বছর ঘুরতে না ঘুরতেই, এ শহরের তালিকায় যোগ হয় আরও হাজার খানেক নতুন সংসার। দুই থেকে এক হওয়ার এ উৎসব ভালোবাসার মাস ফেব্রুয়ারিতে এসে যেন আরও বেশি অর্থবহ হয়ে ওঠে। কিন্তু দুই জন আলাদা মানুষ মিলে একটি ঘরকে আপন ঠিকানা করে নেয়ার ধাপগুলো অতটা সহজ নয়। বিশেষ করে প্রশ্নটা যখন নবদম্পতির ঘরের ইন্টেরিয়র এর।
ভিন্ন রুচির, ভিন্ন পছন্দের ও ভিন্ন ব্যক্তিত্বের দুইজন মানুষকে এসে মিলতে হয় ঠিক একটি জায়গায়। কিন্তু পুরোটা শুরু থেকেই শুরু করতে হয় বলে, এ শহরের অধিকাংশ সদ্য বিবাহিতদেরই থাকে কিছু সীমাবদ্ধতা। বিশেষত, কর্মজীবী দম্পতিদের সময়ের স্বল্পতা তো থাকেই। সেইসাথে, ভাড়া বাড়ি বা নিজের বাড়ি যাই হোক না কেন, অধিকাংশ সদ্য বিবাহিতরাই জায়গার স্বল্পতার কারণে হিমশিম খান মনের মতো করে ঘর সাজাতে।
আর এসব নানাবিধ সীমাবদ্ধতার কারণেই, তাদের জানা প্রয়োজন কেমন হবে নবদম্পতির ঘরের ইন্টেরিয়র এবং কীভাবে ঘরের জন্য পছন্দের ইন্টেরিয়রটি তারা করতে পারবেন। পুরোটা জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ ব্লগটি।
স্পেসের সঠিক ব্যবহার
অধিকাংশ নবদম্পতিদের জন্যই বাড়ি মানে ছোট ফ্ল্যাট। আর ছোট ফ্ল্যাট মানেই জায়গার স্বল্পতা। তবে, এই স্বল্প জায়গাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা সম্ভব সঠিক ইন্টেরিয়র প্ল্যানিং এর মাধ্যমে। এক্ষেত্রে ঘরের মেঝে যতটা সম্ভব খালি রাখুন। ছোট ঘরে সবকিছু আঁটসাঁট করে রাখলে, ঘর আরও গুমোট লাগে। তাই, নবদম্পতির ঘরের ইন্টেরিয়র করার শুরুর ধাপেই স্পেস ম্যানেজমেন্ট করতে হবে সতর্কভাবে। খুঁজে নিতে হবে জায়গা বাঁচানোর সহজ কিছু উপায়। প্রথমত, যতটা সম্ভব কম ফার্নিচার ও আনুষাঙ্গিক রাখুন। ভাবতে পারেন বিকল্প উপায়ও। মনে রাখবেন, জায়গা বাঁচানোর সহজ একটি উপায় হচ্ছে ঘরের ভার্টিক্যাল স্পেসকে ব্যবহার করা অর্থাৎ, মেঝে খালি রেখে দেয়াল ব্যবহার করা। যেমন, বেডসাইডে টেবিলের বিকল্প হিসেবে বিছানার পাশের সিলিং থেকে ঝুলিয়ে নিন হ্যাঙ্গিং শেলফ। এটা যেমন বেডসাইড টেবিলের কাজ করবে, তেমনি মেঝের স্পেস বাঁচাতেও সহায়তা করবে।
নতুন সংসারে রঙ বৈচিত্র্য
নবদম্পতির ঘরের ইন্টেরিয়র ভাবনায় রঙ এর ছোঁয়া থাকবে না, তা কী করে হয়! তবে ঘর যদি ছোট হয় তাহলে হালকা রঙের দেয়ালই বেশি মানাবে। কেননা হালকা রঙে ঘর বড় ও আলোকজ্জ্বল দেখায়। তাই সাদা, অফ হোয়াইট, হালকা নীল এ ধরনের রংগুলো বেছে নিন নিশ্চিন্তে। তবে, নতুন ঘরে অনেকেই চান রঙ বৈচিত্র্য। এক্ষেত্রে কোনো একটা দেয়ালে বিপরীত আরেকটি রং ব্যবহার করতে পারেন। তাতে ঘর হয়ে উঠবে আরও নান্দনিক। সেইসাথে ঘরের পর্দার জন্যও নীল, সবুজ কিংবা পছন্দের যেকোনো রঙের হালকা শেডটি বেছে নিন। পুরো মেঝেতে বিভিন্ন রকম কার্পেট না দিয়ে, হালকা রঙের ছোট রাগস বা থ্রো ব্যবহার করুন। ঘরের প্রতিটি অনুষঙ্গের রং নির্বাচনে, ছোট ছোট এই সতর্কতাগুলোই নবদম্পতিদের ঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
থাকতে হবে সামঞ্জস্য
শুরুতেই বলেছিলাম, নবদম্পতির ঘরের ইন্টেরিয়র মানেই ভিন্ন রুচির, ভিন্ন পছন্দের ও ভিন্ন ব্যক্তিত্বের দুইজন মানুষকে এসে মিলতে হয় ঠিক একটি জায়গায়। যদিও অনেক সময়ই নব দম্পতিরা যার যার ইচ্ছামত বিভিন্ন ডিজাইন ও স্টাইলের জিনিস দিয়ে ঘর সাজায়। কিন্তু, ঘরের এক একটা জিনিসের ডিজাইন ও স্টাইল যদি একেক রকম হয়, তাহলে ঘরকে দেখতে লাগে আরও বেমানান। তাই, সতর্ক থেকে দুজনে মিলেই একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মিনিমালিস্টিক, বোহো, কন্টেম্পোরারি ও মডার্ন সহ ঘরের জন্য নানা ধরনের ডেকোর স্টাইল রয়েছে। এক্ষেত্রে দুজন মিলে কোনো একটি স্টাইল বেছে নিতে পারলে সেটাই সামঞ্জস্য বজায় রাখার কাজটি অনেক বেশি সহজ করে দেবে।
আয়না ও আনুষাঙ্গিক
আয়না ঘরের মাঝে একধরনের ইলিউশন তৈরি করে। এতে ঘরের গভীরতা বাড়ে, ছোট ঘরকে বড় দেখায়। তাই নবদম্পতিদের ঘরজুড়ে এক বা একাধিক আয়না রাখুন। আর বেডরুমে রোমান্টিক আবহ তৈরি করতে রাখতে পারেন সুগন্ধি ক্যান্ডল ও ফুলসহ রুচিশীল বিভিন্ন অনুষঙ্গ। সাথে, ঘরের মাঝে মিউজিক সিস্টেম এর মতো হোম ডিভাইসগুলোও যোগ করতে ভুলবেন না। কেননা তা নবদম্পতিদের ঘরে বাড়াবে ভালো থাকার ও ভালো লাগার মাত্রা। চাইলে নিজেদের পোর্ট্রেট, কিছু পেইন্টিং দিয়েও দেয়াল সাজাতে পারেন। এতে ঘরের মাঝে দুজনেরই নিজস্বতার ছাপ থাকবে।
আপনিও কি সদ্য বিবাহিত? তাহলে উপরের টিপসগুলো কাজে লাগিয়ে প্রিয় মানুষটিকে সাথে নিয়ে সাজিয়ে ফেলুন আপনার বাসা। তবে, হাতে যদি ইন্টেরিয়র প্ল্যান করার মত সময়, সুযোগ বা দক্ষতা না থাকে তাহলে নিশ্চিন্তে আস্থা রাখতে পারেন বিপ্রপার্টি ইন্টেরিয়রের উপর। কেননা, নির্ধারিত সময়ে ও বাজেটের মধ্যে আপনার পছন্দের ইন্টেরিয়র করতে সব সময়ই রেডি আছে আমাদের অভিজ্ঞ ইন্টেরিয়র টিম। তাই, ভালোবাসার এই মাসে প্রিয় মানুষটিকে চমকে দিন পছন্দের ইন্টেরিয়র করার মাধ্যমে। বিপ্রপার্টি ইন্টেরিয়র সার্ভিস নিতে কল করুন- ০৯৬১২১১০০১১