Reading Time: 3 minutes

বেশির ভাগ ভবনের দেয়ালেই নোনা ধরতে দেখা যায়। দেয়ালে রং করা থাকুক বা নাই থাকুক, দেয়ালের গায়ে সাদা প্রলেপ পড়তে দেখা যায়। পানির সংস্পর্শে থাকা বা দীর্ঘ সময় ধরে অরক্ষিত রাখা ভবনগুলোর ক্ষেত্রে এমন হতে দেখা যায়। শুধু পানির জন্য যে এমন হয় বিষয়টা তা নয়। আরও কিছু কারণ রয়েছে যেমন, পি এইচ লেভেল বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যা হতে দেখা যায়। লবণ বা নোনা বিভিন্নভাবে ভবন কাঠামোর ক্ষতি করতে পারে। কেবল ভবন কাঠামোর ক্ষতিই না, পানির ক্ষতির জন্যও আংশিক দায়ী। এই নোনা ধরার ফলে ইট বা পাথরের তৈরি দেয়ালে সাদা সাদা লবণের মত মিহি দানা সৃষ্টি হয়। যা দেয়ালের সৌন্দর্য ও স্থায়িত্ব নষ্ট করে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার কিছু উপায় রয়েছে। ভবনের দেয়ালে নোনা ধরলে করণীয় কী জানতে পড়তে থাকুন!  

কীভাবে নোনা দেয়ালের ক্ষতি করে ?

ফাটল ধরা দেয়াল
লবণ হচ্ছে সোডিয়াম ক্লোরাইড

সহজ কথায় একটি কাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে নানারকমের উপাদান। তাই, যে কোনও অম্লীয় পদার্থ বা ক্লোরাইড দীর্ঘ সময়ের জন্য এই কাঠামোর সংস্পর্শে এলে তা কাঠামোর ক্ষতি করে থাকে। আর লবণ হচ্ছে সোডিয়াম ক্লোরাইড তাই এটা বিভিন্ন উপায়ে ভবন কাঠামোর ক্ষতি করে থাকে। পিএইচ লেভেল যদি ৭ এর নিচে নেমে আসে এক্ষেত্রে তা ভবনের জন্য বেশ ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। আর পিএইচ লেভেল লবণের সংস্পর্শে আসে এবং একাধিক রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ঘটাতে শুরু করে যার ফলস্বরূপ পিএইচ লেভেল কমে আসে। আর এই পরিবর্তনটি বিভিন্ন উপায়ে কাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। প্রথমত, এটা দেয়ালের গায়ে ছিদ্র তৈরি করে দেয়ালের আর্দ্রতা শোষণ করার লক্ষ্যে। এরপরই, দেয়ালের গায়ে ফাটল ধরতে দেখা যায়। 

দেয়ালের নোনা প্রতিরোধের উপায় 

একটি ভবন নির্মাণ করতে শুধু অর্থ খরচই হয়না বরং লেগে যায় অনেকটা সময়। কষ্টের টাকাগুলো সঞ্চয় করে একটু একটু করে একটা ভবন নির্মাণ করতে হয়। অথচ সেই ভবনের যেকোন ক্ষয়ক্ষতি আমাদের অজান্তেই ঘটে যায়। অনেক সময় আমাদের চোখের সামনেই এই ক্ষয়ক্ষতি গুলো শুরু হতে দেখা যায়। কিন্তু আমরা সঠিক উপায় জানি না বলে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি না। ভবনের দেয়ালে নোনা ধরার এই সমস্যার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় আছে যেগুলো মেনে চললে নোনা ধরা থেকে ভবনকে আমরা বাঁচাতে পারি।

ডেনসিফায়ার সিলার 

ভবন কাঠামোর গায়ে নোনা থাকুক আর না থাকুক নোনার কারণে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ডেনসিফায়ার সিলার লাগানোর কোন ব্যাতিক্রম নেই। আপনি চাইলে যেকোন ধরণের সোডিয়াম কিংবা লিথিয়াম সিলিকেট ভিত্তিক ডেনসিফার সিলার ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে এগুলো প্রচুর পরিমাণে খুঁজে পাওয়া যাবে। এই সিলার ব্যবহারের ফলে দেয়ালের গায়ে নোনার কারণে হওয়া ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে আসবে। ভবন কাঠামোকে নোনা থেকে এভাবে সুরক্ষিত রাখে এই সিলারগুলো। 

পানি প্রতিরোধক সিলার

লবণ হচ্ছে হাইড্রোস্কোপিক পদার্থ যা বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে নেয়। আর ইট বা পাথরের সাথে যখন পানি যুক্ত হয় তখন রট বা আয়রন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে যেটা বাড়ার ফলে দেয়ালের বাইরে চিড় ধরতে পারে। এই চাপ বা চিড় রোধ করতে এই সিলার ব্যবহার করা যেতে পারে। 

পেইন্ট রোলার
প্রতিরক্ষামূলক আবরণ এই ধরণের ক্ষতি একবারে বন্ধ করে দিবে

প্রতিরক্ষামূলক আবরণ

আপনি যদি কোন ধরণের সিলারই খুঁজে না পান এক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ব্যবহার করুন। উপযুক্ত সিলার নোনার কারণে হওয়া ক্ষতি কমাতে পারে কিন্তু প্রতিরক্ষামূলক আবরণ এই ধরণের ক্ষতি একবারে বন্ধ করে দিবে। তাই সবচেয়ে ভালো হবে যদি আপনি প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ব্যবহার করুন। 

ভবনের দেয়ালে নোনা ঠেকানোর এই উপায়গুলো বেশ কার্যকরী। চেষ্টা করবেন ইট পাথরের সাথে পরিষ্কার পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। তারপর, সিলার বা প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ব্যবহার করুন। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ বরাবরই উত্তম। 

Write A Comment