনটি বেশি লাভজনক? তা আসলে নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপর। তাই বাসা ভাড়া বা ক্রয় সংক্রান্ত যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আপনার জেনে নেয়া উচিত সেই বিষয়গুলো। আমাদের আজকের আলোচনা ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনা বা ভাড়া নিয়ে থাকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়েই যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
সামর্থ্য
প্রথমেই আপনাকে হতে হবে বাস্তববাদী এবং বুঝতে হবে নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে। ঢাকা শহরে জীবনযাত্রার খরচ দিনদিন বেড়েই চলেছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে অনেকেই। তাই অনেকের হাতেই অপশন নেই টাকা জমিয়ে একটি বাড়ি কেনার। এজন্য বাসা কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আপনার সামর্থ্য এবং সেভিংসের বিষয়টি মাথায় রাখুন। সাধারণত অনেকেই নিজের জমানো অর্থের সাথে ব্যাংক লোন নিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলেন। অর্থায়নের জন্য ব্যাংকসহ অন্যান্য ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলো হতে পারে ভাল একটি সমাধান। তবে যে কোন প্রতিষ্ঠানই আপনাকে লোন দেয়ার আগে আপনার সামর্থ্য যাচাইবাছাই করেই লোন দেবে।
স্থায়ীত্বকাল
কোন এলাকায় আপনি কতদিন থাকতে চান? এখন যে এলাকায় আছেন তা কি আপনার পরিবারের সকল চাহিদা মেটায়? এখানে কি স্থায়ীভাবে বাস করতে চাচ্ছেন? কোন এলাকায় একটি ফ্ল্যাট কেনা মানে সেখানে স্থায়ী হয়ে যাওয়া। তাই ভাবতে হয় অনেকদিক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ঢাকা শহরের সবার জন্যই বড় মাথাব্যাথার কারণ হল ট্রাফিক জ্যাম। এজন্যই, জীবন থেকে সময় বাঁচাতে অনেকেই পছন্দ করেন অফিসের কাছাকাছি থাকতে। এখন, কারো অফিস যে সারাজীবন একই জায়গায় থাকবে তা কোন নিশ্চয়তা নেই। এরকম মানুষের জন্য বাসা ভাড়া করে থাকাটিই উপযুক্ত। আবার এর সাথে সাথে চিন্তা করতে হবে বাচ্চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়টিকেও। এসব কিছু চিন্তা করে যদি আপনি কোন একটি জায়গা পছন্দ করতে পারেন এবং আপনার সামর্থ্যও থাকে তাহলে একটি ফ্ল্যাট কিনে নেয়াই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
বাসার রক্ষণাবেক্ষণ
নিজের একটি ফ্ল্যাট থাকা যেমন কাজের তেমনি অনেক দায়িত্বও এসে চাপে ঘাড়ে। তার মধ্যে অন্যতম হল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব। এছাড়া নিজের বাসা থাকলে হোল্ডিং ট্যাক্স, এই ট্যাক্স, সেই ফি, এরকম বহুত ফি-ও দিতে হয়। আর এজন্যই বাসা ক্রয় করার সময় নানা ধরণের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করতে হয় খুবই সাবধানতার সাথে, সময় নিয়ে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। যে আরেকটি বড় কারণ ঢাকায় অনেকের ফ্ল্যাট কিনতে না চাওয়ার। মাঝে মধ্যেই দেখা যায় কাগজপত্র নিয়ে ঝামেলা থাকে, যে কারণে বিশাল অংকের টাকা ব্যয় করেও থাকা যায় না নিশ্চিন্তে।
সে তুলনায় বাসা ভাড়া নেয়া অনেক অনেক সহজ। একজন বাসার মালিককে যে চার্জ দিতে হয় মালিক হিসেবে, ভাড়াটিয়ার ক্ষেত্রে তা অনেকসময় দিতে হয় না। তাই ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনা বা ভাড়া নেয়ার মধ্যে অনেকে ভাড়া নিতেই বেশি পছন্দ করেন।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? এই মুহুর্তে যদি আপনার একটি ফ্ল্যাট কেনার সামর্থ্যও থাকে, তা কি কোনভাবে আপনার সেই পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটায়? যেমন, উপরে উল্লেখ করা বাচ্চাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথাই ধরা যাক, আপনি নতুন যেখানে বাড়ি কিনবেন বলে ভাবছেন, আপনার সন্তান কি সেখানকারই কোন প্রতিষ্ঠানে পড়বে। এছাড়াও ভাবুন এলাকার ভবিষ্যতের কথা। কতটা উন্নত এই এলাকা? আর কত উন্নতই বা হবে সামনে? এসব কিছু ভেবে যদি আপনি একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারেন, তাহলেই আপনি ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনা বা ভাড়া নেয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনা বা ভাড়া নেয়া সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা কী? নিচে মন্তব্যের ঘরে জানিয়ে দিন। এছাড়া, আপনি কী ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনা বা ভাড়া করতে চান? বিপ্রপার্টি পারে আপনাকে সাহায্য করতে। আপনার প্রয়োজনীয়তা আমাদেরকে জানান, কাঙ্ক্ষিত প্রপার্টি খোঁজ দেবে বিপ্রপার্টি ডট কম।