Reading Time: 4 minutes

ইদানীংকালে প্রায় অনেক বাসা বাড়িতেই দেখা যায়, খোলামেলা বেডরুম থাকলেও বসার ঘরটা থাকে একদম সরু। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আসবাব যেন রাখাই যায় না। আর ঘর অনুযায়ী আসবাব কেনা সবসময় সম্ভবও হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে, দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম সাজানোর কিছু কৌশল আছে। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে নিলেই দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম হয়ে উঠবে খোলামেলা বড় একটি ঘর। এজন্য আপনাকে আসবাব পরিবর্তন করতে হচ্ছে না! এমনকি ঘরের কাঠামোতেও কিছু পরিবর্তন করতে হচ্ছে না। কেবল, আসবাব একটু এদিক-সেদিক করলেই হয়তো দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুমের প্রধান সমস্যাটা সমাধান সম্ভব হবে। তাহলে, চলুন জানা যাক!  

রুমের যেকোন এক পাশে আসবাব রাখুন

লিভিং স্পেস
আসবাবকে লিভিং রুমের একদিকে রাখুন

দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম গুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আসবাব বসানো। দীর্ঘ ও সরু ঘরটায় স্পেসই যেহেতু কম থাকে তাই হাঁটার জন্য যথেষ্ট জায়গা রাখা কিছুটা মুশকিল হয়ে ওঠে। আবার আসবাবের ফাঁকে হাঁটার স্পেস রাখলেও সেখানে হাঁটা তেমন একটা সুবিধার হয় না। যদিও বেশিরভাগ বাসা বাড়িতেই এভাবেই আসবাব রাখতে দেখা যায়। দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুমকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য সকল আসবাবকে আপনি ছড়িয়ে না রেখে বরং, লিভিং রুমের একদিকে রাখুন। এতে করে হাঁটার জায়গা যেমন বেড়িয়ে আসবে তেমনি লিভিং রুমটাকে একটু খোলামেলা আর বড় দেখাবে।

ঘরের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী আসবাব প্লেসমেন্ট করুন 

লিভিং স্পেস
সম্ভব লম্বাটে আসবাব রাখুন

ঘরের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী লম্বা কিছু আসবাব রাখুন। যেমন, দেয়াল ঘেঁষে সোফা রাখলে তার সামনে একটা ছোট গোল কফি টেবিল রাখুন। ব্যাস, আর কিছু সোফার সাথে রাখবেন না। চেষ্টা করবেন লম্বা ও সরু ঘরটায় কখনোই বড় কোন আসবাব মুখোমুখি না রাখার। এতে করে ঘরে আঁটসাঁট ভাব চলে আসবে। হাঁটার জায়গাও কমে আসে। যতটা সম্ভব লম্বাটে আসবাব রাখুন।

কিছু কিছু আসবাব এঙ্গেল করে রাখুন  

লিভিং স্পেস
ঘরে ডাইমেনশন আনবে

লম্বা ও সরু ঘরকে অনেক সময় ট্যানেলের মত লাগে। খোলামেলা থাকে না, হাঁটা চলার তেমন একটা স্পেস থাকে না দেখে অনেকের কাছে এটাকে ট্যানেলের মত অনুভব হয়। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে কিছু আসবাবকে এঙ্গেল করে রাখতে পারেন। এতে ঘরে আসবাবগুলো সঠিকভাবে বসবে এবং যথেষ্ট জায়গা পাওয়া যাবে আসবাব বসানোর পরও। এছাড়া ঘরে ডাইমেনশনও আনবে। দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম তখন আর ছোট লাগবে না। আপনি চাইলে আসবাব এঙ্গেল করার আগে রাগস বা কার্পেট ব্যবহার করতে পারেন। রাগস বা কার্পেট সবসময়ই ঘরের ভেতর আউটলুক তৈরি করতে পারে।

সার্কুলার কফি টেবিল এবং ডাইনিং টেবিল 

লিভিং রুম
ডেকোরের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে বিভিন্ন রকমের ম্যাটেরিয়াল

দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম গুলোতে সার্কুলার কফি টেবিল এবং ডাইনিং টেবিল চমৎকার উপায়ে ঘরটাকে বড় দেখায়। ঘরে বড় আউটলুক আনতে অনেকেই এই ধরনের সার্কুলার টেবিল ব্যবহার করে থাকে। সরু লিভিং রুমে সবসময়ই আসবাব বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে হতে হবে সাবধান। এমন কোন আসবাব বাছাই করা যাবে না যা কিনা আপনার সংকীর্ণ ঘরটাকে আরও আঁটসাঁট দেখায়। আসবাব বাছাইয়ের মাধ্যমে সরু ঘরটাকে কখনোই আকারে বড় করা সম্ভব নয়। কিন্তু, সার্কুলার কফি টেবিল এবং ডাইনিং টেবিল বাছাইয়ের ফলে ঘরে বড় ও খোলামেলা আউটলুক তৈরি করা সম্ভব।

রুমের উপরের অংশে শেলফ ব্যবহার করুন  

লিভিং স্পেস
শেলফ ব্যবহার করুন

আপনার ঘর যদি আকারে দীর্ঘ এবং সরু হয় তাহলে ঘরের উপরের অংশ অর্থাৎ, দেয়ালের উপরের অংশ ব্যবহার করা যায়। আপনি চাইলে ফ্লোটিং শেলফ ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের আকার ও প্রয়োজন অনুযায়ী শেলফ তৈরি করা যেতে পারে। বই থেকে শুরু করে যেকোন শোপিস এই শেলফগুলোতে অনায়াসে রাখা যায়। নানা ধরণের ফ্লোটিং শেলফ আইডিয়া আছে যেগুলো দিয়ে দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম এর স্পেসে ঘাটতি মেটানো সম্ভব।

আয়না রাখুন

আয়না রাখুন
আয়না ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই

আয়না যেমন প্রয়োজনীয়তার জন্য ব্যবহার করা হয়, অন্যদিকে আয়না রাখার কারণে ঘরের চেহারা পুরোপুরি রূপেই পাল্টে যায়। এছাড়া ঘরে ঢোকা কিংবা বের হওয়ার সময় আয়নার দিকে এক নজর না তাকালেই যেন নয়। রকম ভেদে আয়না এর ব্যবহার ঘরের ছোট রুমকে আরও বড় এবং প্রশস্থ দেখায়। তাই লিভিং রুমকে বড় দেখাতে আয়না ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। তাই অনেকেই রুমের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেন সিম্পল কিংবা ডেকোরেটিভ বিভিন্ন ডিজাইনের আয়না। আর তাতেই পাল্টে যায় রুমের দৃশ্য। বিভিন্ন ডিজাইন এবং ফ্রেমের এই আয়নাগুলো রুমের আকার আকৃতি বুঝে ব্যবহার করা হয়।

এই ছিল আমাদের দীর্ঘ ও সরু লিভিং রুম সাজানো ও বড় দেখানোর কিছু টিপস। ইন্টেরিয়রে যেকোন সমস্যারই রয়েছে সহজ কোন সমাধান। আমাদের কেবল সেই সমাধানগুলো খুঁজে নিতে হবে। আপনার কেমন লাগলো আজকের এই ব্লগটি জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। 

Write A Comment