Reading Time: 3 minutes

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইংরেজিতে স্পেশাল ইকোনোমিক জোন বা এস-ই-জেড) হল কোন দেশের বিশেষ কিছু এলাকা যেখানে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য সারা দেশের তুলনায় ভিন্নধরণের আইন বলবৎ থাকে। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন কিংবা ইপিজেড-এর নাম আমরা কমবেশি প্রায় সবাই শুনেছি। সকল ইপিজেড-ই একেকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। বৈদেশিক বিনিয়োগের সাথে সাথে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং নতুন নতুন সভাবনাময় অর্থনৈতিক দিক খুঁজে বের করে কাজে লাগানোই এসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের লক্ষ্য। এতে যেমন নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়, একই সাথে দক্ষ ও কার্যকরী প্রশাসনিক ব্যবস্থাও গড়ে উঠে। বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি বেজা-এর তথ্যমতে দেশে মোত অর্থনৈতিক অঞ্চল ৮৮টি। যার মাঝে ৫৯টি সরকারি এবং ২৯টি বেসরকারি মালিকানাধীন। এই বিশেষ অর্থনোইতিক জোনগুলিও আবার বিভিন্নভাগে বিভক্ত। এরমধ্যে আছে  জি২জি কিংবা গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, পিপিপি কিংবা প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ভ্রমণসংক্রান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং রিয়েল এস্টেট খাত

Stone collection

প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্যই রয়েছে বিশেষ ধরণের আইন এবং সুযোগসুবিধা। তবে সে সুযোগসুবিধা যেমনই হোক না কেন, সবগুলোই নিশ্চিতভাবেই রিয়েল এস্টেট খাত বান্ধব সুযোগসুবিধা উপস্থাপন করে। যে কোন স্পেশাল ইকোনোমিক জোনই চেষ্টা করে বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে। এসব বিদেশি বিনিয়োগকে বলে এফ.ডি.আই বা ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট। আর এসব বিনিয়োগের সিংহভাগের সাথেই কোন না কোনভাবে জড়িত থাকে বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট প্রকল্প। তাই রিয়েল এস্টেট খাতের বিনিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হতে পারে আদর্শ স্থান। আর শুধু বিদেশী বিনিয়োগই নয় বরং বিভিন্ন দেশী বিনিয়োগের জন্যও চমৎকার সুযোগ করে দিতে পারে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল।

রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য কেন বাংলাদেশের এস.ই.জি-গুলো অপার সম্ভাবনাময়?

Sajek Valley

বাংলাদেশ সরকার সবসময়ই দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকে উৎসাহিত করে বিনিয়োগের জন্য। উল্লিখিত এস.ই.জি-গুলোতে বিভিন্ন নীতিমালা শিথিলও করা হয়ে থাকে বিনিয়োগকারীদের জন্য। কী কারণে রিয়েলে এস্টেট খাটে বিনিয়গকারীদের জন্য এই উদ্যোগ সম্ভাবনাময়? চলুন দেখে নেয়া যাক

  • প্রতিটি এস.ই.জি-তে সরকার বিভিন্ন গ্রুপকে আলাদা আলাদা ব্যক্তিগত জোন বরাদ্দ দেয়। এসব জোনে তাঁদের প্রয়োজনমাফিক বিভিন্ন নির্মাণ এবং অন্যান্য উদ্যোগ নিতে পারে লিজ নেয়া প্রতিষ্ঠান। নিশ্চিতভাবেই এখানে আবাসন খাতের সম্ভাবনা রয়েছে সেজন্য।
  • এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের নিজস্ব অবকাঠামো এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধা রয়েছে যা অন্য কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। এছাড়াও উল্লেখ করা যেতে পারে B-O-T (Build, Operate and Transfer) (নির্মাণ, পরিচালনা এবং বদল) সুবিধার কথা। আছে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সাপোর্ট এবং সরকারি সুবিধাও।
  • এস.ই.জি প্রতিষ্ঠা করা হয় ব্যবসা বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করার উদেশ্যে। সারাদেশের মাঝে এখানেই সবচেয়ে বেশি বিদেশী বিনিয়োগ হয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠে এখানে, গড়ে উঠে কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থানের সাথে সাথে আসে মানুষের থাকার যায়গার বিষয়টি। আর থাকার জায়গা মানেই আবাসন খাতের জন্য সম্ভাবনা।
  • উপরের পয়েন্টের সুত্র ধরেই বলা যায়, ইকোনোমিক জোন মানেই হল, অধিক মানুষের আনাগোনা এবং তাঁদের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাওয়া। এখানকার চাকরির বাজারও হয়ে নতুন ধরণের এবং আকর্ষনীয়। অনেক মানুষ এখানে আসোতে শুরু করবে, থাকার যায়গার খোঁজ করবে। স্বভাবতই, আবাসন খাতে বিনিয়োগ এসব এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ।  
  • দেশের যেসব নাগরিক রেমিট্যান্স পাঠান তাঁদের জন্যও এস.ই.জি তে প্রপার্টির মার্কেটে বিনিয়োগ করা একটি সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে। 

বাংলাদেশের এস.ই.জেড -গুলোর বর্তমান অবস্থা

House with wooden logs beside a water body

দেশের এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা পাবেন শতকরা ৭০ভাগ ইকুইটেবল শেয়ার এবং বাকি ত্রিশভাগ থাকবে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। এই জোনসমূহের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেজা ইতোমধ্যেই আন্তঃরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) অনেক ভূমি বরাদ্দ সম্পন্ন করেছে। ১০০টি ইকোনমিক জোনের মধ্যে ৭৬টি ভাড়া দেয়া বা লিজ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৪ বছরের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাও হাতে আচেহ তাদের। বেশ কিছু রিপোর্ট অনুসারে বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহ বেশ আশা জাগানিয়া।
তাই, আমাদের মতে বিনিয়োগকারীদের জন্য এটিই উৎকৃষ্ট সময়ে রিয়েল এস্টেট খাটে বিনিয়োগ করার। এমন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা এস.ই.জি-র রিলেয় এস্টেট খাতে বিনিয়োগ সমপর্কে আপনার মতামত কী? কী কী সুবিধা কিংবা অসুনিধাই বা আছে দেশে? জানিয়ে দিন আমাদেরকে। 

Write A Comment