Reading Time: 4 minutes

ওয়ালপেপারটা উপরে গেছে, মেঝেরও চল্টা উঠে যাচ্ছে আর কিচেনের সিংক থেকে অনবরত পানি লিক হচ্ছে। এমন একটি বাসায় আপনি কখনই দিনের পর দিন থাকতে পারবেন না। যে বাসাটিতে থেকে আসছেন বছরের পর বছর সেটির দিকে খেয়াল করেছেন কি? হয়তো বাসা সংস্কার এর সময় হয়ে গেছে। আরও দেরি করলে বাসার অবস্থায় আসতে পারে অবনতি।

যে বাসায় থাকছেন সেটি হতে পারে আপনার নিজের কিংবা ভাড়া। দুই ভাবেই এটির দেখভাল কিন্তু আপনারই দায়িত্ব। যদিও ভাড়া বাসা হলে বাড়ির মালিক নিজেই এসকল কাজ করে থাকেন। তবুও এই ধাপগুলো জানা থাকলে আপনি বাড়ির মালিককে সঠিক ভাবে গাইডও করতে পারবেন। এতে করে সময় বেঁচে যাবে এবং সঠিকভাবে বাসা সংস্কার এর কাজ শেষ হতে পারবে। আর যদি বাসার মালিক আপনি নিজেই হয়ে থাকেন, তবে তো এই ধাপগুলো জানা আপনার জন্য অত্যাবশকীয়। কোনটার পর কোন কাজটা করবেন তার যদি কোন পরিকল্পনাই না থাকে তবে আপনি সময় এবং টাকা দুটোই নষ্ট করবেন। সেজন্য সময় এবং টাকা দুটো বাঁচানোর জন্যই চলুন জেনে নেই যে ৬টি ধাপে বাসা সংস্কার করবেন।

তালিকা তৈরি করুন 

ডায়েরী
কাজ শুরু করবার আগে তালিকা তৈরি করে নিন

হুট করে বাসা সংস্কার কিংবা বাসার কাজ শুরু না করে, একটু সময় নিয়ে ভাবুন! আপনি কি করতে চাচ্ছেন? কেননা, সঠিক পরিকল্পনা ব্যতীত আপনি যত কিছুই ভাবুন না কেন তা আসলে কোন ফলাফল বয়ে আনবে না। বরং আপনার সময় এবং টাকা দুটোই নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই কাজ শুরু করার আগে ভালো মত সম্পূর্ণ বাসা ঘুরে দেখুন, যাচাই করে দেখুন কোথায় কোথায় সংস্কার দরকার, এরপর সকল সংস্কারের একটি তালিকা তৈরি করুন। আপনি চাইলে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তালিকা তৈরি করতে পারেন। এতে করে সিরিয়ালি কাজগুলো আপনি সেরে ফেলতে পারবেন। এতে করে কম সময়ে কাজ গুলো অনেকটা শেষ হয়ে আসবে।

সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করুন

কয়েন অনেক গুলো
মার্কেট যাচাই করেই বাজেট তৈরি করুন

তালিকা তৈরি করবার পর আপনি জেনে গেছেন আপনার কি কি কাজ সেরে ফেলতে হবে। এরপরই আসবে কঠিন যে কাজটি তাহলো বাজেট তৈরি করা। বাজেট পরিকল্পনা করা বেশ কঠিন হয়ে ওঠে যদি না আপনি এর আগে কখনো বাসা সংস্কার এর কাজ করিয়ে না থাকেন। তবে প্রথমে যা আপনি করতে পারেন সেটি হলো মার্কেটের একটি ধারণা করা যে কোনটার কি মূল্য! এতে করে আপনি জানতে পারবেন এই মূহুর্তে আপনি কি কিনতে পারছেন আর কোনটি সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত রাখছেন। আর্থিক সংকট থাকতেই পারে তাই বলে নিম্নমানের জিনিষ নিয়ে কখনই বাসা সংস্কার করবেন না। এতে করে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য কাজটি হয়ে যাবে কিন্তু তা বেশি দিন দীর্ঘস্থায়ী কখনই হবে, এটা কেবলই সময় ও টাকার অপচয়।

আদেশ গ্রহণ করুন

ল্যাপটপ এর ছবি
কর্তৃপক্ষ হতে অনুমতি গ্রহণ করুন

নিজের বাসায় থেকে থাকলেও যখন বড় কোন সংস্কারের কাজ হাতে নিবেন তখন আদেশ গ্রহণের প্রয়োজন পরে। সেক্ষেত্রে সঠিক কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি গ্রহণ করুন। নতুবা, হিতে বিপরীতও হতে পারে! আপনি না জেনে যেকোন আইন ভঙ্গ করেছেন অথবা, জরিমানা হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি যদি কনডোমিনিয়ামে থেকে থাকেন তবে অবশ্যই সেখানে সংস্কার করানোর আগে অনুমতি নিতে হবে কেননা, দেয়াল, সিলিং এবং ছাদ এসব কিছু সাধারণ প্রপার্টি। অনুমতি ছাড়া কাজে হাত না দেয়াই ভালো, প্রয়োজনে অপেক্ষা করুন। কাজ অর্ধেক করে বসে থাকার চেয়ে শ্রেয় কাজের আগে অনুমতি নেয়া।

সঠিক মাপ নিন

একটি হাত ও পেনসিলের ছবি
সঠিকভাবে মাপ নিন

বাসা সংস্কারের ক্ষেত্রে মাপের অনেক বড় ভূমিকা থাকে। প্রতিটি ইঞ্চির প্রভাব রয়েছে। তাই সতর্ক ভাবে মাপ নিতে হবে। যাতে করে মাপের কোন হেরফের না হয়! পরিমাপ গ্রহণ করে তা তালিকাভুক্ত করে ফেলুন এতে করে মাপ ভুলে যাবার ভয় থাকবে না। এমন হতেই পারে যে আপনি সঠিকভাবে মাপ নিতে পারছেন না সেক্ষেত্রে দক্ষ কারও সাহায্য নিন। আপনার মাপ যদি সঠিক না হয় তাহলে বাসা সংস্কার এ দেখা দিবে নানা জতিলতা।

ঠিকাদার নিয়োগ করুন 

মানুষ সাথে যন্ত্রপাতি
একজন অভিজ্ঞ ঠিকাদার নিয়োগ করুন

ঠিকাদার নিয়োগ করা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। হুটহাট কাউকে নিয়ে নেয়া যাবে না। ঠিকাদার এমন একজন ব্যক্তি যার হাতেই আপনার বাসা সংস্কার এর সকল কাজ নির্ভর করছে। তাই কাউকে ঠিক করবার পূর্বে, অবশ্যই তার সম্বন্ধে আশেপাশে খোঁজ নিন। এমন কেউ হলে তো বেশি ভালো যে আগেও আপনার পরিচিত কারও বাসা সংস্কার করেছে। এতে করে আপনি একটু স্বস্তি সহকারে কাজটি করিয়ে নিতে পারবেন। ঠিকাদার ছাড়া বাসা সংস্কার কখনই ভালো কোন ফলাফল বয়ে আনবে না। একজন অভিজ্ঞ ঠিকাদার নিয়োগ করলে আপনি নিশ্চিন্তে বাসা সংস্কার এর কাজ করে নিতে পারবেন। 

সরঞ্জামাদি ব্যবস্থা করুন

রড ও সিমেন্ট এর ছবি
সংস্কারের ক্ষেত্রে সরঞ্জামাদির ভুমিকা প্রধান

সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করুন। আপনি যদি নিজে সময় বের করতে না পারেন তবে ঠিকাদারকে এই দায়িত্ব দিতে পারেন। কিন্তু যদি টাকা সাশ্রয় করতে চান তবে নিজেই এই কেনাকাটা সেরে ফেলতে পারেন। তবে সময় এবং টাকা দুটোই বাঁচাতে এমন কাউকে বাছাই করা উচিৎ যে কিনা উন্নতমানের সরঞ্জামাদি ক্রয় করতে পারবে। মানে কখনই ছাড় দিবেন না, তাতে যদি সময় কিছুটা ব্যয়ও হয় তাতেও না। সংস্কারের ক্ষেত্রে সরঞ্জামাদির ভুমিকা প্রধান।   

সর্বশেষে যা বলা যায় তাহলো, ধৈর্য্য সহকারে এই কাজ গুলো করিয়ে নিন। একদম তাড়াহুড়ো করা ঠিক না। বাসা সংস্কার কোন দু চার মিনিটের কাজ নয়! এটি যেমন সময়ের কাজ তেমনি দীর্ঘস্থায়ীও। তাই ভেবে চিন্তে তবেই বাসা সংস্কার করা উচিৎ।

আপনি শেষ কবে বাসা সংস্কার করেছেন? কিংবা বেশ কিছু দিনের মধ্যে কি বাসা সংস্কার করতে যাচ্ছেন? কমেন্ট সেকশনে আমাদের জানাতে ভুলবেন না কিন্তু! 

Write A Comment