Reading Time: 7 minutes

সভ্যতা যত এগোচ্ছে, ততই দূষিত হচ্ছে আমাদের আশেপাশের পরিবেশ। যে বাতাসে আমরা সারাক্ষণ শ্বাস নেই, সে বাতাসও ভারী হয়ে উঠছে দূষিত গ্যাস আর ধুলাবালিতে। ঢাকার মতো মেট্রোপলিটনগুলোর বাতাসে দূষণ মাত্রা দিন দিন বেশ আশংকাজনকভাবে বেড়ে উঠছে। অথচ একটু সচেতনতা আর ছোট্ট কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আমরা অন্তত আমাদের ঘরের ভেতরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে পারি। ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় অনেক রকম। তবে সেসবের আগে ঘরের বাতাসের বিশুদ্ধতা বলতে ঠিক কী বোঝায় আর কেন এটি জরুরি সেটিও কিন্তু জানতে হবে।

ঘরের বাতাসের বিশুদ্ধতাঃ কী ও কেন জরুরি

ঘরে ধুলাবালি
বাড়ির বাতাসে ধুলাবালি, ময়লা-আবর্জনা ও ক্ষতিকর গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির ফলেই দূষণ হয়

গবেষণা সংস্থাগুলো মূলত বাতাসে ধুলাবালি, গ্রাউন্ড লেভেল ওজোন গ্যাস, সালফার ডাইঅক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদির মাত্রা দেখে বাতাসের বিশুদ্ধতা পরিমাপ করে। ঘরের বাতাসের বিশুদ্ধতা নিয়ে ব্রিটিশ লাং ফাউন্ডেশন বলছে, ‘বাড়ির বাতাসে ধুলাবালি, ময়লা-আবর্জনা ও ক্ষতিকর গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির ফলেই দূষণ হয়।’ মূলত চুলা, হিটার বা ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী থেকে নির্গত ক্ষতিকর গ্যাস, সিগারেটের ধোঁয়া, জমে থাকা ময়লায় ক্ষতিকর ছত্রাকের উপস্থিতি, এয়ার ফ্রেশনার-রং-পেস্টিসাইড-প্রিজারভেটিভে ব্যবহৃত কিছু ক্ষতিকর উদ্বায়ী যৌগ বাসা-বাড়িতে দূষণের কারণ হয়। 

তবে ঘরের বাতাস দূষিত হলে সব সময় তা নাক-চোখ-মুখ বা পঞ্চইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করা সম্ভব হয় না। যেমন- বাতাসে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে গেলে তা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, তবে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ কিন্তু সেভাবে চোখে দেখে বা শ্বাস নেয়ার মাধ্যমে বোঝা সম্ভব না। এ ব্যাপারে ব্রিটিশ লাং ফাউন্ডেশন আরো বলছে, ‘ধুলোবালি, আবর্জনা বা ক্ষতিকর গ্যাসের যে ছোট ছোট কণিকাগুলো বাতাসে মিশে দূষণের কারণ হয়, সেসব খালি চোখে দেখা যায় না বা কোনো গন্ধও ছড়ায় না,। তবে মারাত্মক সব রোগের কারণ এগুলোই। তাই এরা আমাদের ‘অদৃশ্য শত্রু’।’   

বিশ্বখ্যাত ল্যান্সেট জার্নালের ‘গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ’ রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ১.৬ মিলিয়ন মানুষের অকাল মৃত্যু বা প্রিম্যাচিউরড ডেথের কারণ ‘ইনডোর এয়ার পলিউশন’ বা ‘ঘরের বায়ু দূষণ। শুধু তাই নয়, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট সহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের কারণ ঘরের বাতাসে মিশ্রিত দূষকগুলো।ঘদিন দূষিত বাতাসে থাকার ফলে  ‘ইনডোর এয়ার পলিউশন’ যাদের নিত্যদিনের সংগী, তারা অনেকেই নিয়মিত অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি-কাশি-সর্দিজ্বর, সাইনাসের সমস্যায় ভোগেন।  

বাইরের দেশগুলোতে ঘরের বাতাসের বিশুদ্ধতা পরিমাপের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সার্ভিস নেয়া হয়। আমাদের দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা এখনো নেই। তবে পরিমাপ করা না গেলেও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করার গুরুত্ব তো রয়েছেই। কারণ দিনের বেশ অনেকটা সময় আমরা নিজের বাড়িতে কাটাই। বিশেষত পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য, অ্যালার্জি ও শ্বাসতন্ত্রের রোগীদের জন্য ঘরের বাতাসের বিশুদ্ধতার ব্যাপারটি বেশি জরুরি। 

ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় 

শুরুতেই বলেছি, ঘরের বাতাস দূষণের কারণগুলো হলো ধুলাবালি, ময়লা-আবর্জনা ও ক্ষতিকর গ্যাস। অর্থাৎ ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে হলে আপনাকে এ তিনটি উপাদান যাতে বাড়িতে না জমে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আসুন তবে জেনে নেই কীভাবে তা করা যায়। 

ধুলাবালি দূর করবেন যেভাবে

ভ্যাকুয়াম ক্লিনিংঃ

ভ্যাকুয়াম ক্লিনার
ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ধুলা পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপযোগী

ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় এর মধ্যে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব অনেক বেশি। বাড়ি ধুলাবালি মুক্ত কিনা সেদিকে নিয়মিত খেয়াল রাখুন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ধুলা পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপযোগী। কেননা পর্দা, কার্পেট, ফার্নিচার কিংবা মেঝে যেখানেই ধুলা জমে থাকুক না কেন, সেটি সাথে সাথে টেনে নেয়ার সুবিধা আছে এতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হেপা (HEPA- high-efficiency particulate air)ফিল্টারযুক্ত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা আরও বেশি ভালো কারণ ধুলার পাশাপাশি স্পোর, পোলেন, মাইট জাতীয় ছত্রাক পরিষ্কারেও এর জুড়ি মেলা ভার। 

পানি দিয়ে ঘর পরিষ্কারঃ

পানি দিয়ে ঘর মোছা
রাসায়নিক জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি দিয়ে ঘর মোছার চাইতে সাধারণ পানি দিয়ে ঘর পরিষ্কার করাই ভালো

আমাদের দেশে এখনো সব জায়গায় ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহারের চল শুরু হয়নি। যেহেতু ঘর মোছাই এখনো প্রচলিত, সেক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো যে রাসায়নিক জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি দিয়ে ঘর মোছার চাইতে সাধারণ পানি দিয়ে ঘর পরিষ্কার করাই ভালো। কারণ রাসায়নিক জীবাণুনাশকে যে ক্লোরিন-ব্লিচ থাকে সেটি ক্ষতিকর গ্যাস মিথাইল ক্লোরোফর্ম হিসেবে বাতাসে মিশে যায়। এছাড়া গ্লাস ক্লিনার, ফ্লোর ক্লিনারগুলোতে বহুল ব্যবহৃত উপাদান হলো ইথাইল বেনজেন, ক্যাম্ফেন, ফরমালডিহাইড ইত্যাদি, যা আমাদের শ্বাসতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক জীবাণুনাশক যেমন ব্লিচ ও অ্যামোনিয়া বেজড ক্লিনারগুলো একসাথে ব্যবহারের ফলে ক্লোরামাইন, আমোনিয়া, হাইপারক্লোরাস অ্যাসিডের মতো বিষাক্ত গ্যাসও তৈরি হয়। তাই ঘর মুছতে সাধারণ পানি বা সাবান মিশ্রিত পানি নেয়াই ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় হতে পারে। 

পাপোষের ব্যবহারঃ

পাপোষে জুতা
বিশেষত মেইন দরজার বাইরে বড় ধরনের ম্যাট ব্যবহার করা শ্রেয়

মেঝে  ও দরজার বাইরে ম্যাট বা পাপোষ ব্যবহার করলে ঘরে ধুলাবালি প্রবেশের সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যায়। বিশেষত মেইন দরজার বাইরে বড় ধরনের ম্যাট ব্যবহার করা শ্রেয়। কারণ সেক্ষেত্রে কেউ যদি সেখানে পা না মুছেও ঘরে ঢুকে যায়, তবুও বড় ম্যাটে ধুলা আটকানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। 

আসবাবপত্রের ধুলা পরিষ্কারঃ

ফার্নিচার ডাস্টিং
ডাস্টার, পরিষ্কার তোয়ালেও আসবাব পরিষ্কারের অনুষঙ্গ হতে পারে

আসবাবপত্রে ধুলা জমে বেশ নিয়মিতই। বিশেষ করে মেইন রোডের পাশের বাড়িগুলোতে নিয়মিত আসবাবপত্রের ধুলা পরিষ্কার করা দরকারি। এজন্য ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের ব্যবহারই সবচেয়ে কার্যকরী। তবে ডাস্টার, পরিষ্কার তোয়ালেও ধুলা পরিষ্কারের অনুষঙ্গ হতে পারে। 

পোষা প্রাণীর পরিচ্ছন্নতাঃ 

পোষা প্রাণী
আপনার আদরের পোষা প্রাণীটির পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে ভুলবেন না

যাদের বাড়িতে পোষা প্রাণী আছে, তাদের নিয়মিত পরিষ্কার করার মতো জিনিসগুলোর তালিকায় পোষা প্রাণীর ঘর বা খাঁচাও থাকা উচিত। প্রাণীর লোম থেকেও অনেক সময় বাতাস দূষিত হয়। তাই আপনার আদরের পোষা প্রাণীটির পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে ভুলবেন না। 

ময়লা আবর্জনা দূর করবেন যেভাবে 

নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলাঃ

ডাস্টবিন
অবশ্যই নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলা প্রয়োজন

ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় এর মধ্যে অন্যতম হলো ময়লা আবর্জনা জমতে না দেয়া। এজন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলা প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করতে ঘরের কোণায় ডাস্টবিন রাখা জরুরি। বাথরুম ও রান্নাঘরে অবশ্যই ময়লা ফেলার ঝুড়ি রাখা উচিত কারণ পঁচনশীল খাদ্যদ্রব্য, ব্যবহৃত টিস্যু ইত্যাদি থেকে বাতাসে মেশে ক্ষতিকর জীবাণু। শুধু ময়লার ঝুড়িতে ফেললেই হবে না, সেইসাথে এটি নিয়মিত পরিষ্কারও করতে হবে যাতে এখান থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি না হয়। 

বাগানের পরিচ্ছন্নতাঃ

পরিচ্ছন্ন বাগান
আগাছা, শুকনা পাতা নিয়মিত পরিষ্কার করার বিষয়টিও বেশ জরুরি

এছাড়া যাদের বাড়িতে লন বা বাগান আছে তাদের জন্য আগাছা, শুকনা পাতা নিয়মিত পরিষ্কার করার বিষয়টিও বেশ জরুরি। ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় গুলো মানার সময় আসলে আপনাকে বাড়ির সব ধরনের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে। 

ক্ষতিকর গ্যাস থেকে মুক্তির উপায়

ভেন্টিলেশনঃ

কিচেন হুড
কিচেন হুড রান্নার চুলা থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইডসহ ক্ষতিকর গ্যাস ও গ্যাসকণাগুলো শুষে নেয় ও পরিবেশবান্ধব ধোঁয়া নির্গমন নিশ্চিত করে

ভেন্টিলেশনের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। অর্থাৎ ঘর থেকে দূষিত বাতাস বের করে দেয়ার ও ঘরে মুক্ত বাতাস প্রবাহিত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এজন্য রান্নাঘর ও বাথরুমে এক্সহস্ট ফ্যান ব্যবহার করা উচিত। সেইসাথে বড় জানালাও ভেন্টিলেশনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়। ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় গুলোর মধ্যে আরেকটি হলো কিচেন হুড ব্যবহার করা। কিচেন হুড রান্নার চুলা থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইডসহ ক্ষতিকর গ্যাস ও গ্যাসকণাগুলো শুষে নেয় ও পরিবেশবান্ধব ধোঁয়া নির্গমন নিশ্চিত করে।

পরিবেশবান্ধব জ্বালানিঃ 

গ্যাস স্টোভ
রান্নার জ্বালানি হিসেবে অবশ্যই পরিবেশবান্ধব উপাদান ব্যবহার করার দিকে খেয়াল রাখুন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ রান্নার চুলার জ্বালানি হিসেবে কয়লা, কেরোসিন, কাঠ, শুকনো আবর্জনা ইত্যাদি ব্যবহার করে। এসব থেকে নির্গত ধোঁয়ায় মিশে থাকা বিবিধ ক্ষতিকর গ্যাস বসতবাড়ির বাতাস দূষিত করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাবক। তাই রান্নার জ্বালানি হিসেবে অবশ্যই পরিবেশবান্ধব উপাদান ব্যবহার করার দিকে খেয়াল রাখুন। 

লো ভিওসি প্রোডাক্টঃ

প্রাকৃতিক ক্লিনার
লেবু ও বেকিং সোডা মিশিয়ে রান্নাঘর পরিষ্কারের কাজটি সহজেই করে ফেলা যায়

ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় গুলোর মাঝে আরেকটি হলো অ্যারোসল, এয়ার ফ্রেশনার, ডিওড্রেন্ট ইত্যাদির ব্যবহার ছেড়ে দেয়া বা কমিয়ে দেয়া। লো ভিওসি (VOC-Volatile Organic Chemical) প্রোডাক্ট অর্থাৎ উদ্বায়ী ক্ষতিকর গ্যাস স্বল্প পরিমাণে নির্গমন করবে এমন পণ্য ব্যবহারের ওপর বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন। কারণ আমরা প্রতিদিন যেসব অ্যারোসল, ডিওড্রেন্ট, পারফিউম, এয়ার ফ্রেশনার, ক্লিনার্স ব্যবহার করি, তা থেকে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, টার্পেন, ইথানল, ফরমালডিহাইড সহ প্রচুর ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয়। এক্ষেত্রে তাই আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর অল্টারনেটিভ হতে পারে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি এয়ার ফ্রেশনার ও ক্লিনার্স। যেমন লেবু ও বেকিং সোডা মিশিয়ে রান্নাঘর পরিষ্কারের কাজটি সহজেই করে ফেলা যায়। তবে যারা বাড়িতে এসব তৈরি করার মতো যথেষ্ট সময় পান না, তারা অপেক্ষাকৃত লঘু উপাদান দিয়ে তৈরি মাইল্ড ক্লিনার্সবা আর্টিফিসিয়াল সুগন্ধি বিহীন এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন।

ঘরের রংঃ  

দেয়ালের রং
ঘরের দেয়াল, জানালা-দরজার ফ্রেমে লেড বা সীসা বেজড রং ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন

ঘরের দেয়াল, জানালা-দরজার ফ্রেমে লেড বা সীসা বেজড রং ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীসা বাতাসে মিশে কিডনির রোগ, নার্ভাস সিস্টেম ড্যামেজের কারণ হয়। শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সীসা মিশ্রিত বাতাস সবচেয়ে ভয়ংকর কারণ এটি শিশুর বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে। বিভিন্ন দেশের সরকারও তাই লেড বেজড পেইন্ট নিষিদ্ধ করেছে এবং  টাইটেনিয়াম বা জিংক জাতীয় রং বেছে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। 

ইনডোর প্ল্যান্টঃ

হাউজ প্ল্যান্ট
অ্যালোভেরা, স্নেকপ্ল্যান্ট, রাবার গাছ প্রভৃতি ইনডোর প্ল্যান্টও ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় গুলোর মধ্যে বেশ সাশ্রয়ী ও সুন্দর

অ্যালোভেরা, স্নেকপ্ল্যান্ট, রাবার গাছ প্রভৃতি ইনডোর প্ল্যান্টও ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় গুলোর মধ্যে বেশ সাশ্রয়ী ও সুন্দর। কার্বন মনোক্সাইড, ফরমালডিহাইড, ট্রাই ক্লোরো ইথিলিনের মতো ভয়াবহ গ্যাসগুলো শোষণ করে নিয়ে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করে এ গাছগুলো।

আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণঃ

পানির পাইপ
ঘরের ভেতরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর করতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়

আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায় এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে জন্মানো স্পোর, মোল্ড ,মাইট জাতীয় ক্ষতিকর ছত্রাক থেকে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জেন তৈরি হয় যা অ্যাজমা ও শ্বাসতন্ত্রের রোগীর অস্বস্তির কারণ হয়। এছাড়া ঘরে জ্বলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে রেক্সিন জাতীয় ফ্লোর কাভার, কার্পেট, ওয়াল পেপার থেকে সাধারণ মাত্রার চাইতে বেশি রাসায়নিক গ্যাস বাতাসে মেশে এবং ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াও বেশি জন্মায়। ঘরের ভেতরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর করতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন- বাড়ির পানির পাইপের লাইনে যাতে কোনো লিক না থাকে তা নিশ্চিত করা, এসি ট্রের পানি নিয়মিত পরিষ্কার করা, ইনডোর প্ল্যান্টে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ রাখা। কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট যেমন রিড পামস, পিস লিলি ঘরের আর্দ্রতা শুষে নিতে সহায়ক। 

বাস্তব সত্য হলো, ঘরের বাতাসের বিশুদ্ধতা নিয়ে আমরা এখনো খুব একটা ভাবতে শুরু করিনি। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন, আপনার সন্তানের অধিকাংশ সময় বাড়িতেই কাটে, ঘরে বসেই সময় কাটান পরিবারের বয়স্ক সদস্যেরা আর আপনিও কর্মব্যস্ত দিনের শেষে ঘরেই ফিরে যান। তাই ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার গুরুত্ব কোনোভাবেই কম নয়। আসুন, আজ থেকেই সহজ এ উপায়গুলো মেনে চলে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার অভ্যাস শুরু করি। একটু সচেতনতা আর কিছু পরিবর্তনই নিশ্চিত করতে পারে আপনার ও আপনার পরিবারের সুস্থতা।

Write A Comment