Reading Time: 4 minutes

এক ঘেয়ে হয়ে থাকা ঘরে একটু নতুনত্ব আনার এক অনবদ্য উপায় হচ্ছে এই অ্যাকসেন্ট ওয়াল। একটি ঘরের সুন্দর কেন্দ্রবিন্দু বা সেন্ট্রাল পয়েন্ট হিসেবে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাকসেন্ট ওয়াল এর আইডিয়াটি করা হয়েছিল, ঘরের ভেতর স্নিগ্ধ ভাব আনা এবং একটি দেয়াল বিশেষভাবে অলংকৃত করার উদ্দ্যেশ্যে। কিন্তু ঘরের ভেতর বেশ সহজে মানিয়ে যায় দেখে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন অনেকেই নিজের ঘরেই তৈরি করে ফেলে অ্যাকসেন্ট ওয়াল। বছরের পর বছর এই অ্যাকসেন্ট ওয়াল এর নকশায় এসেছে বিপ্লব। একটু একটু করে নানারকম পদক্ষেপের জন্য  এখন বেশ সহজেই ঘরের ভেতর এই ওয়ালটি তৈরি করা যায়। চলুন দেখে নেই কিভাবে ধাপে ধাপে ঘরের ভেতর এই ওয়ালটি তৈরি করবেন…  

সঠিক দেয়াল নির্বাচন করা 

দেয়াল ঘড়ি যেকোন দেয়াল হুট করেই বেছে নেওয়া উচিত হবে না! যে দেয়ালটায় যেকোন সাজ বা নকশা ফুটে ওঠে সেটাই বেছে নিতে হবে। এখন ভাবছেন কোন দেয়ালটি আসলে অ্যাকসেন্ট ওয়াল হওয়া উচিত? ঘরে প্রবেশের সাথে যে দেয়ালটা সবার আগে আপনার চোখে পরবে সেটাই সেই ঘরের অ্যাকসেন্ট ওয়াল। তবে যে দেয়ালে আলো বেশি পরে সেটাই অ্যাকসেন্ট ওয়াল হোক তা প্রাকৃতিক দেয়াল বা কৃত্রিম। চেষ্টা করবেন যে দেয়ালে জানালা,দরজা বা অন্য কিছু আগে থেকেই রয়েছে এই সবকিছু এড়িয়ে যাওয়ার। আমরা ভেবে নিতে পারি আমাদের দেয়াল বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। এবং দেয়াল রাঙানোর কাজ শুরু করা যেতে পারে। 

কনট্রাস্ট যোগ করুন 

দেয়াল ও লাইট ঘরের ভেতর একটু আধটু রঙ ব্যবহার করে সহজেই ঘরকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা সম্ভব। আর এই দেয়াল রাঙিয়ে তুলতে আপনার এক গ্যালনের বেশি রঙ লাগবেও না। নিজের পছন্দমত নকশায় দেয়াল রাঙিয়ে তলুন। ঘরের দেয়ালা আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে কনট্রাস্ট যোগ করতে পারেন। ঘরের ভেতর রাখা আরও কিছু আসবাব দেখে নিন, তার সাথে মিলিয়ে দেয়ালে রঙ যোগ করুন। ব্যক্তিগতভাবে এক দেয়ালে নানারকম রঙ মিলিয়ে যোগ করা আমার ভীষণ পছন্দ। বাড়ির বাকি দেয়াল যদি গাঢ় রঙের হয়ে থাকে তাহলে কনট্রাস্টে আপনি হালকা রঙ ব্যবহার করবেন। এবং হালকা রঙের বিপরীতে  গাঢ় রঙ ব্যবহার করবেন। বিপরীত রঙ ব্যবহার করলে সহজেই ঘরের ভেতর যেকোন রঙই ফুটে উঠবে।

আর্ট ওয়ার্ক

ড্রয়িং রুম ঘরের যেকোন দেয়ালকে “ অ্যাকসেন্ট ওয়াল “ হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে আর্ট ওয়ার্কের জুড়ি নেই। যেকোন ধরণের আর্ট ওয়ার্কই একটা আর্টিস্টিক ভাব এনে দেয়। আর্ট ওয়ার্ক বরাবরই ভিজ্যুয়াল আগ্রহ তৈরি করে। দেখলেই জানতে ইচ্ছা করে ভেতরে কি গল্প লুকিয়ে আছে। এছাড়াও স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে এই আর্ট ওয়ার্কগুলো দেয়ালটি সহজে ফুটিয়ে তোলে।

গ্যালারি ওয়াল 

দেয়ালে ফটোফ্রেম ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে গ্যালারি ওয়ালের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আমরা সকলেই নিজের ঘর সাজাতে নানারকম ছবির গ্যালারি করতে পছন্দ করি। কিন্তু যেকোন কিছুই ছন্নছাড়া করে করলে ভাল দেখায় না সুতরাং আপনাকে একটা রঙের কথা মাথায় রেখে তবেই নকশা করতে হবে। আপনার দেয়াল যদি সাদা রঙের হয়ে থাকে তবে সেখানে কালো ফ্রেমের গ্যালারি বেশ মানাবে। ছবির গ্যালারি তৈরি করতে খেয়াল রাখবেন যেন একটা না একটা রঙ তাতে মিলিয়ে থাকে। নয়তবা খাপছাড়া লাগতে পারে। ছবির ফ্রেমেও একটা অ্যাকসেন্ট রাখার চেষ্টা করবেন। 

দেয়ালে তাক রাখুন 

বিল্ট ইন সেলভ তাকগুলো বেশ চমৎকার ভাবেই ঘরের ভেতর একাট সাজ তৈরি করে রাখে। বেশ মার্জিত ভাবেই ঘরের ভেতর সৌন্দর্য ধরে রাখে। বিভিন্ন রকমের তাক আছে বাজারে সেগুলো এনে স্টোরেজ স্পেস হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। সেই সাথে রঙের প্যালেট গুলো বেশ সুন্দর করে এই তাকগুলোকে ফুটিয়ে তোলে। আপনার ঘরে কেমন জায়গা রয়েছে এবং তাকে কেমন জিনিস ধরবে সেই হিসেব করে টাকা ব্যবহার করুন। তাক যেমন দেয়ালের রঙের সাথে মিলিয়ে রাখবেন তেমনি তাকে রাখা জিনিসগুলোও একটু মিলিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন। তাকে বই রাখতে পারেন, বিভিন্ন শোপিস রাখতে পারেন। ফুল বেশ মানাবে। 

অস্থায়ী ওয়ালপেপার

অস্থায়ী ওয়ালপেপার অস্থায়ী ওয়ালপেপারগুলো এই ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী এবং বলা চলে বাজেট ফ্রেন্ডলি। আপনি যদি অ্যাকসেন্ট ওয়াল ডিজাইন করতে চান বলে ভাবছেন, সেক্ষেত্রে এই অস্থায়ী ওয়ালপেপারগুলো বেশ উপকারী প্রমাণিত হবে। স্থায়ী ওয়ালপেপার নিখুঁত নকশার হয়ে থাকে যা আপনার ঘরে সহজেই এনে দিবে একটা স্টাইলিশ লুক। অ্যাকসেন্ট ওয়ালের উপর এই ওয়াল পেপার ব্যবহার করুন এবং দারুন একটি চমৎকার স্টেইটমেন্ট তৈরি করুন।

জ্যামিতিক আকার, আয়না, কাঠের তক্তা, কাপড় অ্যাকসেন্ট ওয়াল তৈরি করার জন্য শত শত উপায় রয়েছে। মনে রাখতে হবে আপনি কোনটা করতে চাইছেন? এরপরই তৈরি করে ফেলুন মনের মত একটি দেয়াল।

Write A Comment