Reading Time: 4 minutes

প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই। বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য বা শিল্পক্ষেত্র মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই প্রতিটি শিল্পেই লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া যা প্রতিটি শিল্পকেই করেছে সমৃদ্ধ। আর প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে যে সব শিল্প সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে তার মাঝে অন্যতম হল রিয়েল এস্টেট সেক্টর বা আবাসন শিল্প। যেকোন বাড়ি বা প্রপার্টি খুঁজে বের করা থেকে দেখা বা ক্রয় বিক্রয় আগের চেয়ে অনেকটাই সহজ এখন। এর মূলে রয়েছে প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধন। এসব আবাসন প্রযুক্তি রিয়েল এস্টেট সেক্টরে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে ব্যবধান ঘুচিয়ে এনেছে অনেকাংশে। আমরা এরকম কিছু আবাসন প্রযুক্তি তালিকাবদ্ধ করেছি যেগুলো আবাসন শিল্পে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ধারণা করা হচ্ছে যে ভবিষ্যতের আবাসন সংক্রান্ত অভিজ্ঞতায় এগুলো বিশাল ভূমিকা রাখবে।

অনলাইনেই লিস্টিং সুবিধা

বিপ্রপার্টি
অনলাইনেই এখন করা যাবে লিস্টিং

বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়েই রিয়েল এস্টেট লিস্টিং নিয়ে কাজ করে এমন অনলাইন প্ল্যাটফরমের সংখ্যা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের বেশিরভাগই খুব নরমাল কিছু ডিজাইন ব্যবহার করে এবং ব্যবহারকারীদের তথ্য সরবরাহ করে। এই আবাসন প্রযুক্তি মানুষের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। মানুষ এখন মোবাইলেই দেখে নিতে পাচ্ছে শতশত অনলাইন লিস্টিং এবং নিজের প্রয়োজনমত খুঁজে নিতে পারছে প্রয়োজনীয় প্রপার্টি। বাসা ভাড়া দেয়া বা বিক্রির বিষয়টি আসলেই এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। ভাল কোন অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে গেলেই এখন দেখতে পাওয়া যায় সহজে ব্যবহার করার মত ফিচার যা খুব সহজেই মানুষ ব্যবহার করতে পারে। যে কোন প্রপার্টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যেমন প্রপার্টি কোথায় অবস্থিত, এর মালিক সম্পর্কে তথ্য, প্রপার্টির বিস্তারিত ছবি দাম ইত্যাদি এক নিমিষেই দেখে নেয়া যায় এসব ওয়েবসাইটে। এছাড়াও উন্নত সার্চ ফিল্টার ব্যবহার করতে পারলে খুব সহজেই খুঁজে নেয়া যাবে নিজের পছন্দমত প্রপার্টি। 

বিপ্রপার্টি ডট কম এমনই একটি অত্যাধুনিক অনলাইন প্ল্যাটফরম যেখান থেকে যে কেউ এসব সুবিধা উপভোগ করতে পারেন। অনলাইনেই কয়েকটি পছন্দের প্রপার্টি ঠিক করে সেগুলো স্বচক্ষে দেখানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করতে পারেন এখানে। এছাড়াও হোম লোন ক্যালকুলেটরের মত ভিন্নধর্মী সুবিধাও এখানে পাওয়া যায়।  

মোবাইলের কথা মাথায় রেখে বানানো ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ

মোবাইল হাসি
মোবাইলের কথা মাথায় রেখে নির্মাণ করা হচ্ছে নানান অ্যাপ

ইংরেজিতে “মোবাইল-ফ্রেন্ডলি” বলে একটি শব্দ আছে। মোবাইল হ্যান্ডসেটে ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে যেসব ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ ডেভেলপ করা হয় তাদেরকেই সাধারণত মোবাইল ফ্রেন্ডলি বলা হয়ে থাকে। আজকাল মানুষ ডেস্কটপ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের চাইতে মোবাইল ফোনে বেশি সময় কাটায়। তাই মোবাইল অ্যাপ এবং মোবাইল হ্যান্ডসেটে ঠিকভাবে কাজ করে এমন ওয়েবসাইট তৈরি করা আবশ্যক। আর এই প্রযুক্তিগত সুবিধা সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে আবাসন শিল্পেই। ভোক্তারা এখন চাইলেই যে কোন জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরণের প্রপার্টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পারেন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে। আবাসন প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় অনেক রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত অ্যাপও উন্মুক্ত হয়েছে যাতে একদিকে কোন ক্রেতা যেমন খুব সহজে তার কাঙ্ক্ষিত প্রপার্টি খুঁজে পাচ্ছেন, একজন বিক্রেতা বা এজেন্টও সহজেই তার প্রপার্টির বিস্তারিত তথ্য আপলোড করতে পারছেন।

আবাসন প্রযুক্তি এবং ড্রোন

আবাসন প্রযুক্তি হিসাবে ভি আর
নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত

আপনি যখন ঘরে বসেই প্রপার্টি দেখছেন, কোন নির্দিষ্ট প্রপার্টি সম্পর্কে আপনার প্রাথমিক ধারনাটি তৈরী হচ্ছে ছবি দেখেই। আর ইদানিং ড্রোন দিয়ে তোলা হচ্ছে চমৎকার সব ছবি। আবাসন প্রযুক্তি এই ড্রোনের ব্যবহার করে ছবি উঠানোর প্রক্রিয়ায় অনেক উপকৃত হচ্ছে। উঁচু কোন স্থান থেকে কোন বিশাল প্রকল্প দেখতে পেলে তার সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা সৃষ্টি হয়। ড্রোন ফটোগ্রাফি দিচ্ছে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে এমন অ্যারিয়েল ফটোগ্রাফির সুযোগ। এভাবে শুধু কোন প্রকল্প নয় বরং প্রকল্পের আশপাশের এলাকাটি সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যা পুরাতন প্রযুক্তিতে কোনভাবেই সম্ভব ছিল না।  

অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এ-আর) এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভি-আর)

এ আর
আবাসন শিল্পে ব্যবহৃত হচ্ছে এ আর

বর্তমানে কিছু স্মার্ট ডিভাইস এবং আধুনিক কিছু অ্যাপের সাহায্যে তৈরি করা যাচ্ছে অগমেন্টেড রিয়েলিটি এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি যা যথাক্রমে এ-আর এবং ভি-আর নামেও পরিচিত। অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে মোবাইলের ক্যামেরা ব্যবহার করেই আপনি বিশেষ ব্যবস্থায় নানা ধরণের অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। রিয়েল এস্টেট খাতে এর চমৎকার ব্যবহার হতে পারে। আগ্রহী ক্রেতা বা বিক্রেতা, দুজনেই যথেষ্ট উপকৃত হতে পারেন এই সুবিধা দিয়ে। 

অন্যদিকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভি-আর ও বদলে দিতে পারে আবাসন শিল্পের সংজ্ঞা। বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহার করে এখন ৩৬০ ডিগ্রি ছবিই তোলা সম্ভব যা একটি প্রপার্টি ভিউইং-কে করে তোলে আরও আকর্ষণীয়। চাইলেই এখন কোন বিক্রেতা আর বাসার ভার্চুয়াল ট্যুর তৈরি করে আপলোড করতে পারেন। একজন  ক্রেতা ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে সেই প্রপার্টি ভিজিট করতে পারেন এবং এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। 

থ্রি ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি

থ্রিডি প্রিন্টেড বাসা
আবাসন খাতে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে থ্রিডি প্রিন্টেন্ড প্রযুক্তির ব্যবহার

খুব সম্ভব থ্রি ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তিই হতে যাচ্ছে আগামী দিনের আবাসন শিল্পের বড় একটি নির্ণায়ক। থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি বাড়ি তৈরি করতে লাগা বিশাল সময় এবং অর্থের খরচ দুইই কমিয়ে আনতে পারে অনেকাংশে। অনেক কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিডি প্রিন্টেড বাসা নির্মাণও শুরু করেছেন। এবং অনুমিতভাবেই এতে খরচ যেমন কমছে, বাঁচছে সময়ও। তাই অনেকেই ভাবছেন, রিয়েল এস্টেট খাতে থ্রি ডি প্রিন্টিং টেকনোলজির সম্ভাবনা অসীম, এবং এটিই আগামীর আবাসন সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি। 

আবাসন প্রযুক্তি নিয়ে এই ছিল আমাদের লিস্ট। আপনার কাছে কী মনে হয়, আর কোন কোন প্রযুক্তি রিয়েল এস্টেট সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে? জানিয়ে দিন কমেন্টে।

Write A Comment