ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজি বসন্ত কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের এই অমরপঙক্তিটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফাল্গুনের আগমন হতে যাচ্ছে, তখন ফুল ফুটুক আর না ফুটুক ঘরে ফাল্গুনের ছোঁয়া আনতে হয়। ফাল্গুনে কোন শাড়ি আর পাঞ্জাবী পড়বেন তা নিশ্চয়ই ঠিক করে ফেলেছেন? তাইনা ঘরের জন্য তাহলে কি করছেন? ফাল্গুনে কিন্তু এবার ভালোবাসা দিবসও যুক্ত হয়েছে, সুতরাং আনন্দ এবং উৎসব উদযাপনের সুযোগ এবার দ্বিগুণ! এমন দ্বিগুণ আনন্দে মেহমানদের আগমন হবে বেশ। সুতরাং বেশি কিছু নয় ছোট কিন্তু বিশেষ কিছু উপায়ে ফাল্গুনে ঘরের সাজ হয়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয়। কিভাবে পড়তে থাকুন জেনে যাবেন!
“ফুলে ফুলে ভরে উঠুক ঘর কিংবা আপনার মন”
বসন্তের সব ফুল নিশ্চয়ই ফাল্গুনের প্রথম দিনেই ফুটবে না! কিন্তু আপনার কোন ফুল টা প্রিয় এবং কবে নাগাদ ফুটবে সেটা জেনে নেওয়া যায় তাইনা? বসন্তে ফোটে যে ফুলগুলো সেগুলো সম্বন্ধে জানতে কিন্তু ভালোই লাগে। কত রকম বাহারি ফুল যে ফোটে এই সময়ে। তবে গাঁদা ফুলটা কিন্তু সবসময়ই ঢাকার ফুলের দোকানগুলোতে সবসময় থাকে। ফাল্গুনে এক গাদা গাঁদা ফুল কিন্তু ঘরের ভেতর ফাল্গুনী আমেজ তৈরি করতে পারে চমৎকারভাবে। আপনি চাইলেই শাহবাগ থেকে গাঁদা ফুল নিয়ে আসতে পারেন। কাচা ফুলের সুবাস আর ঘরের সাজে সৌন্দর্য বাড়ানো দুটোই কিন্তু এক সাথে হয়ে যায়। ঘরে ঢুকতেই যদি পর্দার মত গাঁদা ফুল দিয়ে রাখেন দরজায় দেখতে ভীষণ সুন্দর দেখাবে। ফুলেই ঘর ছেয়ে যাবে। এছাড়াও যদি ঘরের ভেতর গাঁদা ফুলের টব রাখেন এতেও কিন্তু, ঘরের ভেতর ফাল্গুন থেকে যাবে। ফাল্গুনে ঘরের সাজ এ ফুলের যেন কোন জুরি নেই।
“ফাল্গুনী রঙের কিছু না কিছু রাখুন”
ঘরের ভেতর কিছু না কিছু ফাল্গুনী রঙের রাখুন। হতে পারে তা কুশন কাভার কিংবা রাগস। ঘরের পর্দাও বদলে ফেলতে পারেন। ঘরের জন্য পর্দা বাছাই করা এখন আর কঠিন কিছু না! হলুদ রঙ বেশ উজ্জ্বল ধরণের তাই সব ঘরে এই রঙের ব্যবহার হয়তো এতটা ভালো দেখাবে না। তাই ঘরের কিছু কিছু অংশ বরং হলুদ রঙের রাখুন। হলুদ রঙ এর সাথে অন্য কোন রঙও রাখতে পারেন। যেমন, কমলা বা সবুজ। বসার ঘরের একটি দেয়াল হলুদ বা কমলা রঙের যেকোন শেডের রাঙিয়ে তোলা যায়। এর ওপর যেকোন নকশা আরও ফুটে উঠবে। শোবার ঘরের চাদর বদলে ফেলতে পারেন! বাঙালি আমেজ আনতে তৈজসপত্রেও নানা রঙ ব্যবহার করতে পারেন। এখন শুধু সাদা বা কালো রঙের তৈজসপত্রই পাওয়াই কেবল যায় না। রঙ বেরঙের তৈজসপত্রও বাজারে পাওয়া যায়। সেগুলো যোগাড় করতে পারেন। ফাল্গুনের একটি দিনে নতুনত্ব আসবেই।
“আলপনা আঁকুন”
ফাল্গুনে ঘরের সাজ এ আরও নতুনত্ব আনতে, বাহারি নকশার আলপনা আঁকুন। আগের একটা সময় ছিল যখন শুধু বৈশাখ, বিয়ে বা যেকোন অনুষ্ঠানে মনের মাধুরী দিয়ে আঁকা হতো আলপনা। বাসার সকলে মিলে আলপনা আঁকার মত আনন্দ তারাই জানে যারা কিনা আলপনা কখনো এঁকেছেন। কেন না সেই সময়টাকে আবার ফিরিয়ে আনা হোক, ঘরের ভেতর মনের মত করে আলপনা এঁকে নিন। কিংবা আপনার বারান্দায় এঁকে দিলেন কোন বসন্তের ফুলের নকশা। দেখতে কিন্তু, বেশ সুন্দর হয় তবে। রঙ আপনার পছন্দ মত যেকোনটা বাছাই করে নিলেই হয়ে যাবে।
“পরিশেষে নিজেদের সুন্দর করে ফাল্গুনী সাজে সাজিয়ে নিন”
ফাল্গুনের প্রথম দিনকে বরণ করে নিতে, আপনার নিজেরও কিছু প্রস্তুতি তো প্রয়োজন। ঘরের নারীরা পরতে পারেন, ফাল্গুনী রঙের যেকোন শাড়ি এবং পুরুষরাও ঠিক একই রকম সাজ নিতে পারেন। হলুদ বা সবুজ রঙা যেকোন রঙের পাঞ্জাবী পরতে পারেন। ছোট বড় সকলে এক সাথে সাজ পোশাক পরে দিনের একটা সময় কোথাও খেতে যান কিংবা ঘুরতে যান। দেখবেন দিনের এই সময়টা আপনার কাছে এমনিই স্মরণীয় হয়ে আছে। ফাল্গুনের রঙগুলো এমনিতেই বেশ উজ্জ্বল তাই ঘর আলোকিত করে রাখে। এমন উৎসবে পরিবারের সকলে মিলে ফাল্গুনের রঙে মিশে গেলে উৎসবের আনন্দ আরও দিগুণ হয়ে যায়। নিজের পরিবারের সাথে যত সম্ভব সময় কাটানো উচিত। শুধু উৎসব নয় সবসময়। দিনশেষে নিজের পরিবার ছাড়া কে বা আছে একদম নিজের বলে।
এছাড়াও হলুদ রঙ ব্যবহার করে ঘর সাজানো এখন অনেকটা ট্রেন্ডিং বা হাল ফ্যাশনও বলা চলে। এমন অনেক ঘর এবং ডেকরেটিং স্টাইল খুঁজে পাওয়া যাবে, যেখানে হলুদ রঙের ব্যবহার রয়েছে খুব চমৎকারভাবে। রেট্রো কিংবা মডার্ন ফার্নিচার, হলুদ দেয়াল, সুন্দর ওয়ালপেপার যেখানে হলুদ প্যাটার্ন বা ফ্লোরাল নকশা এই সবকিছুই বেশ দারুণভাবে আপনার ঘরকে ফুটিয়ে তুলবে।
আপনার ছোট নীড়ে ঘর কেমন সাজালেন আমাদের জানাতে কিন্তু ভুলবেন না! কমেন্টের অপেক্ষায় রইলাম।