Reading Time: 3 minutes

বেডসাইড টেবিলের পেছনের গল্পটা বলতে গেলে অনেকটা অদ্ভুত। শুনে হয়তো ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠতে পারে মুচকি হাসি। জানতে ইচ্ছে করছে গল্পটা আসলে কেমন? সে সময়কালে ঘরের ভেতর বেডসাইড টেবিল থাকার মানে হচ্ছে সেখানে কেবল চেম্বার পট (পোর্টেবল টয়লেট) থাকতে পারবে। তাই সেই শুরু থেকেই বেড সাইড টেবিলগুলো সাইজে ছোট এবং কেবিনেটযুক্ত। কিন্তু, সময়ের সাথে এর ফাংশনালিটি সকলে বুঝতে শুরু করলো যে এটা কেবল পোর্টেবল টয়লেট হিসেবে ব্যবহার না করে বরং অন্যকিছু হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এরপর ইনডোর টয়লেটের প্রচলন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলে তখন সবাই ভাবতে লাগলো যে বেডসাইড টেবিলকে অন্যরূপে ব্যবহার করা যায় কিনা! তারপর ইন্টেরিয়র ডিজাইনে বেডসাইড টেবিল একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়ালো। বেড সাইড টেবিলের আরও অনেক নাম রয়েছে নাইটস্ট্যান্ড, নাইট টেবিল, ডে স্ট্যান্ড, বেডসাইড কেবিনেট ইত্যাদি। আধুনিক বেডসাইড টেবিলগুলোতে ছোট ছোট কেবিনেট আর ড্রয়ার থাকে। 

বেডসাইড টেবিল ব্যবহারের সুবিধা

বেডসাইড টেবিলগুলো ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে পারে বহুলাংশে। এছাড়াও ব্যহারের ক্ষেত্রেও এই বেডসাইড টেবিলগুলো চমৎকারভাবে কাজে আসে। তাই এখন জানা যাক বেডসাইড টেবিল ব্যবহারের সুবিধা সমূহ সম্বন্ধে। 

  • বেডসাইড টেবিল এ অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস আপনি চাইলেই রাখতে পারছেন। টেবিল ল্যাম্প থেকে শুরু করে এলার্ম ক্লক যেকোন কিছু আপনি টেবিলে রাখতে পারছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠতে যদি দেরি হয় নিয়মিত ভাবে তাহলে তো এলার্ম ঘড়ি অতি প্রয়োজনীয় একটা অনুষঙ্গ। এছাড়াও আপনি চাইলে পানির গ্লাস, বই, ফোন বা অন্য জিনিসও রাখতে পারছেন। 
  • যারা নিয়মিত ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকেন তারা সহজেই বেডসাইড টেবিলে ল্যাপটপ রাখতে পারছেন শুধু ল্যাপটপ না যেকোন গেজেটই আপনি এখানে রাখতে পারছেন। ফোন থেকে শুরু করে স্মার্টওয়াচ বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসও আপনি এখানে রাখতে পারছেন। কিছু কিছু বেডসাইড টেবিলে বিল্ট-ইন চার্জিং স্টেশন, পাওয়ার সকেট এবং ইউএসবি থাকে বলে আপনি রাতের বেলা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোকে চার্জ দিতে পারছেন। 
  • বাসায় যদি বাচ্চারা থেকে থাকে তাহলে তাদের ঘরে এই বেডসাইড টেবিল ব্যবহার করতে পারেন। তাদের সকল গল্পের বই এবং অন্যান্য জিনিসপত্র খুব সহজেই এই টেবিলে রাখতে পারছেন এছাড়াও ঘরের বড়দের ক্ষেত্রেও এই টেবিলগুলো খুব উপকারী, প্রয়োজনীয় ঔষধ রাখতে। 
  • ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রেও এই বেডসাইড টেবিলগুলো বেশ কার্যকরী একটা অনুষঙ্গ। ডিজাইন করা বেডসাইড টেবিলগুলো ঘরের ভেতর কোজি একটা আবহ তৈরি করতে পারে নিখুঁতভাবে। টেবিলের উপর বই, ফটোগ্রাফ বা ডেকোরেটিভ কোন জিনিস রেখে দিলে ঘরের ভেতর নান্দনিকতা ফুটে ওঠে সহজেই। 

এগুলো ছাড়াও যদি বেডসাইড টেবিলে আরও ফাংশনালিটি যোগ করতে চাইলে এক্ষেত্রে নকশায় আরও ড্রয়ার বা কেবিনেট যোগ করতে পারেন। কেবিনেট যোগ করলে বাড়তি স্পেস যোগ হবে এবং ব্যবহারের কাজে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করা যাবে। 

বিভিন্ন ধরণের বেডসাইড টেবিল 

ডিজাইন অনুযায়ী সাধারণত ৩ ধরণের বেডসাইড টেবিল আছে। যেগুলো ব্যবহার হোক কিংবা দেখতে, সবকিছুই একটু আলাদা। যদিও এগুলোর নকশা আলাদা হলেও কার্যকারীতা প্রায় একই। চলুন জানা যাক নানা ধরণের বেডসাইড টেবিল সম্বন্ধে! 

বেডসাইড চেস্ট 

অনেকেই এটাকে “চেস্ট অফ ড্রয়ার” নামেও চিনে থাকেন। এই নামে ডাকার কারণ হচ্ছে এটাতে অনেকগুলো ড্রয়ার একসাথে থাকে বলে। টেবিলের উচ্চতার উপর নির্ভর করে ২ টা থেকে ৪ টার মত ড্রয়ার থাকে। আপনার খাটের ম্যাট্রের থেকে একটু উঁচু হতে পারে টেবিলগুলো কিন্তু খুব বেশি উঁচু হবে না। এটাই প্রধান একটি পার্থক্য বেডসাইড চেস্ট এবং গতানুগতিক ড্রেসারের মধ্যে। ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ব্যবহৃত সকল কিছু রাখার জন্য এই টেবিলগুলো ব্যবহার করে খুব স্বস্তি পাওয়া যায়। এই চেস্ট বেডসাইড টেবিল টি অন্যান্য টেবিলগুলোর মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। 

বেডসাইড কেবিনেট 

বেডসাইড চেস্ট টেবিলের মতই অনেকটা কিন্তু আরও বেশি জায়গা থাকে বলে এগুলোকে বেডসাইড কেবিনেট টেবিল বলা হয়ে থাকে। একটা অথবা খুব বেশি হলে দুটো ড্রয়ার থাকবে। কিন্তু সবচেয়ে চমৎকার বিষয় হচ্ছে এই বেডসাইড টেবিলগুলোতে দরজাযুক্ত কেবিনেট থাকবে। যা কিনা বড় কোন জিনিস রাখতে সহায়তা করবে।

নাইটস্ট্যান্ডস   

নাইটস্ট্যান্ডসগুলো চেস্ট এবং কেবিনেট বেডসাইড টেবিল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই নাইটস্ট্যান্ডগুলোতে বাহ্যিক সৌন্দর্যতেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে স্টোরেজের জায়গা তেমন নেই। এগুলোতে খুব বেশি ড্রয়ার থাকেই না। থাকলেও ১ টা বা ২টা এর বেশি কখনই থাকে না। বরং একটা সারফেস তৈরি করা থাকে যেখানে জিনিসপত্র রাখা যায়। 

ফাংশনাল ক্যাটেগরির বাইরেও এই বেডসাইড টেবিলগুলো নানারকম স্টাইল, শেইপ, ম্যাটেরিয়াল এবং রঙের হয়ে থাকে। মিড সেঞ্চুরি মডার্ন, আর্ট ডেকো, কনটেম্পোরারি স্টাইল থেকে শুরু করে আরও অনেক স্টাইলে বিল্ট ইন বেডসাইড টেবিল থাকে। তাই যেকোন বেডসাইড টেবিল বাছাই করার আগে অবশ্যই ইন্টেরিয়র ডিজাইন স্টাইলগুলো দেখে নিন এবং মিলিয়ে বেডসাইড টেবিল বেছে নিন।

Write A Comment