Reading Time: 3 minutes

লিজ হোল্ড প্রপার্টির ক্ষেত্রে আপনি চাইলেই কিন্তু মালিকানা স্থানান্তর বা ওনারশিপ ট্রান্সফার করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে রাজউক এর বিধিমালা অনুযায়ী, লিজহোল্ড প্রপার্টি বিক্রি করতে হলে সবার প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে সেল পারমিশন এর। লিজহোল্ড প্রপার্টির মালিকানা স্থানান্তর বা ওনারশিপ ট্রান্সফার এর এটিই প্রথম ধাপ। প্রপার্টি বিক্রয় করা শেষে সকল লেনদেন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা শেষ করে একজন সেলার বা বিক্রেতা নির্দিষ্ট প্রপার্টির উপর থেকে তার মালিকানা ক্রেতাকে হস্তান্তর করেন। আর এই মালিকানা স্থানান্তরের জন্য বিক্রেতাকে প্রপার্টি বিক্রি বিষয়ক যে পারমিশন নিতে হয়, সেটিই মূলত সেল-পারমিশন লেটার হিসেবে পরিচিত। 

এক্ষেত্রে জেনে রাখা জরুরি যে, শুধুমাত্র লিজ হোল্ড প্রপার্টির জন্যই কিন্তু এই সেল পারমিশন নেয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। ফ্রি হোল্ড প্রপার্টির ক্ষেত্রে কিন্তু কোন ধরনের পারমিশন নেয়ার দরকার হয় না। 

লিজ হোল্ড প্রপার্টি কোনগুলো? 

সাধারণত যেসকল প্রপার্টি সমূহ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সিডিএ, মিনিস্ট্রি অব ওয়ার্কস বা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল হাউজিং অথোরিটি এর তত্ত্বাবধানে থাকে সে সকল প্রপার্টিই মূলত লিজহোল্ড প্রপার্টি হিসেবে পরিচিত। আর এই প্রতিষ্ঠানসমূহের আওতায় থাকা লিজ হোল্ড প্রপার্টিগুলোর জন্যই মূলত সেল পারমিশন নেয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে।   

সেল পারমিশন নেয়ার প্রক্রিয়া 

একজন প্রপার্টি বিক্রেতা হিসেবে ব্যক্তি নিজেই সেল পারমিশন নিতে পারেন। তবে কোন বিশ্বস্ত এবং সুপরিচিত এজেন্সির সহায়তায়ও আপনি চাইলে সেল পারমিশন নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে দ্রুততা এবং আস্থার সাথে আপনি সেল পারমিশনটি পেয়ে যাবেন এবং নির্ভরতার জায়গাটিও সুনিশ্চিত থাকবে। আপনি চাইলে বিপ্রপার্টির মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও সেল পারমিশন নিতে পারবেন। ফলে কাজের পুরো প্রক্রিয়াটি আরও সহজভাবে করা সম্ভব হবে।    

সেল পারমিশন নেয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ধাপ। চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক- 

  • সেল পারমিশন নেয়ার জন্য প্রথমেই সেল পারমিশন এর একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে হবে।
  • অ্যাপ্লিকেশন ফর্মে উল্লেখিত সকল তথ্যের ঘরগুলো সতর্কতার সাথে এবার পূরণ করে নিতে হবে। 
  • সকল তথ্য প্রপার্টি বিক্রেতা দ্বারা ভালোভাবে চেক করিয়ে নিয়ে, এবার সেলার উক্ত ফর্মে তার স্বাক্ষর দিবেন।
  • এ ধাপে সেল পারমিশন এর অ্যাপ্লিকেশন এর সাথে প্রয়োজনীয় অন্য সকল দলিলপত্র প্রস্তুত করে তা সেল পারমিশনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ, রাজউক, সিডিএ, মিনিস্ট্রি অব ওয়ার্কস বা ন্যাশনাল হাউজিং অথোরিটি এর কাছে জমা দিতে হবে। 

সেল পারমিশন লেটার

পরবর্তী ধাপ সমূহ- 

  • যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দলিলপত্র পৌঁছানোর পর, এবার সকল দলিলপত্র তারা যাচাই-বাছাই করে একটি ফার্স্ট লেটার ইস্যু করবে।
  • ফার্স্ট লেটার ইস্যু হয়ে যাওয়ার পর এবার ব্যক্তি নিজে অথবা কোন এজেন্সির সহায়তায় ফার্স্ট লেটারের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিডিএ, ন্যাশনাল হাউজিং অথোরিটি বরাবর নির্ধারিত পরিমাণ ফি বা টাকা জমা দিতে হবে। 
  • অতঃপর কর্তৃপক্ষ সব কিছু যাচাই-বাছাই করে ফাইনালি সেল-পারমিশনের দেয়ার প্রক্রিয়ায় ফাইনাল লেটার বা আপ্রুভাল দিয়ে দিবেন, যা সেল পারমিশনের ফাইনাল লেটার হিসেবে পরিচিত। 
  • এই ফাইনাল লেটার পাওয়ার পরই শুধুমাত্র মালিকানা হস্তান্তরের জন্য রেজিস্ট্রেশন করার পরবর্তী ধাপের কার্যক্রম শুরু করা যাবে। 

জেনে রাখা জরুরি 

তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে জেনে রাখা জরুরি যে, লিজহোল্ড প্রপার্টির ক্ষেত্রে ফাইনাল লেটার বা আপ্রুভাল পাওয়া ছাড়া মালিকানা হস্তান্তরের রেজিস্ট্রেশন করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর তাই সেল পারমিশন পাওয়ার পরবর্তী ২৯ দিনের মধ্যেই এই রেজিস্ট্রেশন এর কাজটি সম্পন্ন করতে হবে।  

ফ্রি হোল্ড প্রপার্টির ক্ষেত্রে কী করবেন?   

অন্যদিকে আপনার প্রপার্টি যদি হয় ফ্রি হোল্ড, সেক্ষেত্রে মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ফ্রি হোল্ড প্রপার্টির রেজিস্ট্রেশন কীভাবে করবেন বা সেল পারমিশন নেয়া জরুরি কিনা, সে সম্পর্কে জানেন তো? 

মূলত  ফ্রি হোল্ড প্রপার্টির ক্ষেত্রে মালিকানা হস্তান্তরের জন্য কোন ধরনের সেল-পারমিশন নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে বিক্রেতা সেল পারমিশন ছাড়াই সরাসরি রেজিস্ট্রেশন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যে সকল প্রপার্টি সরকারের আওতাধীন নয়, সেগুলোর জন্য কোন ধরনের পারমিশন নেয়ার প্রয়োজন হয় না। যেমন ধরুন, আপনি যদি বসুন্ধরা, বাড্ডা, ধানমন্ডি ইত্যাদি যে কোন এলাকার কোন জমির মালিক হয়ে থাকেন, তবে আপনার প্রপার্টি বিক্রয় করার সময়, প্রপার্টির সকল লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার পরই আপনি সরাসরি মালিকানা হস্তান্তর করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোন সেল-পারমিশন নেয়ার প্রয়োজন পড়বে না।  

আর তাই প্রপার্টি কেনাবেচা করার আগে সেল-পারমিশন কী এবং এর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নেয়া জরুরি। এতে করে প্রপার্টি কেনাবেচার প্রক্রিয়াটি হবে আরও সহজ এবং ঝামেলাহীন। 

Write A Comment

Author