Reading Time: 3 minutes

সময়ের সাথে ঘরের সাজে যেমন আধুনিকতা এসেছে তেমনি আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও এসেছে বিলাসিতা আর আয়েসের ছোঁয়া। আমরা সারাটা দিন ছুটে বেড়াতে রাজি আছি কিন্তু দিনশেষে বাড়ি ফিরে একটু কম আরাম করতে রাজি নই। সারা দিন যতই ধকল থাকুক না কেন তা শাওয়ার করতেই শেষ হয়ে যায়। তাহলে সেই শান্তির শাওয়ার যেন একটু আরামদায়ক আর বিলাসবহুল করতে ক্ষতি কি?  ঘরের ভেতর ও বাইরের সাঁজে যেমন নানা রকমের পরিবর্তন স্পর্শ করেছে তেমনি, বাথরুমও আর আগের মত সাদাসিধে নেই। এসেছে বাহারি নকশা, ফিটিংস আর টাইলসের বাহার। দিনশেষের এই শাওয়ারটা একদম মনের মত হওয়া যেন বেশ জরুরী। শখ আর সৌখিনতা যখন আরাম আয়েসের ব্যাপার হয়ে দাড়ায় তখন আর তা শখ থাকে না হয়ে উঠে প্রয়োজন। আপনারা ঠিকই ভাবছেন। কথা হচ্ছে ‘বাথটাব’ নিয়ে। অনেকের কাছে এটা বিলাসিতা আবার অনেকের কাছে এটা প্রয়োজন। বাথরুমের জন্য বাথটাব কত রকমের আছে, কেমন সেগুলোর দাম এবং কোথায় পাওয়া যাবে এই সম্বন্ধে জানতে পড়তে থাকুন। তাহলে, শুরু করা যাক।

বাথটাব আসলে কী? খাটি বাংলায় বলতে গেলে ঘরের ভেতর কৃত্রিম এক ছোট পুকুর। সুইমিংপুল করার অপশন সবার নাগালে নাও থাকতে পারে। সেই জন্য ঘরের ভেতরে এই ব্যবস্থা।   

কী ধরণের বাথটাব আছে? 

বিড়াল আর বাথটাব
সময় নিয়ে কিনুন বাথটাব

সাধারণত বিত্তশালীদের বাড়িতেই বাহারি বাথটাবের দেখা মেলে, এখন এই কথাটা কিছুটা ভিত্তিহীন। কেননা, অনেক সময় মধ্যবিত্ত বাসায়ও বাথটাব দেখা যায়। যেখানে শুয়ে-বসে শাওয়ার নেওয়া হয়। এমনকি দাঁড়িয়ে শাওয়ার নেওয়ার মতো বাথটাবও দেখা যায়। সাধারণ বাথটাব, জ্যাকুজি, ওয়াক-ইন বাথটাব, সোকিং টাব, কর্নার বাথটাব এবং স্টুডিও বাথটাব ইত্যাদি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব বাথটাবে আপনি শুয়ে-বসে যেকোনো ভঙ্গিতে শাওয়ার নিতে পারবেন। দাঁড়িয়ে শাওয়ার নেয়ার জন্য ভালো ‘‘স্টুডিও বাথটাব’।  

শুধু পছন্দ করে বাথটাব কিনলেই হিসেব চুকে যাচ্ছে তা মোটেও না। বলতে গেলে কেনার পরই আসল কাজ। পারদর্শী একজন মিস্ত্রি আপনাকে খুঁজে নিতে হবে। নাহলে সকল পরিশ্রমই যেন বৃথা। যেদিকে বিশেষ নজর দিন। সাধারণত ফ্ল্যাটের মাস্টার বাথরুমগুলোতে বাথটাব ব্যবহার করা হয়। বাথরুমের সাইজের ওপর নির্ভর করে বাথটাবটি কোথায় রাখবেন। বাথরুম যদি চারকোণা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বাথরুমের এক পাশে বাথটাব রাখা ভালো।

কোথায় পাবো আর দাম কেমন? 

বাথটাব
বাজারে আছে নানা রকমের বাথটাব

গ্রিনরোড, পান্থপথ, হাতিরপুল, কলাবাগান, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, স্টেডিয়াম মার্কেট, গুলিস্তান, মৌচাক, মগবাজারসহ নানা হার্ডওয়্যার ও স্যানিটারির দোকানে খোঁজ করলেই পেয়ে যাবেন পছন্দের বাথরুমের জন্য বাথটাব। কেমন দাম পড়বে ভাবছেন? আকৃতি ও নকশাভেদে ৪,৫০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামের বাথটাব বাজারে পাওয়া যাবে। দেশ বিদেশ থেকে আনা এই বাথাটাবগুলো ৫ বছর থেকে শুরু করে ১০ বছরের ওয়ারেন্টি নিয়ে আসে। সুতরাং টেকসই নিঃসন্দেহে বলাই যায়।

কেমন রঙের বাথটাব বেঁছে নিবেন?

বাথটাব
হালকা রঙের বাথটাবগুলো সহজেই দেয়ালের সাথে মানিয়ে যায়

বাথরুমের দেয়ালের টাইলসের সাথে মিলিয়ে বাথটাব লাগাতে পারেন। তবে ভালো হয় সাদা কিংবা অফ হোয়াইট রঙের বাথটাব নিলে। কেননা, সবরকম দেয়ালের রঙের সাথে সহজেই এগুলো মিলে যায়। অনেকে বাথরুমের ভেতর পার্টিশন পছন্দ করেন, সেক্ষেত্রে গ্লাসের তৈরি পার্টিশন ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে গ্লাসের পাশাপাশি রয়েছে বাহারি শাওয়ার কার্টেন বা পর্দা। যদিও গ্লাসই বেশি জনপ্রিয় কেননা, সহজেই শুকিয়ে যায় এগুলো। অন্যদিকে পর্দা কিছুটা সময় নিয়ে থাকে।

বাথরুমের সাজসজ্জা কেমন হবে? 

বাথটাব
বাথরুম সাজিয়ে রাখুন

বাথরুমের জন্য বাথটাব শুধু কিনেই যদি থেমে যান তাতে কি চলবে? মোটেও না। একটু যদি সাজিয়ে না রাখেন তাহলে কিভাবে হয়। আপনি যখন বাথটাবে রিলাক্স হয়ে বসে আছেন, এমন সময়ে যদি বাথরুমের বাতি না জ্বালিয়ে সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখেন কেমন হয়? এটা কিন্তু এক রকমের মেডিটেশন বলা যায়। তাই বাথরুমে মোমবাতির ব্যবস্থা রাখুন। বাথরুম বড় দেখাতে দেয়ালজুড়ে আয়না রাখুন। এছাড়া গাছের ব্যবস্থাও রাখতে পারেন। বাথরুমের জিনিসপত্র রাখার জন্য দেয়ালে কেবিনেট তৈরি করুন। এতে করে বাথরুম যথেষ্ট খোলামেলা লাগবে। ফ্লোরে স্লিপ রেসিস্ট্যান্ট টাইলস ব্যবহার করা ভালো। আর হ্যাঁ, চাইলে ঝাড়বাতিও ব্যবহার করতে পারেন।   

ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়ে, নিরিবিলি একটা ওয়ার্ম বাথ আর সাথে মেলোডি মিউজিক কোন অংশেই যেন মেডিটেশনের থেকে কম নয়। বাথরুমের জন্য বাথটাব পারফেক্ট হলে এমন সময় কাটানো কোন বিষয়ই না। কেমন ছিল এই তথ্যগুলো? আপনার কাজে কি লেগেছে? বা কোন তথ্য বাদ পড়েনি তো? জানাতে আর দেরি না করে কমেন্ট করুন এখনই।

Write A Comment