Reading Time: 4 minutes

রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন? সেক্ষেত্রে শুরুতেই আপনাকে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের মার্কেট ট্রেন্ড সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। জানতে হবে এই সেক্টরে নিত্যনতুন কী চলছে, নতুন কোন পরিবর্তন এসেছে কিনা, কিংবা প্রপার্টিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কোন এলাকাটি হবে সেরা ইত্যাদি বিষয় সমূহ পর্যালোচনা করা। এক্ষেত্রে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার সম্ভাব্য এলাকা সমূহ এর একটি তালিকা তৈরিতে বিপ্রপার্টি আপনাকে পূর্ণ সহায়তা করতে প্রস্তুত।

কেননা, এলাকা এবং আয়তন ভেদে প্রপার্টির মূল্য তারতম্য সম্পর্কে গবেষণা করার ক্ষেত্রে বিপ্রপার্টির ওয়েবসাইটে আপনি পাচ্ছেন প্রপার্টির অসংখ্য তালিকা। যেখান থেকে ধারণা নিয়ে আপনিও প্রপার্টিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন খুব সহজে এবং দ্রুত সময়ে।

তবে চলুন আজকের ব্লগ থেকে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার সম্ভাব্য এলাকা সমূহ এর কয়েকটি সম্পর্কে ধারণা নেয়া যাক।  

দক্ষিণখান

দক্ষিণখান
উত্তরার খুব কাছেই অবস্থিত দক্ষিণখান এলাকাতে ফ্ল্যাট কেনার চাহিদা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ

সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ সাথে বাজেটের মধ্যে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার কথা বিবেচনা করলে বর্তমান সময়ে তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণখান এলাকাটি। বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার সম্ভাব্য এলাকা হিসেবে অনেকেই বেছে নেন দক্ষিণখানকে। এক্ষেত্রে সেরা বাজেটে পছন্দমতো আয়তনের ফ্ল্যাট কিনতে বিপ্রপার্টির ওয়েবসাইটে আপনি পাচ্ছেন প্রপার্টির অসংখ্য তালিকা। বিপ্রপার্টির ডাটাবেজে থাকা তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণখানে ২ বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট এর জন্য প্রতি বর্গফুট বাবদ খরচ পড়বে মাত্র ৪,৫৫১ টাকা, যা উত্তরার ২ বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট এর তুলনায় অনেক কমই বলা যায়। যদিও দক্ষিণখান এলাকাটি উত্তরার ঠিক উল্টো পাশেই অবস্থিত, তবুও প্রপার্টির প্রতি বর্গফুট মূল্যের তারতম্য উল্লেখ করার মতো। 

এমনকি দক্ষিণখানে আপনি প্রতি বর্গফুট বাবদ সর্বনিম্ন ৩,১৪৩ টাকা খরচ করেও পছন্দমতো অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে পারবেন। এ এলাকায় বসবাসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এখান থেকে উত্তরা, বসুন্ধরা আর/এ, এবং পূর্বাচলে খুব সহজে যাতায়াত করা সম্ভব। অন্যদিকে পূর্বাচল এলাকায় ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের ফলে দক্ষিণখানের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও দিনকে দিন আরও উন্নত হচ্ছে। আর তাই এ সকল বিষয় বিবেচনা করে বলতেই হয় প্রপার্টিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য সেরা মূল্যে ফ্ল্যাট কেনার তালিকায় দক্ষিণখান এলাকাটি রয়েছে শীর্ষে।               

আফতাবনগর 

আফতাবনগর
ঢাকার অন্যতম ছিমছাম এবং নিরিবিলি এলাকা আফতাবনগর

বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য বিগত কয়েক বছর ধরে আফতাবনগর এলাকাটি রয়েছে পছন্দের তালিকায়। দক্ষিণখানের পরে অন্য কোন এরিয়ার কথা যদি উল্লেখ করতে হয়, তবে সেটি হবে আফতাবনগর। ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন এবং প্রপার্টি কেনার চাহিদা দিনকে দিন বেড়ে চলা, এই দুইটি বিষয় মূলত আফতাবনগর এলাকাটিকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঢাকার অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন এলাকায় তালিকায় ধরে রেখেছে। বনশ্রীর পাশেই অবস্থিত এই এলাকাটিতে বর্তমানে উন্নয়নমূলক সকল কাজ চলছে বেশ জোরেশোরে। তবে ভবিষ্যতে এলাকাটি দেখতে কেমন হবে, এবং নাগরিক জীবনের কোন কোন সুযোগ-সুবিধা সেখানে বিদ্যমান থাকবে, তা বুঝতে এক নজরে দেখে নিতে পারেন বনশ্রী এলাকাটিকে।           

নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে কিছুটা খোলামেলা লোকেশনে যারা বসবাস করতে চান, তারা আফতাবনগর এলাকাটিকে রাখতে পারেন পছন্দের তালিকায়। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ফ্ল্যাট কেনার অন্যতম পছন্দের এলাকা হিসেবে ইতিমধ্যেই আফতাবনগরের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। বিপ্রপার্টির ডাটাবেজ অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ঢাকার অন্যান্য জনপ্রিয় এলাকা যেমন কলাবাগান, রামপুরা, মগবাজার, এবং বাসাবোর মতো আফতাবনগরে প্রপার্টি কেনার চাহিদা ছিল লক্ষ্য করার মতো। ফলাফলে গত ২ বছরে প্রপার্টির মূল্যও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।  

উদাহরণ হিসেবে বলতে হয়,  আফতাবনগরে ২০২০ সালে প্রতি বর্গফুট প্রপার্টির গড় মূল্য ছিল ৬,০১৩ টাকা, যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬,৪৮০ টাকায়। এমনকি প্রতি বর্গফুট জমির গড় মূল্যও গত ২ বছরে প্রায় ২৫.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে।  

বসিলা 

বসিলা
বসিলায় অ্যাপার্টমেন্ট কেনার পাশাপাশি অনেকে জমি কেনার ব্যাপারেও আগ্রহী হচ্ছেন

প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার সম্ভাব্য এলাকার মধ্যে বসিলা ইতিমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই এলাকাটি পূর্বের চেয়ে বর্তমান সময়ে বেশ উন্নত হয়েছে। নতুন নতুন রাস্তাঘাট, ব্রিজ যাতায়াত ব্যবস্থাকে যেমন সহজ করে দিচ্ছে, তেমনি মোহাম্মদপুরের খুব কাছে হওয়ায়, সেখানকার সকল সুযোগ-সুবিধাই এখন আগের চেয়ে অনেক সহজে পাচ্ছেন বসিলায় বসবাসকারী মানুষজন।  

ফলে বসবাসের জন্য আধুনিক ব্যবস্থা সম্পন্ন অ্যাপার্টমেন্ট যেমন গড়ে উঠছে, তেমনি অনেকেই আবার জমি কেনার ব্যাপারেও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। যদিও তড়িৎ গতিতে উন্নয়নমূলক অনেক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এই এলাকাটিতে, তবে এর সাথে পাল্লা দিয়ে প্রপার্টির মূল্যও কিন্তু এখনও আকাশচুম্বী রূপ নেয়নি। আর এটিই বসিলায় যারা প্রপার্টিতে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী তাদের জন্য অন্যতম সুখবরই বলা যায়। বিপ্রপার্টির ডাটাবেজে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে প্রতি বর্গফুট জমির গড় মূল্য ছিল ১,৭৩৬ টাকা, অন্যদিকে প্রতি বর্গফুট অ্যাপার্টমেন্ট এর গড় মূল্য ছিল ৪,১৬৭ টাকা। 

দক্ষিণ বনশ্রী 

প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার অন্যান্য এলাকার মতো দক্ষিণ বনশ্রী এলাকাটি অন্যতম। ভাড়া এবং সুযোগ-সুবিধার সামঞ্জস্যে ঢাকার সেরা এলাকা সমূহের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকাটি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শপিংমল ইত্যাদি সব কিছুই আছে পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এ এলাকাটিতে। এ এলাকার ব্লক জি, এইচ এবং আই -তে এখনও বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালিত হচ্ছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় অদূর ভবিষ্যতে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার অন্যতম সম্ভাব্য এলাকা হিসেবে দক্ষিণ বনশ্রী জায়গা করে নিয়েছে তালিকার মধ্যে।  

দক্ষিণ বনশ্রীর মতো একই ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ চলছে আফতাবনগরেও। ফলে অতীতের তুলনায় বর্তমানে অ্যাপার্টমেন্ট এর প্রতি বর্গফুট মূল্য প্রায় ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাই বলতেই হয়, প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য দক্ষিণ বনশ্রী এলাকাটি বেশ আকর্ষণীয় একটি অপশন।     

সরকারের নেয়া বিশেষ উদ্যোগ অনুযায়ী, শিল্পায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। আর এর ফলে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের মতো রিয়েল এস্টেট সেক্টরেও এর প্রভাব পড়বে নিঃসন্দেহে। 

বিপ্রপার্টির ডাটাবেজ অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে ঢাকায় অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ২.১% বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনকি ২০২০ সালের সাথে তুলনা করলে কিছু এলাকার অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে স্বাভাবিকভাবে বলাই যায় যে, প্রপার্টির দামের এই ঊর্ধ্বমুখীতা দিনকে দিন আরও বৃদ্ধি পাবে। আর তাই আপনি যদি প্রপার্টিতে বিনিয়োগের জন্য ঢাকার সম্ভাব্য এলাকা সমূহ এর সন্ধানে থাকেন, তবে উল্লেখিত এলাকাগুলো থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দমতো যেকোনোটিকে।  

Write A Comment

Author