Reading Time: 3 minutes

ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে যার যার প্রাপ্ত স্বত্ব বুঝে নেয়ার জন্য যে দলিল করা হয় সেটি হচ্ছে বণ্টননামা দলিল। এক্ষেত্রে প্রপার্টির শরিক ২ ভাবেই হতে পারে। উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই ইনহেরিটেন্স এবং ক্রয় সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই পারচেজ। সকল শরিকদের উপস্থিতি ও স্বাক্ষরের মাধ্যমে বন্টননামা দলিল করতে হয়। যদি শরিকরা আপোষে সম্পত্তি বণ্টনে রাজী না হন, সেক্ষেত্রে আদালতে মামলার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। ওয়ারিশি জমি বিক্রি করতে এবং ওয়ারিশি সম্পত্তির নামজারি করতেও এই বন্টন দলিল অত্যন্ত জরুরি। এবং অন্যান্য দলিলের মত বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ সহ আরও বেশ কিছু খরচ রয়েছে সেগুলো সম্বন্ধে জানাতে আজকের এই ব্লগ লেখা! 

এই দলিলের আর কোথায় দরকার

অংশীদারগণের মধ্যে ওয়ারিশি সম্পত্তি বন্টনের একটি লিখিত প্রমাণ হিসাবে বাটোয়ারা দলিল কাজে লাগে । বাটোয়ারা দলিল বন্টনের একটি লিখিত প্রমাণ হিসাবে থাকে এতে করে ভবিষ্যতে যে কোন অংশীদার পূর্বের বন্টন মানতে বাধ্য থাকে। ওয়ারিশি সম্পত্তির নামজারি করতে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয় ওয়ারিশি জমি বিক্রি করতে গেলে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়। ভূমি জরিপকালীন সময়ে ওয়ারিশি সম্পত্তিতে রেকর্ড করাতে ও ওয়ারিশি জমির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন করাতে গেলে এই দলিলের প্রয়োজন পরে। অংশীদারগণের মধ্যে ভবিষ্যতে মামলা মোকদ্দমা হওয়া থেকে বাঁচাতে এই দলিলটি বেশ চমৎকারভাবে কাজ করে থাকে। 

বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ

বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল
বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ

বিভিন্ন রকমের দলিলের মত বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচে  কিছু পরিবর্তন থাকতে পারে। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনূর্ধ্ব ৩ লক্ষ টাকা হলে ৫০০ টাকা হবে। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনূর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা হলে ৭০০ টাকা হবে। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য অনূর্ধ্ব ৩০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা হলে ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা হবে। বন্টনকৃত সম্পত্তির দলিলে লিখিত (বৃহত্তম এক পক্ষের অংশের মূল্য বাদ দিয়ে) মোট মূল্য ৫০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে হলে ২০০০ টাকা হবে। 

যেহেতু রেজিস্ট্রি খরচ নির্ধারিত তাই আপনাকে স্ট্যাম্প শুল্ক ৫০ টাকা দিতে হবে। এখানে মূলধন লাভের শুল্ক নেই তবে যদি কেউ তাদের অংশ বিক্রি করে সেখান থেকে কোনও লাভ অর্জন করতে চায় তবে তারা লাভ আদায় করতে পারবে। 

প্রতিটি ডকুমেন্টের জন্য অতিরিক্ত ফি সমূহ

১। একটি স্ট্যাম্পের হলফনামায় খরচ হবে ২০০ টাকা

২। ১০০ টাকা এ-ফি হিসেবে প্রযোজ্য হবে

৩। এন- ফি

  • বাংলা ভাষায়, প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
  • ইংরেজি ভাষায়, প্রতি ৩০০ (তিন শত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।

৪। এনএন ফি  (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক) 

  • বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
  • ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।

৫। সম্পত্তি হস্তান্তর নোটিশের আবেদনপত্রের জন্য ১০ টাকা মূল্যের কোর্ট ফি।

যে ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করা হবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ লাগবে এবং মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণের প্রমাণ হিসাবে ওয়ারিশ সনদ লাগবে। মৃত ব্যক্তির যে সম্পত্তি বন্টন হবে উক্ত সম্পত্তির দলিল লাগবে। মৃত ব্যক্তির যে সকল ওয়ারিশ সম্পত্তির মালিক হবে সকল ওয়ারিশের সম্মতি থাকতে হবে। 

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলটি সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতি এবং স্বাক্ষরের মাধ্যমে নথিভুক্ত করতে হবে। আর কেউ যদি এই দলিলটি করতে রাজি না হয় তবে আদালত থেকে মামলার মাধ্যমে এই বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ নিয়ে আপনাদের কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করুন। 

Write A Comment