খুব বেশি উপকরণ দিয়ে হোম ডেকোর করলে যেমন আঁটসাঁট লাগে তেমনি, বেশি ফাঁকা জায়গাও কিন্তু চোখে বিঁধে। হোম ডেকোরে ব্যালেন্স জিনিসটা খুব বেশি দরকার। ঘরের কোন অংশে ঠিক কতটুকু জিনিস রাখলে তা সুন্দর করে ফুটে উঠবে এই সেন্সটা থাকলেই আপনার ঘর হয়ে উঠবে বাকীদের থেকে আলাদা। আমরা অনেকেই হোম ডেকোর করতে গেলে বাসার সবকিছু যত্ন সহকারে করলেও চারপাশের দেয়ালটাকে যেন এড়িয়েই যাই। কখনো একটা পেইন্টিং ঝুলিয়ে নেই কিংবা রেখে দেই খালি! ঘরের এত বড় একটা অংশকে সুন্দর করে কাজে না লাগিয়ে রেখে দেই শূন্য! তাই আজকে লিখবো ঘরের শূন্য বা বড় দেয়াল সাজানোর টিপস নিয়ে।
বাহারি আয়না
যেকোন ঘরকে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ও উজ্জ্বল দেখাতে হরেক রকম আয়না ব্যবহারের জুড়ি নেই। শূন্য বড় দেয়ালগুলোতে কেবল আয়না ব্যবহার করেই দেয়ালের চেহারা বদলে ফেলতে পারেন। নতুনত্ব আনতে আপনি যেটা করতে পারেন, আয়না ঝুলিয়ে না দিয়ে বরং হেলান দিয়ে রাখুন। বড় সাইজের আয়না গুলোকে দেয়ালে হেলান দিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে ঘরে বড় একটা আউটলুক তো আসলোই সেই সাথে আপনি চাইলে বাসার অন্য স্থানেও এই আয়নাগুলো ব্যবহার করতে পারছেন। প্রয়োজন বা ডেকোর অনুযায়ী বাসার হলওয়ে থেকে শুরু করে এন্ট্রিওয়ে ডেকোরের জন্য আয়না ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া আয়না রাখলে আপনার দেয়াল সাজানোর কাজ অর্ধেকটাই কমে যাবে। আয়নার পাশাপাশি মিনিমাল কোন উপকরণ যেমন, ছোট কোন ফ্রেম, পেইন্টিং রেখে দিলেই বড় দেয়াল সাজানোর কাজ অর্ধেকটা শেষ হয়ে যায়। তবে, আয়নাই যথেষ্ট আপনার দেয়ালকে ভিন্ন দেখাতে!
ফ্লোটিং শেলফ
ছোট বাসা কিংবা শূন্য বড় দেয়াল ডেকোরেশন বা স্টোরেজ সল্যুশন হিসেবে ঝুলন্ত শেলফের জুড়ি নেই। ঘরের জায়গা যেমন বাঁচিয়ে দেয় তেমনি প্রয়োজনের জন্য সমাধানটাও এনে দেয় আবার ঘরকে করে তুলে স্টাইলিশ। এই ঝুলন্ত শেলফগুলো বেশ উপকারী। এটা সহজেই টেবিল বা কাউন্টার টপের অভাব দূর করে সেই সাথে ঘরের জন্য তৈরি করছে যথেষ্ট জায়গা। ঘরের জন্য ফরমাল বা এলিগেন্ট কিংবা ক্যাজুয়াল যে লুকই বেছে নিন না কেন, এই শেলফ আইডিয়াগুলো সহজেই বড় দেয়ালকে সাজিয়ে তুলবে এবং ব্যবহার উপযোগী করবে। আপনার খালি দেয়ালটায় এই ঝুলন্ত শেলফগুলো ঝুলিয়ে দিয়ে রাখতে পারেন শো-পিস বা গাছ যেকোন কিছু। রাখতে পারেন ফটোফ্রেম বা বাহারি বাতি।
রাগস ঝুলিয়ে দিন
শুনে একটু অবাক হলেও এই আইডিয়াটি বেশ কার্যকরী! বাজারে রাগস নানারকম রঙের আর নান্দনিক নকশায়। পছন্দসই রাগস এনে দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। এতে করে আপনার ঘরে যোগ হবে নতুন এক আমেজ। এছাড়া, আপনি সময়মতো রাগস বদলেও ফেলতে পারছেন। একসময় যদি হলুদ ব্যবহার করেন অন্যসময় ব্যবহার করতে পারেন সবুজ। এতে করে দেয়ালের রঙ না বদলিয়েও ঘরের ভেতর অন্য রঙ নিয়ে আসার কাজটাও হয়ে গেল! চেষ্টা করবেন দেয়ালের বিপরীত রঙের রাগস বেছে নিতে! এতে করে ব্যবহৃত রাগস ফুটবে সুন্দর করে।
ওভার সাইজড আর্ট
গ্যালারী ঘুরতে গেলেই চোখে পড়ে অসম্ভব সুন্দর কিছু আর্ট ওয়ার্ক! আকারে বড় আর সারাটা দেয়াল জুড়ে থাকা সেই আর্টগুলো দেখে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, যদি আমার বাসার দেয়ালে রাখা যেত! এমন ভাবনা থেকে থাকলে এখনই সুযোগ সেটাকে সত্যিতে রূপান্তরিত করার। প্রথমেই যেটা করতে হবে চোখ ধাঁধানো একটি আর্ট ওয়ার্ক কিনে আনতে হবে। ফ্রেম না করা থাকলে সেটাকে ফ্রেম করিয়ে নিতে হবে। এরপর দেয়ালে ঝুলানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যস, হয়ে গেল! বড় দেয়াল কাজে লাগানোর পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্যও বর্ধিত হয়ে গেল। আর তাছাড়া আর্ট ভালোবাসে না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া একটু মুশকিলই বটে!
ইলিউশন বা ওয়ালপেপার
বড় দেয়াল সাজানোর টিপস হিসেবে ইলিউশন বা ওয়ালপেপার বেশ কার্যকরী একটি আইডিয়া। বড় দেয়ালকে ইলিউশন বা ওয়ালপেপার দিয়ে ভরিয়ে ফেললে ঘরটা কিন্তু দেখতে বেশ অন্যরকম লাগবে। অনেকেই ভাবে ইলিউশন নাকি ওয়ালপেপার কোনাট ঘরের জন্য বেশ উত্তম? ইলিউশন নাকি ওয়ালপেপার, এর মধ্যে ডিজাইনের অপশন বেশি ওয়ালপেপারে থাকলেও, রঙের পছন্দ এবং ভিন্নতা আনতে ইলিউশন বেশি কার্যকরী। কাস্টমাইজড শেড এ একটি নির্দিষ্ট ডিজাইনে পার্থক্য আনা সম্ভব ইলিউশনে। তবে ওয়ালপেপার এর ক্ষেত্রে ডিজাইনের সংখ্যা আরও বেশি পাচ্ছেন। জ্যামিতিক থেকে শুরু করে ফ্লোরাল, মোটিফ এবং প্যাটার্নের মাধ্যমে এই ভিন্নতাগুলো আনা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে ইলিউশন এর সুবিধা হলো যেহেতু আপনি কাস্টমাইজড শেডে দেয়ালে ইলিউশন করাতে পারছেন, তাই করার সময়ই ঘরের বাকি অংশের রঙের সাথে মিল রেখেই ডিজাইন এবং রঙ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। যেখানে খুব চাকচিক্য যেমন থাকে না, তেমনি ঘরে একটা শৈল্পিক ভাব ফুটিয়ে তুলে, যা ট্রেন্ডের সাথে পরিবর্তন করা জরুরি নয়। তাই ঐতিহ্য এবং শৈল্পিক আবেশ ফুটিয়ে তুলতে ইলিউশন হতে পারে বেস্ট সলিউশন।
গ্যালারী ওয়াল
ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে গ্যালারী ওয়ালের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আমরা সকলেই নিজের ঘর সাজাতে নানারকম ছবির গ্যালারী করতে পছন্দ করি। কিন্তু বেশীরভাগ সময় জায়গার অভাবে এমনটা করা হয়ে ওঠে না। যেহেতু বড় দেয়াল সাজানোর টিপস নিয়ে লিখছি এক্ষেত্রে গ্যালারী ওয়াল করার কথা কীভাবে বাদ দেই! যেকোন কিছুই ছন্নছাড়া করে করলে ভাল দেখায় না। সুতরাং আপনাকে একটা রঙের কথা মাথায় রেখে তবেই ছবির ফ্রেম করাতে হবে। আপনার দেয়াল যদি সাদা রঙের হয়ে থাকে তবে সেখানে কালো ফ্রেমের গ্যালারি বেশ মানাবে। দেয়ালের থেকে বিপরীত রঙের ফ্রেম বেছে নিতে হবে তবেই দেয়ালে ফুটবে ফ্রেমটা। আমরা সবাই পুরনো ছবি সংগহ করতে ভীষণ পছন্দ করি, সামলে রাখতে চাই। গ্যালারী ওয়াল করার থেকে সুন্দর কোন উপায় থাকতে পারে না পুরনো ছবিগুলো রাখার।
এই ছিল আমাদের বড় দেয়াল সাজানোর টিপস নিয়ে আজকের ব্লগ! উপরে বলা আইডিয়া গুলো কেমন লেগেছে জানাতে কমেন্ট করতে পারেন।
হোম ইন্টেরিয়রটা স্টাইলিশ করতে চাচ্ছেন? বিপ্রপার্টি হতে পারে আপনার ইন্টেরিয়র গাইডেন্স! সেটা কীভাবে জানতে যোগাযোগ করুন এখনই!
কলঃ ০৯৬১২১১০০১১
ইমেইলঃ interior@bproperty.com
ভিজিট করুন https://www.bproperty.com/en/interior/