Reading Time: 3 minutes

বেশ পুরনো একটি বাড়ি। বয়স প্রায় ১০-১২ বছর। আগের সময়কার পুরনো দিনের ডেকর এর মত সাদামাটা চেহারা। যেন পুরনো সময়ের স্মৃতি এখনও জীবন্ত আছে। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করতেই একবারে ভিন্ন পৃথিবী। একটু একটু করে সময় নিয়ে সাজানো বাসাটি। বাসা যদি সংস্কার করা কিছুটা কঠিন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ঘরের সাজে নতুনত্ব এনে দেখুন। রেনোভেশনের জাদুকাঠিতে ঘরের ভেতরটা কিন্তু, একদম বদলে ফেলা সম্ভব! জানতে চাচ্ছেন কিভাবে? পড়তে থাকুন……  

যেকোন কাজে হাত দেবার আগে যা করতে হবে সেটা হচ্ছে, প্ল্যানিং! কাগজে কলমে প্ল্যানিং করলে তবেই না ঘরের জন্য একটা চমৎকার সাজ দেয়া সম্ভব। সুতরাং, প্ল্যানিং মাস্ট!  

আসবাবের স্থান পরিবর্তন করুন  

সোফা
আসবাবের স্থানটা কিছুটা এদিক সেদিক করুন

আসবাব বাতিল করবার কোন প্রয়োজন নেই, কিছুটা স্থান পরিবর্তন করলেই হবে। কিছু কিছু পুরনো আসবাব ঘরের জন্য জাদুর মত কাজ করে। যেমন, পুরনো কফির টেবিল, দাদুর রকিং চেয়ার ইত্যাদি। এগুলো কখনই বদলে ফেলার কথা ভাববেনও না। এগুলোই তো দিন শেষে ঘরের গল্প বলবে। ঘরের কর্নারের খাট কিছুটা মাঝখানে রাখার কথা ভাবুন। দেখবেন ঘর আর আগের মত নেই। আসবাবের স্থানটা কিছুটা এদিক সেদিক করলেই হয়ে যাবে।   

দেয়াল রাঙিয়ে নিন

দেয়ালে লেখা
দেয়াল সাজিয়ে রাখুন

একটু  ভাবুন তো যদি ঘরের একটি বা দুটি দেয়াল রাঙিয়ে নেওয়া যায়, কেমন হবে? এতটুকু কাজ কিন্তু চাইলে আপনি নিজেই করে ফেলতে পারবেন। পছন্দমত রঙ নিয়ে ঘরের যেকোন পাশের দেয়াল রাঙিয়ে নিন দেখবেন ঘর আগের থেকে আরও সুন্দর হয়ে গেছে। নিজের পছন্দের উজ্জ্বল রং দিয়ে ছবি আঁকুন। ওয়ালপেপার বা দেয়ালে ছবি দিয়ে ঘর সাজান। দেয়ালে রাখতে পারেন ছবির ফ্রেম, কিংবা বাহারি নকশার ওয়ালম্যাট। কত কি করবার আছে আসলে। ঘরের সাজের ক্ষেত্রে দেয়ালের রঙের ভূমিকা ব্যাপক। চাইলে দেয়ালে আয়না ঝোলাতে পারেন।

আলো

আলো
বাহারি আলো

আলো! ঘরে আলোর প্রভাব অনেক। আলো মূহুর্তেই ঘরের চেহারা বদলে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ঘরে এতদিন যাবত কেমন আলো ব্যবহার হয়ে আসছে তার উপর নির্ভর করে নতুন কোন বাতির ব্যবস্থা করুন। যেমন ঘরে ব্যবহার হয়ে আসছে সাদা বাতি। তাহলে এবার বাছাই করুন মৃদু আলোর বাতি। ঘরের জন্য ল্যাম্প শেডও কিন্তু বেশ সুন্দর ডেকোর হিসেবে বিখ্যাত। এটা ঘরের ভেতর অন্য একটা আবহ তৈরি করে। এছাড়াও বাজারে পাওয়া যায় নানা রঙের বাতি লাল, নীল কিংবা হলুদ এগুলো ঘরের সাজের জন্য বেশ উপকারী।  

ফ্লোরিং 

ড্রয়িং রুম
ফ্লোরে রাগস ব্যবহার করুন

মেঝে বলে যে শুধু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন তাতেই হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়! একটু সাজ সজ্জা মেঝেরও দরকার। ফ্লোরে চাইলে অনেক কিছু করা যায়। আপনি আঁকতে ভালোবাসেন সেক্ষেত্রে, মেঝেতে এঁকে নিন মনের মত কোন দৃশ্য। হতে পারে আলপনা। অনুষঙ্গ হিসেবে ঘরের জন্য কার্পেট খুবই চমৎকার হতে পারে। খুবই শৈল্পিকতার সাথে তৈরি করা হয় বলে, দেখতে যেমন সুন্দর হয় তেমনি, মসৃণ অনুভবও হয়। সম্ভবত তারাই ঘরের জন্য কার্পেট চাইবেন না, যাদের কিনা উডেন বা টাইলসের মেঝে আছে। আর যারা বাসা ডিজাইন করছেন, তাদের লিস্টের প্রথমেই থাকে একটি চমৎকার কার্পেট। 

সবুজ রাখুন 

গাছ
সবুজ ছিটিয়ে রাখুন

ঘরের ভেতরে টুকরো টুকরো সবুজ ছিটিয়ে রাখা। ছোট ছোট গাছ ঘরের মধ্যে শান্তি বাড়িয়ে থাকে এবং ঘরকে করে তোলে অন্যরকম। সবুজ রঙটাই এমন একটি রঙ যা আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলবে দ্বিগুণ। ছোট মাটির টব কিংবা প্লাস্টিকের ছোট কোন পাত্রে গাছ রাখতে পারেন আপনি। এই ছোট গাছগুলো খুব বেশি সময় আর শ্রম নিবে না আপনার। কিছু গাছ আপনার জন্য বয়ে আনবে সৌভাগ্যবসার ঘরে ক্যাকটাস কিংবা বনসাই রাখতে পারেন। দরজার বাইরে পাম ট্রি রাখা যেতে পারে। দেয়ালজুড়ে পাতাবাহারও রাখতে পারেন।

ঘরের সাজে নতুনত্ব যেভাবেই আনুন না কিনা, আপনার ঘরের যে নিজস্বতা রয়েছে তা কিন্তু হারিয়ে ফেলা যাবে না। প্রতিটা ঘরেই রয়েছে কিছু না কিছু গল্প সেগুলোকে কখনও বদলে ফেলতে নেই। এমন সব গল্পকে আরও যত্নে রেখে দিতেই এই টিপসগুলো আপনার জন্য আনা। কেমন লেগেছে অবশ্যই আমাদের জানাতে ভুলবেন না। 

Write A Comment