Reading Time: 3 minutes

রোদ, বর্ষা কিংবা ধুলাবালি মোটামুটি সবকিছু থেকেই একটু করে আড়াল করে রাখে পর্দা। পর্দার আড়াল থেকে আকাশ দেখতেও কিন্তু, বেশ ভালো লাগে! রাতের আকাশের চাঁদটা যখন একটু করে উঁকি দেয় আপনার ঘরের পর্দার আড়াল থেকে তখন কিন্তু অন্যরকম একটা আবহ তৈরি হয়ে যায়। সৌন্দর্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে হোক বা সুরক্ষা পর্দার ভূমিকা বরাবরই বেশি। ঘরের জন্য পর্দা কিনতে গিয়ে সবচেয়ে সুন্দর পর্দাগুলোই আমরা বেঁছে নিয়ে আসি কিন্তু কখনও ভাবা হয় না ঘরের সাথে কি মানাবে এই পর্দাটা? অনেক সময় তো এমনও হয় শোবার ঘরে দেওয়া হয়েছে ড্রয়িং রুমের পর্দা, এ এক অন্যরকম বিপাক। কোন ঘরের জন্য কেমন পর্দা প্রয়োজন কজনই বা জানে। পর্দা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জানতে হবে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস।

বেডরুম 

শোবার ঘর
শোবার ঘর

বেডরুমের জন্য সবসময়ই একটু ভারী পর্দা বাছাই কর ভালো। বেডরুমটা সবার কাছেই বেশ গোপন একটি জায়গা। আমরা এখানে একদম নিজের মত করে থাকতে পছন্দ করি। সেক্ষেত্রে পর্দাটা বাছাই করবেন একটু মোটা কাপড়ের যাতে করে বাইরে থেকে ঘরের ভেতরকার কিছু যেন সহজে দেখা না যায়। মোটা কাপড়ের পর্দা হলে ঘরের আলো তেমন একটা আসবে না এক্ষেত্রে সুবিধা হল, ঘরের ভেতরটা থাকবে অনেকটা ঠাণ্ডা। বেডরুম বলে যে তেমন করে সাজানো যাবে না তা কিন্তু নয়! বেডরুমেও থাকা চাই আভিজাত্যের ছোঁয়া। সেজন্য এই ঘরটির পর্দা হতে পারে, হালকা গোলাপি, সাদা, অফ-হোয়াইট। খাদি, পাটের কাপড় বা চেকের কাপড় হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। আজকাল ঘর সাজাতে কুচি বা সমান দু’ধরনের পর্দার চলই দেখতে পাওয়া যায়।

ড্রয়িং রুম ও ডাইনিং রুম 

বসার ঘর
বসার ঘর

ড্রয়িং রুমের জন্য দুই ধরনের পর্দাই ব্যবহার করা যেতে পারে। হালকা কিংবা গাঢ়। হালকা হলুদ, নীল, সবুজ ও গোলাপি ছাড়াও ক্রিম, বিস্কুট ইত্যাদি ভিন্নধর্মী কিছু রংও ব্যবহার করা যেতে পারে। আর বাচ্চাদের ঘরের জন্য কিছুটা গাঢ় এবং উজ্জ্বল রংগুলোই বেশি মানানসই। খাবার ঘরটা সবসময়ই এমন হওয়া উচিত যেখানে আলো বাতাসের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা থাকবে। কেননা, এই ঘরেই কিন্তু আপনি আপনার দিনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে কাজ সেটি করবেন। তাহলো খাওয়া দাওয়া। সুতরাং এই ঘরটি অন্ধকার হলে কিংবা একটু গমোট হলে মোটেও ভালো দেখাবে না। ই খাবার ঘরে হালকা কোনো পর্দা ঝুলিয়ে দিন। যেমন সৌন্দর্য বাড়বে তেমন আলোর চাহিদাও পূরণ হবে। এখানে সিনথেটিক পর্দা ব্যবহার করা ভালো। হতে পারে সেটা অফ হোয়াইট রঙের। হালকা রঙ ও হালকা ধরনের প্রিন্ট ভোজনশালায় নিয়ে আসবে সতেজতা। চাইলে টেবিল ক্লথের সঙ্গে মিলিয়েও পর্দা লাগাতে পারেন। 

পর্দার ধরন
পর্দার ধরন

“তবে পর্দা বাছাইয়ের আগে ঘরের আকার ও দেয়ালের রংয়ের বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। ঘরের রংয়ের সঙ্গে যদি পর্দার রং বেমানান হয় তাহলে দেখতে মোটেও ভালো লাগবে না। ঘরের আকার, দেয়ালের রং ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ঘরের জন্য পর্দা নির্বাচন করা প্রয়োজন। ঘরের দেয়াল, ছাদ ও মেঝের রং, আসবাবপত্রের ডিজাইন এবং রংয়ের সঙ্গে মানিয়ে পর্দার রং বাছাই করা উচিত। পর্দার রংয়ের কারণে ঘরের আকার ছোট বা বড় দেখায়। যেমন, গাঢ় রংয়ের পর্দায় ঘর ছোট দেখায়। তাই ছোট ঘরের জন্য হালকা রংয়ের পর্দা ব্যবহার করা ভালো।” জবড়জং ছাপার পর্দা ব্যবহারে ঘর অগোছালো দেখায়। হালকা রংয়ের এবং লম্বালম্বি ছাপার কাপড় পর্দা ব্যবহার করলে ঘর বড় দেখাবে। 

কোথায় পাবো ও দরদাম 

রাজধানীর নিউ মার্কেট, এলিফেন্ট রোড, মৌচাক, গ্রিন রোড, মোহাম্মদপুর, গুলশানের ডিসিসি মার্কেটের পাশেসহ বিভিন্ন জায়গায় পর্দা পাওয়া যায়। এ সব মার্কেটে পর্দার দোকান থেকে রেডিমেইড পর্দা কেনার পাশাপাশি পছন্দমতো কাপড় কিনে নিয়েও নিজের মনমতো ডিজাইনে পর্দা বানানো যাবে। এখন চাইলে বিভিন্ন ডিজাইনের লেইস, বোতাম বা লেয়ার হিসেবে পর্দা বানানো যায়। সাধারণত দেড়শ টাকা থেকে প্রতি পিস পর্দার দাম শুরু হয়। কাপড় এবং ডিজাইন ভেদে দাম এক হাজার টাকা বা বেশিও হতে পারে।

পর্দার রঙ কিংবা ঘরের টেক্সচার কেমন হবে তা কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করে কোন ঘরের জন্য পর্দা কিনছেন। ঘরের ভেতর কেমন আলো প্রয়োজন সেটা যাচাই বাছাই করে তখনই পর্দা কেনা উচিত। শীতকালে যেমন ঘরে আলো কম আসে তেমনি শীতকালেই কিন্তু আলোর প্রয়োজন হয় বেশি। 

Write A Comment