Reading Time: 4 minutes

রমজান মাস শেষ হতে চলেছে,সেই সাথে দরজায় কড়া নাড়ছে খুশির ঈদ। ঘরে কিংবা অফিসে চলছে ব্যস্ততা। কিছুদিন পরেই শুরু হয়ে যাবে ঈদের ছুটি।কে না চায়, ঈদের দিনে যেন কোন কিছুর যেন কমতি না পড়ে? কত শত কাজ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে! কিন্তু ঈদের সময়গুলো বরাবরই কেমন ঝরের বেগে কেটে যায়। ঈদে ঘর কিভাবে সাজাবেন তার একটি প্ল্যান হয়তো করেই নিয়েছেন। শুধু কি ঘর সাজানোতেই ঈদ সীমাবদ্ধ? মোটেও না! কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে কি করবেন? কাজের তালিকা নিয়ে একটি হেডস আপ দিলে কিন্তু মন্দ হয় না। হাজার খানিক কাজ কিন্তু সময় খুব অল্প। রমজান মাসের শেষে কিভাবে নিবেন ঈদের প্রস্তুতি, চলুন তবে জেনে নেই।  

ঘর পরিষ্কার করুন

ফ্লোর মবিং এর ছবি
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখুন

রোজার ঈদ মানেই অন্তর পবিত্রতায় ছেয়ে যাওয়া। আর এই পবিত্রতা শুধু অন্তর অব্দি সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের উচিৎ আমাদের আশে পাশেও ছড়িয়ে দেয়া। তার প্রথম ধাপ হচ্ছে ঘর পরিষ্কার করা। ঈদের মত এমন পবিত্র কোন দিনকে বরণ করতে হলে আপনার ঘরেরও হওয়া চাই ঠিক ততোটাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ঘর ঝাড়া মোছা দিয়েই শুরু করা যাক। সময় নিয়ে পুরো ঘরের মেঝে, ছাঁদ এবং ফার্নিচার ঝেড়ে ফেলুন। তারপর যতো অপ্রয়োজনীয় জিনিষ রয়েছে সব গুলো আলাদা করে ষ্টোর রুমে রেখে দিন। অনেক সময় এই সব বাড়তি জিনিষগুলো ঘরকে অনেক গোমট করে রাখে। আপনি চাইলে কিছু ফার্নিচার পুনরায় রঙ করে নিতে পারেন। নতুন রঙের ছোঁয়া এক ঝলকেই আপনার ঘরের চেহারা বদলে দিবে। 

লিভিং রুম গুছিয়ে ফেলুন

লিভিং রুমের ছবি
লিভিং রুম সাজিয়ে রাখুন

ঘর পরিষ্কারের পরবর্তী যে ধাপ তাহলো, লিভিং রুমটি ঠিকঠাক করে ফেলা। কেননা ঈদের সময় এই জায়গায়টিতে বেশি সময় কাটানো হয়, হোক তা পরিবারের সাথে টিভি দেখে কিংবা চা হাতে নিয়ে গল্প করে বা মেহমান আপ্যায়ন করে, সবকিছু এখানেই হয়। বেশি কিছু নয়,সোফার নতুন কাভার ব্যবহার করতে পারেন, চাইলে কুশন কাভারও বদলে নিতে পারেন, বাহারি অহরহ সব সাইজের কাভার রয়েছে। কিছুদিন আগেই এসব যদি করে থাকেন তবে ঈদের আমেজ আনতে মেঝেতে কার্পেট কিংবা রাগ ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু সময় খুব অল্প তাই আরেকটি ছোট উপায়ও কিন্তু অনেক কাজের। তাহলো, ফুলদানির ফুল গুলো বদলে ফেলা, চাইলে ঘরের বিভিন্ন কোণে ফুলের কৃত্রিম গাছও রাখতে পারেন। লিভিং রুমের একটি কর্নার পুরো সবুজে ঘিরে দিতে পারেন। মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সবুজ গাছ রেখে দিতে পারেন। এই ছোট্ট সহজ উপায়ে খুব অল্প সময়ে লিভিং রুমের আবেশ পরিবর্তন করা সম্ভব।

ঈদের কেনাকাটা করে ফেলুন

শপিং ব্যাগের ছবি
ঈদের কেনাকাটার একটি তালিকা তৈরি করুন

ঈদের কেনাকাটা বলে কথা। পরিবারের সবার জন্য থাকে লম্বা উপহারের তালিকা, বাসার ছোট থেকে বড় সকল সদস্যের জন্য বরাদ্দ থাকে কিছু না কিছু। ঠিকঠাক কেনাকাটার জন্য জেনে রাখুন কার কি চাই। কে কি রঙ পছন্দ করে তা আগে থেকে জেনে তালিকা করে রাখুন। সেই সাথে সকলের পোশাকের সাইজ আগে থেকেই জেনে নিন। পরিবারের ছেলে এবং মেয়ে সদস্যের তালিকা আলাদা করে তৈরি করে নিন। এতে করে কেনাকাটা দ্রুত করতে সুবিধা হবে। যাকাতের কেনাকাটাও এই একই সাথে সেরে ফেলতে পারবেন। তালিকা তৈরি করার এই এক সুফল, আপনার বারবার শপিংমলে চক্কর কাটা লাগবে না। নিশ্চিন্তে পারফেক্ট পোশাক আশাক কিনে বাসায় ফিরবেন। ঈদের প্রস্তুতি তে কেনাকাটার ভূমিকা বিশাল। 

ঈদের বাজার সেরে ফেলুন  

ট্রলির ছবি
ঈদের আগেই বাজার সেরে নিন

দীর্ঘ ত্রিশ দিন সংযম করার পর এই একটি দিনে আমরা ভরপেট মজাদার নানা রকম খাবার খাই। সকাল শুরু হয় মায়ের হাতের তৈরি ফিরনী, জর্দা কিংবা সেমাই দিয়ে। তারপর সময় গড়ানোর সাথে সাথে এক এক করে পেটে পুরে নেই চটপটি, পুডিং ও বরফি। দুপুর কাটে বিরিয়ানি, পোলাও, রোষ্ট ও মাংস, ভাতে। রাতে খাওয়া হয় ফ্রাইড রাইস আর চাউমিন। এত এত খাবারের আয়োজন কোন চিন্তা ছাড়া করতে প্রয়োজন, ঈদের আগেই এই সবের বাজার সেরে ফেলা। কেননা ঈদের আগ মূহুর্তে খুঁজতে গেলে হয়তো দেখা যাবে কাঙ্ক্ষিত কোন রেসিপির এক প্রয়োজনীয় উপকরণ খুজেই পাচ্ছেন না। ঈদের প্রস্তুতি তে এমনটা যাতে না হয় তাই আগে থেকেই তালিকা তৈরি করে বেড়িয়ে পড়ুন ঈদের বাজার করতে। হাতের কাছে আছে অনেক সুপার শপ কিংবা কাঁচা বাজার।

নিজের জন্য সময় বরাদ্দ করুন

মেকআপের ছবি
নিজেকে সময় দিতে ভুলবেন না

ঈদের প্রস্তুতি নিতে এত কাজ করতে করতে এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক যে নিজের জন্য সময় পাচ্ছেন না। ঈদ সামনে রেখে নিজের যত্ন নেওয়াটা খুব জরুরী। কিন্তু, ঈদের ঠিক আগ মূহুর্তে যেকোন বিউটি পার্লারে না যাওয়াই ভালো। যেমন ভিড় থাকবে তেমনি কাজের মানও নেমে যেতে পারে। আর এমন বিশেষ দিনের আগে এত বড় রিস্ক না নেওয়াই ভালো। আপনি ঘরেই কিছু ঘরোয়া উপায়ে রুপচর্চা করতে পারেন। এগুলো বেশ উপকারী। মুখের জন্য আপনি ডাল বাটার সাথে কাঁচা দুধ এবং মধু মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করে ফেলতে পারেন। এটি আপনার মুখের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দিবে। আপনি চাইলে ঘরে বসেই করে নিতে পারেন ম্যেনিকিউর পেডিকিউর। কুসুম গরম পানিতে দুই চামচ শ্যাম্পু মিশিয়ে আধা ঘন্টা হাত পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর, লেবুর ছোট টুকরা হাতে ও পায়ে ঘষুন। দেখবেন আপনার হাত পা আগের থেকে অনেক উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। ঝলমলে হাতে মেহেদীর নকশা ফুটে ওঠে বেশ। চাঁদ রাতে মেহেদী আঁকতে অবশ্যই ভুলবেন না। মনে করে মেহেদী আঁকার আগেই চুলের পরিচর্যা সেরে ফেলুন নাহলে মেহেদীর রঙ হালকা হয়ে যাবে। চুলের জন্য তৈরি করতে পারেন প্রোটিন প্যাক। কিভাবে তৈরি করবেন ভাবছেন? টক দইয়ের সাথে একটি আস্ত ডিমের সাদা অংশ, কাঁচা মেহেদী এবং চা পাতা মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন তারপর চুলে মাখিয়ে দুই তিন ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন ভালো করে। দেখবেন চুল অনেক মসৃণ এবং ঝলমলে হয়ে উঠেছে।

কেমন লাগলো এই টিপসগুলো? আপনি কিভাবে নিচ্ছেন রমজান মাসের শেষে ঈদের প্রস্তুতি? এখান থেকে আপনার কাজে লেগেছে কোন টিপসটি? কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলবেন না। এমন আরও লেখা পড়তে সাবস্ক্রাইব করুন বিপ্রপার্টি ব্লগ। 

Write A Comment