Reading Time: 4 minutes

বিয়ে নিয়ে যেন জল্পনা-কল্পনার কোন শেষ নেই। কনের শাড়ি, কনের সাজ কেমন হবে? বরের পাগড়ীটা হওয়া চাই একদম রাজকীয়। হলুদের ডালাগুলো যেন হয় হাল ফ্যাশনের। ঘরের ছোটদের থেকে শুরু করে বড়রা কেউই যেন বাদ যায় না। এত সবকিছুর মধ্যে যদি কোন কিছু বাদ পড়ে যায় সেটা হল, আপনার প্রিয় বাড়িটি। বাড়ির একেক ঘরে যেখানে একেক স্মৃতি বাসা বেঁধেছে, সে জায়গাটি কেন অবহেলায় থাকবে? অধিকাংশ বিয়ের অনুষ্ঠানই এখন বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট কিংবা কমিউনিটি সেন্টারে হয়ে থাকে বলে অনেকে বাড়িতে বেশি নজর দেন না। কিন্তু মেহমানের আনাগোনা যেন আপনার বাড়িতেই বেশি হয়ে থাকে। সুতরাং বিয়ের আমেজের প্রয়োজন কিন্তু এখানেও আছে। যারা কিনা একটু ঘরোয়াভাবে বিয়ে করতে যাচ্ছেন, বিয়ের সময়ে ঘরের সাজ নিয়ে তাদের আর ভাবনা নেই। কম সময়ে কম ঝামেলার মধ্যে নিজেরাই সাজিয়ে ফেলতে পারবেন বিয়ে বাড়ি। চলুন, ঝটপট শুরু করা যাক। 

ড্রয়িং রুম 

গাঁদা ফুল
গাঁদা ফুল

বিয়ে বলে কথা! রাজ্যের মেহমান এসে যেখানে ভিড় জমাবে সেটা কিন্তু আপনার বাসা। আর বাসার ভেতর যেখানে সবাই বসবে সেটা কিন্তু আপনার ড্রয়িংরুম। সুতরাং, এই ড্রয়িংরুমে থাকা চাই বিয়ের আমেজ। কিভাবে আনবেন এই আমেজ? কঠিন কিছু নয়। আমরা জানি বিয়ে বাড়িতে থাকে হাজার হাজার কাজ। সেজন্য এমন কিছু সাজ রয়েছে যেগুলো কিনা নিজেরাই সেরে ফেলা যায় তাও কম সময়ে। সাজের উপকরণগুলো আপনার ঘর থেকেই নিতে পারবেন। আপনার মায়ের রঙ বেরঙের শাড়ি নিশ্চয়ই বাসায় আছে? আপনাকে যা করতে হবে তা হল লাল, হলুদ, সবুজ, নীল যেকোন রঙের কয়েকটা শাড়ি দেয়ালে দড়ি টাঙিয়ে কাপড় শুকানোর মত করে ঝুলিয়ে দিন। এরপর, এই শাড়িগুলোর উপর কয়েকটি গাঁদা ফুলের মালা ঝুলিয়ে দিন। দেখবেন ঘরটা আগের থেকে ভিন্ন হয়ে উঠেছে। বিয়ের সময়ে ঘরের সাজ হওয়া চাই একদম ভিন্ন যাতে বিয়ের আমেজ থাকে। 

ছাদ            

স্ট্রিং লাইট
স্ট্রিং লাইট

বিয়ের সময়ে বরাবরই ঘর ভর্তি মেহমান থাকে। মনের মত আড্ডা দেওয়ার মত জায়গা যেন খুঁজেই পাওয়া যায় না। নিরিবিলি খোলামেলা সময় কাটাতে কিন্তু সবাই ছাদেই যাবে। তাই এই ছাদটাই বা না সেজে কেন থাকবে বলুন? এখনকার সময়ে আমরা কম বেশি সবাই ছবি তুলতে ভীষণ ভালোবাসি। কেননা, ছাদটাকে এমন ভাবে সাজিয়ে রাখি যাতে করে বিয়ের আমেজ এবং সাজ দুটোই বজায় থাকে। ভাবছেন কিভাবে? এখন বাজারে পাওয়া যায় নানা ধরনের বাহারি বাতি, যেমন স্ট্রিং লাইট। এগুলো আপনার পছন্দ মত আকৃতির বাছাই করে নিয়ে ছাদের যেকোন কর্নারে ঝুলিয়ে দিতে পারেন সাথে গাঁদা ফুলের মালাকেও রাখতে পারেন। দিন আর রাতের সাজ দুটো একসাথেই হয়ে গেল, ছাদ যেমন আলোকিত হয়ে যাবে তেমনি বিয়ের সময়ে ঘরের সাজ ও হয়ে যাবে। 

গেস্টরুম

কাগজের ফুল
কাগজের ফুল

বিয়ের সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে কিন্তু এই রুমটি। নতুন মেহমান আসা থেকে শুরু করে ঘরের মানুষরাও এই রুমটি বেশি ব্যবহার করে থাকে। মেহমান থাকতে দেয়া বা নানান জিনিসপত্র রেখে দেওয়ার কাজগুলো কিন্তু এই রুমেই সেরে ফেলা হয়। সুতরাং এই ঘরের সাজ হিসেবে আপনাকে বেঁছে নিতে হবে এমন কিছু ডেকোর যা কিনা কিছুদিন পর্যন্ত থাকবে। কাগজের ফুল ডেকোর হিসেবে কিন্তু বেশ ভালো। দেখতে যেমন রঙিন লাগে তেমনি ঘরের ভেতর ছড়িয়ে পরে উৎসবের আমেজ। বাজারে যেকোন ফুলের দোকানেই থোকা ধরে পাওয়া যায় কাগজের ফুল। আপনাকে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না, কাগজের ফুলের মালা একদম রেডি করেই দোকানে রাখা থাকে। আপনি শুধু পছন্দমত রঙ বেঁছে নিবেন। আপনি চাইলে গেস্টরুমের দরজা ও জানালার চারিদকে কিংবা জানালার পর্দার ওপর ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এতে কম সময়ে খুব সহজেই কিন্তু আপনার গেস্টরুম সাজিয়ে নেয়া যায়। 

বেডরুম

মরিচ বাতি
মরিচ বাতি

এই রুমটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের অনেকটা সময় যেমন এই ঘরে কাটিয়েছেন তেমনি বিয়ের সময়ে এই ঘরে রাখা হয় নানা মূল্যবান জিনিস। পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে এই ঘরেই কাটানো হয় একান্ত সব মুহূর্তগুলো। বিয়ের সময়ে ঘরের সাজ যদি দিতেই হয় তাহলে এমন ডেকোর ভাবতে হবে যা থাকবে বেশি সময় ধরে আবার যেন ঘর হযবরল না হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বেডরুমে আলোকসজ্জা ব্যবহার করা যায়। বাজারে নানা রকমের মরিচ বাতি পাওয়া যায়। পছন্দমত রঙ বেঁছে নিয়ে পরিমাণ মত বাতি কিনে এনে সমস্ত ঘর সাজিয়ে নিলে কিন্তু, বিয়ে বাড়ির আমেজ চলে আসবে। এই মরিচ বাতিগুলোর কথা শুনে ভাবছেন হয়তো, আলো আর কেমনই বা হবে! নিঃসন্দেহে বলা যায় এই ধারণা ভুল। কেননা, একসাথে অনেকগুলো বাতি ব্যবহার করলে ঘর এতটাই আলোকিত হয়ে যায় যে অন্য বাতি জ্বালাবার প্রয়োজন হয়না। 

বিয়ের সময়ে বাড়ি জুড়ে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা থাকে, কিন্তু এই সময়টায় সবারই প্রস্তুত থাকা জরুরী। সেটা হোক আপনি কিংবা আপনার বাড়ি। কেমন করে সাজাবেন নিজের বাড়ি সেই ভাবনার শেষ কিন্তু এখানেই হয়ে গেল। এবার পালা কাজে নামার। কেমন লাগলো এই টিপসগুলো? কোনটা কি পছন্দ হয়েছে? অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।

Write A Comment