Reading Time: 3 minutes

বছরের দুটি ঈদ! একটি ঈদুল ফিতর আর একটি ঈদুল আযহা। এ দুটি ঈদের মধ্যে সম্ভবত ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ কাটে রাজ্যের ব্যস্ততায়। বাসা যেমন ভর্তি থাকে মেহমানে তেমনি, থাকে মাংসের কাজে ব্যস্ত থাকি সবাই। এবং আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, ঈদের দিনগুলোতে কোন না কোনভাবে ঘর অপরিষ্কার হবেই। আর কয়েকটা দিন পরই কোরবানির ঈদ, আপনাদের  হয়তো রান্নাঘর প্রস্তুত! কারণ, এই রান্নাঘরের ওপর দিয়ে বেশি ঝড়টা বয়ে যায়! কমবেশি আমরা সবাই মাংস ভাগাভাগি থেকে শুরু করে মাংস গুছিয়ে ফ্রিজে রাখা, সব কাজ রান্না ঘরেই করে থাকি। তাই রান্নাঘর পরিষ্কার করা নিয়ে তেমন ভাবনা নেই, কারণ রান্নাঘর পরিষ্কারের কয়েকটি জাদুকরী টিপস ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গেছেন! ঈদের আগেই ঘরের কিছু কাজ যা আপনার নিজের করে ফেলা উচিত, সেগুলো হয়তো সবই করা শেষ! তাহলে এবার কি বাকী রইল? যেটার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি সেটিই বাকী রয়েছে। কোরবানি ঈদের পর ঘর পরিষ্কার করাটা অনেক জরুরী একটি বিষয়। ঈদের ব্যস্ততা কেটে গেলে, এবার একে একে পরিস্কার করে নিন, ঘরের প্রয়োজনীয় কিছু অংশ। কিভাবে জানতে পড়তে থাকুন! 

রান্নাঘর 

রান্না ঘর
রান্নাঘর পরিষ্কার করুন

মাংস ভাগাভাগি করার কাজে যে তৈজসপত্রগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো ডিশ ওয়াসার দিয়ে ভালমত ধুয়ে শুকিয়ে, তুলে রাখুন। মাংস কাটার সময় মাংস থেকে নিঃসৃত চর্বি, রক্ত এই তৈজসপত্রে যেন লেগে না থাকে। অহেতুক দূর্গন্ধ ছড়িয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করে এগুলো পরিষ্কার করুন। কোরবানিতে ব্যবহৃত ছুরি,বটি ও দা ভালোমত ধুয়ে কাপড় দিয়ে মুছে তারপর, তুলে রাখুন। ছুরি বা বটির গায়ে যদি বিন্দু পরিমাণ পানিও লেগে থাকে তাহলে মরিচা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজ  

 ফ্রিজ
ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করুন

কোরবানি ঈদে অন্যতম প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হচ্ছে ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজ। কোরবানি শেষ করে ভাগাভাগির পরই, সেগুলো ঠিকমত পরিষ্কার করে ফ্রিজে রাখা হয়। ঈদের দিন থেকে পরের কয়েকদিন বেশ ধকল যায় এগুলোর উপর দিয়ে। ব্যস্ততার জন্য কোন রকম মাংসের টুপলা গুঁজে রাখলেই যেন মুক্তি। কিন্তু এমন কাজে ফ্রিজের কতটুকু ক্ষতি হয় আমরা সেটা কখনও ভেবে দেখি না। এখন ভাবাটা জরুরী। মাংসগুলো নামিয়ে ভালমত পরিষ্কার করে আবার তুলে রাখুন। খেয়াল রাখবেন, কোন প্রকার রক্ত বা পানি যেন না থাকে! এই সমস্ত জিনিস সবময়ই দূর্গন্ধ সৃষ্টি করে। 

বসার ঘর বা শোবার  

দরজা খোলা হচ্ছে
বসার ঘর থেকে শুরু করে শোবার ঘর দুটিই সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ঠিকঠাক করে রাখুন

বছরের এই দুটি দিনে মেহমানদের আনাগোনা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। চায়ের কাপে আড্ডা চলতেই থাকে। প্রস্তুত করা থাকে নানা ধরণের খাবার। সারাবছর যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, এই দিনগুলোতে সবাই যায় প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটাতে। আর বেশিরভাগ সময় এই আড্ডাগুলো হয়ে থাকে বাসায়। ঈদের সময় আত্মীয় স্বজনদের বাসায় দাওয়াতে কিংবা ঘুরতে যাওয়া বাংলাদেশের অনেক পুরানা ঐতিহ্য। তাই আপনার বসার ঘর থেকে শুরু করে শোবার ঘর দুটিই সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ঠিকঠাক করে রাখুন। বিছানার চাদর, পর্দা, সোফার কভার এবং কুশন কভার সবকিছুই পুনরায় ধুয়ে, উঠিয়ে রাখতে পারেন। এবং নিয়মিত ব্যবহারের জিনিসগুলো আবার নামিয়ে নিন। কোরবানি ঈদের পর ঘর পরিষ্কার রাখার কোন বিকল্প নেই। 

পশু রাখার জায়গা 

ফ্লোর মবিং
পশু রাখার জায়গা পরিষ্কার করুন

যদিও শেষে লিখছি, কিন্তু কোরবানি ঈদে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। আপনার বাসা বা বিল্ডিং যেখানেই হোক, পশু রাখার জায়গা পরিষ্কার করার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই। এমনকি কোরবানি করার জায়গাটিও পরিষ্কার করা আপনার দায়িত্ব। কোরবানির আগে সব পশুকে বেধে রাখা হয় এবং নিয়মিত খাবার দেওয়া হয়, যার ফলে সেখানে জমে থাকে পশুর মল মুত্র এবং ঘাস,খড়। এগুলো থেকে অনবরত দুর্গন্ধ হয়, তাই সঠিকভাবে পরিষ্কার করা জরুরী। খেয়াল রাখবেন,পশুর রক্ত এবং অন্যান্য সব কিছু সঠিক স্থানে ফেলা উচিত। যাতে করে আবর্জনার গাড়ি সেগুলো সরিয়ে নিতে পারে। এছাড়া আপনি চাইলে মাটিতে গর্ত করে পশুর রক্ত বা অন্যান্য কিছু পুতে রাখতে পারেন। 

কোরবানি ঈদের পর ঘর পরিষ্কার করে ফেললে আপনি অনেকটা চিন্তামুক্ত হয়ে যাবেন। এই একটি কাজ সেরে ফেললেই আপনি নিয়মিত জীবনে নিশ্চিন্তে ফিরতে পারবেন। কেমন লাগল এই টিপসগুলো কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!  

Write A Comment