২০২০ সাল আমাদের জীবনে এনেছে নানারকম নতুনত্ব! প্রিয়জনের ভালোর জন্য আমরা ঘরে থাকছি দিনের পর দিন। কী না জেনেছি এই বিগত কয়েক মাসে। জেনেছি বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছু প্রয়োজন নেই। পাশে প্রিয়জন আর কিছু প্রয়োজন থাকলেই খুব সহজেই স্বচ্ছন্দে বেঁচে থাকা সম্ভব। আমরা ঘরে থেকেই পালন করেছি বৈশাখ করছি রমজান। এছাড়া বেশ ভালো করেই করছি হোম অফিস। তাহলে ঈদ কেন বাদ যাবে? ঈদও হবে বরং আরও আনন্দে। ঘরে থেকেও ব্যাতিক্রমধর্মী ঈদ অয়োজন করা বেশ চমৎকারভাবেই সম্ভব। রমজান শেষে ঈদের প্রস্তুতি তো নিতেই হবে।
অসহায়দের সাহায্য করুন
আপনি চাইলেই এই ঈদটি হতে পারে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী। আমরা সবাই এখন ঘরে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছি না, প্রয়োজন ছাড়া কিছু কিনছিও না। বেঁচে যাচ্ছে অনেকগুলো টাকা, কেননা এই ঈদে বেঁচে যাওয়া সেই টাকা দিয়ে অসহায়দের পাশে দাড়াই। তাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণের খাবারের ব্যবস্থা করি। যাতে করে আমাদের সাথে তাদেরও ঈদ হয় শান্তিপূর্ণ। ঈদের জন্য রান্না করার সময় না হয় বেশি করে রান্না করলেন, যাতে করে পেট ভরে খেতে পারে আরও একটি পরিবার।
পছন্দের রান্না
ঈদের দিনের শুরুটা হোক মজাদার সব রান্না দিয়ে। চমৎকার সব রেসিপি আছে ঈদের দিনটিকে আরও স্মরণীয় করে তোলার জন্য। প্রিয়জনের পছন্দের খাবার রান্না করুন। সারা মাস রমাজান পালন করে এই দিনটি আমরা পাই, যেখানে পরিবারের সকলে মিলে মিশে একসাথে আনন্দ করে খেতে বসি। অনেকে রিচ ফুড খেতে বেশ পছন্দ করেন। আবার অনেকে আছেন সাদামাটা ভাত ডাল। রোজা রেখে সকলে মিলে সকালের নাস্তাটা আর করা হয়নি তাই ঈদের দিনের শুরুটা করুন মজাদার নাস্তা দিয়ে। বাড়ির ছেলেরা ঈদের জামাত শেষ করে আসলে সকলে ঈদের কোলাকুলি করে সকলে বসে মজাদার নাস্তা উপভোগ করুন। এর মাঝেও একটা সুন্দর সময় পার হয়ে যাবে। এছাড়া ঈদের পোশাক পরতে ভুলবেন না।
ঘর সাজানো
সমস্ত বাড়ি ঠিকঠাক করে ফেলা। বেশি কিছু নয়,সোফার নতুন কাভার ব্যবহার করতে পারেন, চাইলে কুশন কাভারও বদলে নিতে পারেন। কিছুদিন আগেই এসব যদি করে থাকেন তবে ঈদের আমেজ আনতে মেঝেতে কার্পেট কিংবা রাগ ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু সময় খুব অল্প তাই আরেকটি ছোট উপায়ও কিন্তু অনেক কাজের। তা হলো, ফুলদানির ফুল গুলো বদলে ফেলা, চাইলে ঘরের বিভিন্ন কোণে ফুলের কৃত্রিম গাছও রাখতে পারেন। লিভিং রুমের একটি কর্নার পুরো সবুজে ঘিরে দিতে পারেন। মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সবুজ গাছ রেখে দিতে পারেন। এই ছোট্ট সহজ উপায়ে খুব অল্প সময়ে ঘরের আবেশ পরিবর্তন করতে পারে। বাসা যদি সংস্কার করা কিছুটা কঠিন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ঘরের সাজে নতুনত্ব এনে দেখুন। রেনোভেশনের জাদুকাঠিতে ঘরের ভেতরটা কিন্তু, একদম বদলে ফেলা সম্ভব!
সবাই মিলে আড্ডা-খেলা
ঘর সাজানো শেষ, মজার খাবার দাবার ও তৈরি। এবার তাহলে কী বাকী রইল? নিজেকে একটু সাজিয়ে তোলা! পড়ন্ত বিকেলটা উপভোগ করতে নিজেকে একটু নতুন ধাঁচে সাজিয়ে নিন। এক শাড়ি, পাঞ্জাবী পড়ে নতুন করে সাজার এখনই সময়। বহুদিন এমন সাজের সুযোগ হয় না যেহেতু ঘরেই থাকবেন তাই এমন সাজ নেওয়াই যায়। সুন্দর করে সেজে ঘরের সবাই এক সাথে বেলকনিতে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। কিছু সুন্দর সময় কাটাতে পারেন। পাশের বাসার মানুষদের সাথে একটু আলাপ করা গেলে কিন্তু খারাপ হয় না! এরপর সবাই মিলে ছবি তুলে নিলেন, এই স্মৃতিটা ফ্রেমবন্দী করতে ভুলবেন না। লুডু কিংবা কোন ইনডোর গেমস খেলতে পারেন। সকলে মিলে সিনেমা বা নাটক দেখতে পারেন। দূরে থাকা প্রিয়দের ভিডিও কলে মনে করতে পারেন।
হাতে মেহেদি দেয়া
ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ অয়োজন এ কি করে এই অনুষঙ্গ বাদ যাবে? পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ছোট থেকে শুরু করে সব বয়সী মেয়েরাই ঈদের আগের রাতে মেহেদি দিয়ে থাকে। হাতে মেহেদি দেয়া ঈদের অন্যতম একটি সুন্দর কাজ। শহরের বেশীরভাগ মানুষ মেহেদি টিউব কিনে কিন্তু গ্রামে চিত্র কিছুটা ভিন্ন, গাছ থেকে মেহেদি পাতা সংগ্রহ করে পাটায় বেটে এরপরই হাতে দেয়া হয়। রঙ যত গাঢ় হবে হাত দেখতে ততোটাই সুন্দর লাগবে।
ব্যাতিক্রমধর্মী ঈদ অয়োজন ২০২০ ছিল এতটুকুই। আশা করি এই ঈদটি কাটুক নিরাপদে আপনি যেন পরিবার নিয়ে সুস্থ থাকুন। ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।