ব্যস্ত শহর ঢাকার অলিগলি জুড়ে রয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর। দালানকোঠার ভিড়ে ঢাকা এই শহরের নামের সার্থকতাও তাই শতভাগ। রেসিডেন্সিয়াল এবং কমার্শিয়াল এই দুই ক্যাটাগরিতে গড়ে ওঠা শহরের অট্টালিকা গুলো পূরণ করছে আমাদের নানা প্রয়োজন। নিশ্চিন্তে বসবাসের জন্য রেসিডেন্সিয়াল এই বাড়িগুলো যেমন আমাদের চাহিদা পূরণ করছে, তেমনি কমার্শিয়াল ভবন গুলোতে থাকছে রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ব্যাংক, শপিংমল, ফাইনান্সিয়াল কোম্পানি, বিজনেস সেন্টার, পার্লার সহ অন্যান্য আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। ঢাকার অন্যান্য এলাকার মতো রেসিডেন্সিয়াল এলাকা হিসেবে সুপরিচিত ধানমন্ডিতে রয়েছে বেশ কিছু কমার্শিয়াল ভবন। তবে চলুন আজকের ব্লগে ধানমন্ডির কমার্শিয়াল ভবন গুলোর মধ্যে কয়েকটি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।
র্যাংগস কেবি স্কয়ার ভবন
ঘোরাফেরা, খাওয়া-দাওয়া এবং আড্ডা দিয়ে অনায়াসেই ধানমন্ডিতে একটি সুন্দর দিন কাটানো সম্ভব। ধানমন্ডিতে এত এত রেস্টুরেন্টের ভবন রয়েছে যে অনেক সময়ই রেস্টুরেন্ট সিলেক্ট করতে গিয়ে আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই। স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের কাছে তাই ধানমন্ডি দারুণ এক আড্ডার জায়গা বলা যায়। ধানমন্ডির অন্যান্য সড়কের মধ্যে সাত মসজিদ রোড তাই এ কারণে বিশেষ পরিচিত।
ঢাকা শহরের জনপ্রিয় ও বৈচিত্র্যময় রেস্টুরেন্ট গুলোর বেশ কয়েকটি অবস্থিত ধানমন্ডির বিভিন্ন সড়কে। এর মধ্যে ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের ৯/এ এর প্রধানে সড়কে গেলেই আপনার চোখে পড়বে ১৪ তলা বিশিষ্ট র্যাংগস কেবি স্কয়ার ভবনটি। প্রথম দেখাতেই আপনার মনে হতে পারে, পুরো এই ভবন জুড়ে যেন রেস্টুরেন্ট ছাড়া আর কিছু নেই। তবে ধানমন্ডির কমার্শিয়াল ভবন টিতে রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি রয়েছে পার্লার, একটি ব্র্যান্ডের শোরুম, ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ইত্যাদি। তবে রেস্টুরেন্টের সংখ্যাই সর্বাধিক।
২০১৩ সালে নির্মিত হয় র্যাংগস কেবি স্কয়ার ভবনটি, যার উচ্চতা ৬০ মিটার। উঁচু এই ভবনটি র্যাংগস প্রপার্টিজ এর একটি প্রজেক্ট, যা শুরু থেকেই পুরোপুরি কমার্শিয়াল কাজের জন্যই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। লাল ইট এবং গ্লাসের স্ট্রাকচারে ডিজাইন করা সুউচ্চ এই ভবনটি নির্মাণে লোকেশনটা পারফেক্টই বলা যায়। কাকলি স্কুল, স্কলাস্টিকা, নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, ইউল্যাব এর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশপাশে থাকার কারণে এই রেস্টুরেন্টের ভবনে প্রতিনিয়তই মানুষের আনাগোনা থাকে। রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা। টেক আউট, ম্যাডশেফ, গুহা, ফ্লেভার্স, রায়া বাফেট এবং অল্টিটিউড এর মতো নামীদামী রেস্টুরেন্টস আছে র্যাংগস কেবি স্কয়ার এর এই ভবনে।
মাইডাস ভবন
ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কে রাপা প্লাজা মার্কেট থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স অ্যান্ড সার্ভিসেস বা মাইডাস এর ১৪ তলা বিশিষ্ট এই ভবনটি। যা কিনা মাইডাস সেন্টার বা মাইডাস টাওয়ার ভবন হিসেবে পরিচিত। সুউচ্চ এই ভবনটিতে রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান মাইডাস এর বেশ কয়েকটি অফিস। যার মধ্যে মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এর অফিসটি ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় অবস্থিত। আর, মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড এর অফিস রয়েছে ১০ এবং ১১ তলায়। এছাড়া ট্রেনিং, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি আয়োজনের জন্য এখানে রয়েছে মাইডাস কনভেনশন সেন্টার।
মাইডাস সেন্টারটি নকশা করেছেন বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য স্থপতি বশিরুল হক। উঁচু এই ভবনের সামনের দিকের পুরো অংশটি গ্লাসে ঢাকা। আর মেইন গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই হাতের ডানপাশে রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা এবং বামপাশে দ্যা স্টাবর্ন গট নামে একটি রেস্টুরেন্ট। এছাড়া এই ভবনের ৯ তলায় রয়েছে ইএমকে সেন্টার এর একটি শাখা। এর সাথে যমুনা ব্যাংক এর লালমাটিয়া শাখা সহ আর বেশ কয়েকটি অফিসও রয়েছে মাইডাস সেন্টারে।
সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্স
মিরপুর রোড থেকে ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই হাতের বাম পাশে চোখে পড়বে বিশাল একটি গেট। বিশাল এই এরিয়ার ভেতরেই অবস্থিত ধানমন্ডির কমার্শিয়াল ভবন গুলোর একটি সীমান্ত সম্ভার মার্কেট। বাংলাদেশ রাইফেলস সদর দপ্তরের ৪ নম্বর গেইট সংলগ্ন এরিয়াতে অবস্থিত এই মার্কেটটি ধানমন্ডির জনপ্রিয় মার্কেট গুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশাল স্থান জুড়ে নির্মিত এই মার্কেটটি একটি অত্যাধুনিক শপিং সেন্টার, যা ধানমন্ডি এলাকার অভিজাত শপিং সেন্টারের মধ্যে একটি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই মার্কেটে রয়েছে নামীদামী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকান, দেশীয় বুটিক শপ, জুয়েলারি, ইলেক্ট্রনিক্স এবং সার্ভিসিং এর বেশ কয়েকটি দোকান। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হচ্ছে এই ভবনের ১০ তলায় রয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স এর ৩টি হল। এছাড়া এই ভবনের ছাদেই রয়েছে ফুড কোর্ট। আরও আছে সীমান্ত সম্ভার কনভেনশন হল।
গ্রিন রওশনারা টাওয়ার
ধানমন্ডির কমার্শিয়াল ভবন গুলোর মধ্যে আরেকটি পরিচিত ভবন হল আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন এর চমৎকার এই প্রজেক্ট গ্রিন রওশনারা টাওয়ার। এই ভবনেই আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন এর কর্পোরেট অফিসটি অবস্থিত। যদিও বেশিরভাগ মানুষের কাছে এই বিল্ডিংটি জাপানিজ ব্র্যান্ড মিনিসো বা বিএফসি বিল্ডিং হিসেবে পরিচিত। ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে প্রধান সড়কের উপরেই ১৩ তলা বিশিষ্ট এই ভবনটি অবস্থিত।
কমার্শিয়াল এই ভবনটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ভবনের ৩য় তলায় রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক এর শাখা। এছাড়া এক্সিম ব্যাংক, শেপ আপ জিম, প্যারাগন কনভেনশন সেন্টার, বিএফসি, মিনিসো বাংলাদেশ, মিঠাইওয়ালা সহ আর বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে এই ভবনের বিভিন্ন তলায়। আর এসব কিছুর পাশাপাশি আইইএলটিএস এর কম্পিউটার ডেলিভার্ড টেস্ট পরিচালনার জন্য আইডিপি বাংলাদেশের একটি অফিসও আছে গ্রিন রওশনারা টাওয়ার এর ৭ম তলায়।
বিভিন্ন ধরনের কমার্শিয়াল অফিস, রেস্টুরেন্ট এবং শপিংমল থাকার কারণে ধানমন্ডির কমার্শিয়াল ভবন গুলোতে তাই প্রতিনিয়ত মানুষের আসা-যাওয়া হয়েই থাকে। আর তাই তো অনেক সময় কমার্শিয়াল এই ভবনগুলোর নাম শুনেই আমরা বলে দিতে পারি ধানমন্ডির কোন সড়কের কথা বলা হচ্ছে।
উপরে উল্লেখিত কমার্শিয়াল ভবন গুলো ছাড়াও ধানমন্ডিতে আরও চমৎকার সব কমার্শিয়াল ভবন রয়েছে। আর তাই বিপ্রপার্টির মাধ্যমে চাহিদামতো পছন্দের লোকেশনে আপনিও চাইলে ধানমন্ডিতে অফিস ভাড়া নিতে পারেন খুব সহজে!
কমপ্লিট প্রপার্টি সল্যুশন খুঁজছেন? এখনই ডাউনলোড করুন বিপ্রপার্টি অ্যাপ ।
অ্যান্ড্রয়েড এর ক্ষেত্রে: www.tinyurl.com/bpropertyapp
আইওএস এর ক্ষেত্রে: www.tinyurl.com/57kj4dnw