ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা অবকাঠামোগত উন্নয়নকে অর্থনীতির উন্নয়নের মূল সূচক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে এই অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিস্তৃতি বিশাল। রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, পরিবহন সেক্টরের সমস্যা সবই এই বিভাগের অধীন। রিয়েল এস্টেট বা হাউজিং শিল্পও এই অবকাঠামোগত শিল্পগুলির মধ্যে একটি। নানা চরাই-উৎরাই পারি দিয়ে বছরের পর বছর ধরে এই সেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। সব শিল্প থেকেই এই গ্রোথ প্রত্যাশিত হলেও অনেক শিল্পই আশানুরুপ ফল পায় না। কিন্তু পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেব অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট সেক্টর ২০১৩ অর্থবছরে প্রায় ৪% সেক্টরিয়াল জিডিপি বৃদ্ধির হার ধরে রেখেছিল যা কোন একক সেক্টর হিসেবে সত্যিই প্রশংসনীয়। এককথায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে আবাসন খাতের দ্বারা।
এই শিল্পের চালিকাশক্তি কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এর ভেতর উল্লেখযোগ্য হল সম্পত্তির মূল্য, সুদের হার, সম্পত্তির চাহিদা, নগরায়ণ ইত্যাদি। আবারও এই শিল্পটি সিমেন্ট, ইস্পাত, টাইলস, স্যানিটারি, গ্লাস এবং অন্যান্য বিল্ডিং উপকরণ শিল্পের উন্নয়নেও উন্নয়নের সাথেও জড়িত। আবাসন শিল্পের উন্নয়ন ঘটলে এই পণ্যগুলির চাহিদাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই রিয়েল এস্টেট সেক্টরের উন্নয়ন অন্যদের উন্নয়নের পরোক্ষ প্রভাবক হিসেবেও কাজ করে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং এতে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের অবদান
রিয়েল এস্টেট সেক্টর গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই সময় আমরা দ্রুত নগরায়ন এবং অস্বাভাবিক জনসংখ্যার বৃদ্ধি হার লক্ষ্য করেছি। ফলস্বরূপ, আবাসন খাতের চাহিদাও বেড়েছে অতি দ্রুত। রিহ্যাবের হিসাব মতে ২০১৪ সালে এই সেক্টর জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২% যা আগের বছরেও ছিল ৭.০৪%। উপরন্তু, রিহ্যাবের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় যে ২০১৬ সালে, অবিক্রিত ফ্ল্যাটের সংখ্যা ৩৫ হাজার থেকে কমে প্রায় ২৭,১০০ তে নেমে এসেছে। এর অর্থ হল এই সময়ের মধ্যে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা এবং ফ্ল্যাটের চাহিদা উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ যেহেতু তার নিজের অর্থ বা সম্পদ কোন একটি সেক্টরে বিনিয়োগ করছে, এটি অর্থনীতির চাকা বেগবান করতে সহায়ক। একই সাথে এটি আমাদের দেশের জিডিপিতে বড় অবদান রাখছে।
বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের ভবিষ্যৎ
জাতিসংঘের করা জরিপ অনুসারে দেশের ৪০ শতাংশ এলাকা ২০২০ সালের মধ্যেই নগরায়নের আওতায় চলে আসবে। আর অধিক নগরায়নের অর্থই হল আবাসনের চাহিদা বৃদ্ধি। তাই রিয়েল এস্টেটের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকবে। এছাড়া সামাজিকভাবেও আমাদের দেশ ভিন্ন ধরণের একটি সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বৃহৎ যৌথ পরিবার ভেঙ্গে ছোট ছোট একক পরিবারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তাই ফ্ল্যাট এবং অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
এছাড়া দেশে বাড়ছে মধ্যবিত্ত মানুষের সংখ্যা এবং তাদের ক্রয়ক্ষমতা। আর এমন মানুষ প্রতিনিয়ত খোঁজ করছে একটি মাথা গোঁজার ঠাই। সব দিক ভেবেই বলা যায় এদেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের কারণ
এমন সম্ভাবনায়ময় কোন মার্কেটকে ইংরেজিতে বলা হয় “ইমার্জিং মার্কেট”। আর ইয়াম্ররজিং মার্কেট সবসময়ই বিনিয়োগকারীদেরলে আকৃষ্ট করে। বিশিষ্ট এবং অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা এমন কোন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করে যেখানে ঝুকির এবং লাভের পরিমাণ তুলনামূলক কম কিন্তু সেখানে একটি নিয়মিত ক্যাশ ফ্লো থাকে। অর্থ্যাৎ বিনিয়োগে হয়ত আপনার লাভের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেশি হবে না কিন্তু আপনার বড় ক্ষতি বা টাকা আটকে যাবার ঝুকিও তেমন থাকবে না। বিনিয়োগের সময় কিছু কিছু ফ্যাক্টর এমন সিধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে। আর রিয়েল এস্টেট সেক্টর হতে পারে এমন বিনিয়োগের একটি ভাল উদাহরণ যা বিনিয়োগকারীদের দেশ এবং দেশের বাইরে থেকেও আকর্ষণ করে।
তাই সিদ্ধান্ত নিন বিনিয়োগের জন্য এখনই সঠিক সময় কি না। আর একবার বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে, বিপ্রপার্টি নিশ্চিত করতে পারে যে রিয়েল এস্টেটে আপনার বিনিয়োগ নিরাপদেই আছে। আমাদের প্রপার্টি ডাটাবেস থেকে দেশব্যাপী শত শত প্রপার্টি ব্রাউজ করুন এবং ঠিক করুন আপনার জন্য পার্ফেক্ট প্রপার্টিটি। কারণ, বিপ্রপার্টির সাহায্যে করা আপনার যেকোন বিনিয়োগ সবসময় নিরাপদ।