জীবনের বাস্তবতায় অনেকসময় আমাদের পড়াশোনার জন্য ছুটতে হয় নতুন শহরের উদ্দেশ্যে। নতুন পথের যাত্রা মানেই নতুন একটা চ্যালেঞ্জ। এখানে চ্যালেঞ্জটা কেবল নতুন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলাই নয়। যুক্ত হয় যে উদ্দেশ্যে আগমন নতুন এই শহরে, সেই পড়াশোনাটাও চালিয়ে নেয়া ঠিকঠাকভাবে। সব মিলিয়ে সুন্দরভাবে জীবনকে যাপণ করার চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কীভাবে মোকাবেলা করা যাবে এই চ্যালেঞ্জের? শুরু করুন প্রথমেই থাকার জায়গাটি নিজের মতো করে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে। যেহেতু আপনি একজন ছাত্র, হয় আপনি ডর্মে থাকবেন, অথবা থাকবেন দুজন বা একজন রুমমেটের সাথে রুম ভাগাভাগি করে। আপনার রুমমেট যেই হোন না কেন, থাকার পরিবেশটা অধিকাংশক্ষেত্রেই ঘরের মতো হয় না। সেক্ষেত্রে থাকার জায়গাটি নিয়ে ভাবা এবং সে অনুযায়ী গুছিয়ে নেয়াটা খুব জরুরি।
থাকার জায়গাটি যদি বেশ ছোট হয়, তাহলে সেটাকে গুছিয়ে নিতে খানিকটা বেগ পেতে হয়, বিশেষত আপনি যখন ঐ একই জায়গায় থাকছেন, ঘুমাচ্ছেন, পড়াশোনা করছেন অথবা অবসর কাটাচ্ছেন। একটা সময় এমন ছোট একটা রুম বা ডর্ম গোছানো কেবল চেয়ার, টেবিল, বিছানা, শেলফ আর কিছু পোস্টারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। তবে আধুনিক সময়ের ছাত্ররাও অনেক স্মার্ট। আধুনিক প্রযুক্তি এবং নান্দনিক সাজসজ্জায় অল্প পরিসরের এই জায়গাটাকে তাই অনেকেই গুছিয়ে নিতে চান রুচিশীলভাবে।
এই আর্টিকেলে আজকে আমরা আলোচনা করব কীভাবে আপনি সাজিয়ে গুছিয়ে নেবেন আপনার ক্ষুদ্র পরিসরের থাকার জায়গাটি, সেসব নিয়ে।
খাটের নিচের জায়গার সদ্ব্যবহার
অধিকাংশক্ষেত্রেই দেখা যায়, একটিমাত্র আসবাব দখল করে নিচ্ছে পুরো রুমের জায়গা। যে আসবাবটি আর কিছুই নয় বরং আমাদের শোবার খাট। এই সমস্যা সমাধানের উপায় কি? চেষ্টা করুন নিজের বিছানাকে একটু উঁচুতে তৈরী করতে। সাধারণত ঘরের সিলিং যথেষ্ট উঁচু হয়। ফলে আপনার খাটের উচ্চতা যদি একটু বেশিও হয়, তাতে কোনো অসুবিধা হবে না। এতে করে আপনি বিছানার নিচে অনেক বড় একটা জায়গা পেয়ে যাবেন। সেখানে আপনি রাখতে পারবেন ডেস্ক বা স্টোরেজের মতো করে নিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। অব্যবহৃত এই জায়গাটির সুন্দর পরিকল্পনায় সেটিই হয়ে উঠবে আপনার ওয়ার্কস্টেশন।
আসবাবের বহুমূখী ব্যবহার
বহুমূখী আসবাবের ব্যবহার ছোট জায়গা গুছিয়ে রাখতে খুব সাহায্য করে। বর্তমানে, বাজারে এমন অনেক আসবাব আছে যা একই সাথে দুই তিন রকম আসবাবের কাজ করে। দ্বিমূখী কাজের সোফা রয়েছে যেটাকে টেনে বিছানা করে নেয়া যায়। মাল্টি-ফাংশনাল আসবাব রয়েছে যা ইচ্ছেমত টেবিল, বসার জায়গা বা অটোম্যান হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আলাদা আলাদা ফার্নিচার না কিনে এ ধরণের আসবাব কিনলে স্বল্প পরিসরেই বেশ আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে নেয়া সম্ভব।
রুম অগোছালো রাখবেন না
জিনিসপত্র অগোছালো রাখা মানেই ঘরের জায়গা নষ্ট করা। তাই সবসময় নিজের জিনিসপত্র যথাস্থানে গুছিয়ে রাখুন। সঠিক জায়গায় সঠিক জিনিসটি গুছিয়ে রাখা মানে কেবল সুন্দর পরিবেশই তৈরি করবে না, বরং তা আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো খুব কম সময়ে খুঁজে পেতেও সাহায্য করবে। এতে করে আপনার জীবনযাপণ হবে সহজ আর ভাবনাহীন। এছাড়া, চাইলেই আপনার ঘরের অব্যবহৃত জায়গাটার দেয়ালে একটা হ্যাঙ্গিং শু র্যাক রাখতে পারেন। চেষ্টা করুন আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছু রাখার পরেও ঘরটি দেখতে যেন খোলামেলা লাগে। এতে করে মানসিক তৃপ্তিও পাবেন আপনি।
ক্ষণস্থায়ী ওয়ালপেপার
আপনি যখন কোনো ডর্মে অথবা রুম শেয়ার করে থাকছেন, সেখানে আপনার মুখোমুখি হতে হবে কিছু অপ্রিয় নিয়মের। দেয়াল রাঙানোতে থাকবে নিষেধাজ্ঞা। বারণ থাকবে দেয়ালের গায়ে কোনোরকম আঁচড় ফেলায়। অথচ ছাত্রজীবনের একটা বড় সময় কাটে একঘেয়ে ঐ দেয়ালে তাকিয়ে। তবে সব নিয়ম মেনে নিয়েও দেয়ালকে বর্ণিল করে তোলার অসংখ্য উপায় আছে। টেম্পোরাপি ওয়ালপেপার বা ওয়াল আর্ট লাগিয়ে বৈচিত্র্য আনতে পারেন দেয়ালে। আর এগুলো চাইলেই আপনি খুব সহজে তুলে ফেলতে পারবেন দেয়ালের কোনো ক্ষতি না করেই।
সাজিয়ে গুছিয়ে নিন নিজের মত করে, প্রতিনিয়ত
আপনি কী করে আপনার থাকার জায়গাটি সাজাবেন তার আসলেই কোনো আলাদা নিয়ম নেই। যেভাবে মন চায় সেভাবেই গড়ে নিন আপনার একান্ত জায়গাটিকে। যা আপনি চান, যেভাবে আপনি চান, নিজের রুচির সাথে মিল রেখে সেভাবেই সাজান প্রিয় জায়গাটিকে। আর আপনি যদি আপনি যদি একটু সৃজনশীল হন তাহলে ঘরের ফেলনা জিনিসগুলো ব্যবহার করে তৈরি করে নিতে পারেন নানারকম নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আর সৃজনশীল যেকোনো কিছুই আপনার ঘরের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।
তো, আপনি কী ভাবছেন? কীভাবে সাজাতে চান আপনার নিজের ছোট ঘরটিকে? আমাদের জানান নিচের কমেন্ট সেকশনে। নিয়মিত আপডেট পেতে এখনই সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ব্লগটি!