Reading Time: 3 minutes

ঘরের জন্য সঠিক রঙ বাছাই করা সহজ বিষয় নয়, কিন্তু আপনি যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা করেন সেটা আপনার ঘরের জন্য হতে পারে নজরকারা একটি সিদ্ধান্ত। অনেকেই আছি আমরা যারা ভাবি দোকানে গেলাম পছন্দের রঙ নিলাম ব্যস কাজ শেষ! কাজটা মোটেও এমনভাবে শেষ হওয়া উচিত নয়। দেয়ালের রঙ চাইলেই বদল করা যায় না, এর জন্য যেমন সময় প্রয়োজন তেমনি খরচও। ঘরের রঙ বাছাই করা মোটেও একদিনের বিষয় নয়। কিছু ধাপ রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করে তবেই ঘরের জন্য সঠিক রঙ বেঁছে নেওয়া সম্ভব। আর দেরি না করে চলুন সেই ধাপগুলো জেনে নেওয়া যাক। 

আগেই রঙ বাছাই করবেন না 

অনেকগুলা রঙের কৌটা

এটা খুবই স্বাভাবিক ঘরের রঙটা আগেই বাছাই করে নেওয়া। কিন্তু, এই কাজটাই আজ করতে মানা! হ্যাঁ, ঠিক পড়ছেন। আগেই ঘরের জন্য রঙ ঠিক করে ফেলবেন না। কমবেশি আমরা সবাই আগে থেকে রঙ ঠিক করে রাখি তারপর, দোকানে গিয়ে ভিড় জমাই। এতে কোন দোষ নেই কিন্তু, সর্বপ্রথম যা করা উচিত তা হল ঘরের ডেকোর অনুযায়ী রঙ মিলিয়ে নেওয়া। থিম, টেক্সচার, শিন এইসব যাচাই করে তবেই রঙ বাছাই করতে হয়। সুতরাং আগেই যদি একটা নির্দিষ্ট রঙ ঠিক করে নেন তাহলে ঘরের জন্য বেঁছে নেওয়া রঙ সঠিক নাও হতে পারে!     

একটা থিম নিয়ে আগান 

থিম শব্দ শুনে অনেকেই ঘাবড়ে যায়। ভেবে নেয় এমন ঝামেলা না করলেই হয়। কিন্তু, ঘরে থিমেরও প্রয়োজন আছে। থিম বলতে জাঁকজমক কিছু নয়। ধরে নিন ঘরের জন্য গল্প বেঁছে নিবেন। থিমের সাহায্য হাজার গল্প সহজেই বলে দিতে পারছেন। ধরুন, আপনার ঘরের জন্য যদি তুষারের মত সাদা গল্প বেঁছে নেন সেক্ষেত্রে দেয়ালের রঙ কিন্তু হওয়া চাই সাদা। থিম বেঁছে নিলে রঙ বাছাই করাও হয়ে ওঠে অনেক সহজ, আসবাবগুলো সেভাবেই মিলিয়ে রাখা যায়। ঘরের ডেকোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর এই ডেকোরে রঙের ভূমিকাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

টেস্টার ব্যবহার করুন

যে যে রঙগুলো আপনার পছন্দ সেগুলোর টেস্টার কিনে আনুন। এরপর একেক রঙ একেক দেয়ালে লাগিয়ে দেখতে পারেন কেমন দেখাচ্ছে। এমন করলে সুবিধা হয় কি একেক দেয়ালে আলোর প্রভাবটা কেমন তা আগে থেকেই দেখে নিতে পারছেন। চেষ্টা করবেন সাদা দেয়ালের  বিপরীত দেয়ালে রঙ না ব্যবহার করতে। তাহলে রঙের আসল প্রভাবটা বুঝতে পারবেন না। সাদা বরাবরই আলোর প্রভাবটা বাড়িয়ে দেয়। চাইলে দেয়ালে টেস্টারের পরিসরটা বাড়িয়ে নিতে পারেন। মানে এক হাত দেয়াল রঙ করার থেকে দুই তিন হাত রঙ করলে আপনি ভাল মত বুঝতে পারবেন রঙগুলো কেমন দেখাবে।

শুধু দেয়ালে না, আসবাবেও রঙ দিয়ে দেখুন 

দেয়ালের জন্য রঙ কিনবেন বলে শুধু যে দেয়ালেই টেস্ট করা যাবে তা কিন্তু নয়। ঘরের অতিগুরুত্বপুর্ণ অংশ হচ্ছে আসবাবপত্র। যে রঙটা চাইছেন ঘরের জন্য সেটা আসবাবের সাথে কেমন মানাবে সেটা জানাও কিন্তু দরকার। কিভাবে জানবেন ভাবছেন? খুব বেশি কিছু করার নেই। একটা সাদা ছোট বোর্ড পছন্দের রঙের টেস্টার দিয়ে রাঙিয়ে নিন এরপর একেকটি আসবাবের পাশে ধরুন। তাহলেই জেনে যাচ্ছেন এই রঙগুলো আসবাবের সাথে যাচ্ছে কিনা।

সঠিক টেক্সচার বাছাই করুন    

নীল রঙের কৌটা প্রথমত রঙ প্রণালী (কালার স্কিম) থেকে রঙ বাছাই করা। দ্বিতীয়ত, রঙ সাধারণত দুই ধরনের হয় এটি ভালো ভাবে বোঝা। তেল জাতীয় রঙ (ওয়েল বেসড) গুলো বেশি জনপ্রিয় তার স্থায়িত্ব এবং নমনীয়তার জন্য। তেল জাতীয় রঙ গুলো চকচকে এবং উন্নতমানের ফিনিশিং এর হয়ে থাকে যার কারণে, আপনার দেয়ালের টুকিটাকি অনেক কিছুই সহজেই ঢেকে ফেলা যায়। 

পানি জাতীয় রঙ (ওয়াটার বেসড) গুলো তেল জাতীয় রঙের মতন তেমন স্থায়ী না হলেও ব্যবহারগত দিক থেকে অনেকটাই সহজ। এ জাতীয় রঙে পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই, বিষাক্ত পদার্থের মাত্রা কম থাকে, সহজে শুকিয়ে যায় এবং সময়ের সাথে স্থিতিশীল থাকে। আপনি যদি দেয়ালের ওপর পানি জাতীয় রঙ ব্যবহার করতে চান তবে, তেল জাতীয় রঙের ফিনিশ অবশ্যই প্রয়োজন। রঙের টেক্সচার জেনে ঘরের জন্য সঠিক রঙ বাছাই করুন।

সমস্ত ঘরে একইরকম আবেশ রাখতে চাইলে ঘরের জন্য সঠিক রঙ বেঁছে নেওয়া বেশ জরুরি। এই বিষয়গুলো ব্যবহার করে ঘরের জন্য সঠিক রঙ বেঁছে নেওয়া যাবে সহজে। আপনার কাছে কোন বিষয়টি বেশি ভালো লেগেছে? কিংবা কোন বিষয়টা যোগ করা জরুরি। জানাতে কমেন্ট করুন ব্লগে।                                        

Write A Comment