দিনের একটা বড় অংশ আমাদের অফিসেই কেটে যায়। মাঝে কিছু সময়ের লাঞ্চ বিরতি, অতঃপর আবার সেই ডেস্ককেই ফিরে আসা। আর তাই দিনের গুরুত্বপূর্ণ ৮ থেকে ৯ ঘন্টা যেখানে কাটানো হয়, সে জায়গাটা নিজের মতো করে সাজিয়ে নিলে সারাদিন মন যেমন ফুরফুরে থাকবে, তেমনি পরিপাটি জায়গাটি আপনাকে কাজের প্রতি আরও আগ্রহী করে তুলবে। অফিসের ছোট স্পেসটি যেন বোরিং না লাগে, সে জন্য সুন্দর করে সাজিয়ে নিন পছন্দের কিছু জিনিস দিয়ে। আর তাই আপনার জন্য কাজটি কিছুটা সহজ করতে অফিস ডেস্ক সাজানোর টিপস নিয়ে চলুন কিছুটা ধারনা নেয়া যাক।
স্টেশনারি অরগানাইজার বাস্কেট
অফিস ডেস্ক সাজানোর টিপস এর মধ্যে সবার প্রথমই চলে আসবে স্টেশনারি অরগানাইজ করে রাখার বিষয়টি। কেননা, ডেস্কে যদি সব কিছু এলোমেলো ভাবে ছড়ানো থাকে, তবে তা দেখতে খুব গ্যাঞ্জাম মনে হবে। এমনকি কাজ করার সময় তৎক্ষণাৎ কোন কিছুই হাতের কাছে পাওয়া যাবে না। আর তাই একটি স্টেশনারি বাস্কেট কিনে নিয়ে সেখানে স্ট্যাপ্লার, পেপার ক্লিপ, পেন, পেন্সিল, রাবার, কাঁচির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রেখে দিন স্টেশনারি অরগানাইজ বাস্কেটে। এক্ষেত্রে স্টেশনারি আইটেম গুছিয়ে রাখতে বেত কিংবা কাঠের বাস্কেট কিনে নিতে পারেন।
গেজেট হোল্ডার
আমরা সবাই-ই কম-বেশি গেজেট ব্যবহার করে থাকি। অফিসের ডেস্কে এই গেজেটগুলো ছড়িয়ে না রেখে, বরং গেজেট রাখার জন্য কাস্টমাইজড গেজেট হোল্ডার ব্যবহার করতে পারেন। হেডফোন, মোবাইল, ট্যাব, চাবি, চার্জার রাখার জন্য এখন কাঠের এবং বোর্ডের দারুণ গেজেট হোল্ডার পাওয়া যায়। ছোট-বড় আকৃতির এই হোল্ডার গুলো থেকে আপনি বেছে নিন পছন্দেরটি।
মোটিভেশনাল নোট
একটি মোটিভেশনাল নোট আপনার মন ভালো করে দিতে পারে। কাজের চাপ, বিরক্তি, ব্যর্থতা কিংবা দারুণ কোন অর্জন; মোটিভেশনাল নোট আপনাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। কাজের সময়টুকু খারাপ-ভালো যেমনই যাক না কেন, মোটিভেশনাল নোট আপনার উৎসাহ যেমন বাড়িয়ে দেবে, তেমনি ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতেও সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে আপনি অনলাইন থেকে মোটিভেশনাল নোট ডাউনলোড করে তা কাঠের ফ্রেম করে রেখে দিন ডেস্কের উপরে। আপনার ডেস্কের পাশে যদি দেয়ালে ঝুলানোর ব্যবস্থা থাকে, তবে ডেস্কে না রেখে, দেয়ালেও হ্যাং করে রাখতে পারেন।
কালারফুল নোটবুক
একটি পেন আর একটি নোটবুক ছাড়া যেন অফিসের কাজ করাই অসম্ভব। আমরা যতই প্রযুক্তি নির্ভর হই না কেন, মিটিং এর সময় নোট নেয়া, রিসার্চের বিষয়গুলো নোটবুকের পাতায় লিখে রাখা কিংবা মনের অগোচরে আঁকিবুঁকি করা, এসব কিছুর জন্যই যে প্রয়োজন হয় একটি নোটবুকের। তবে অফিস ডেস্ক সাজানোর টিপস হিসেবে আপনি সাধারণ কোন নোটবুক না রেখে, বরং কালারফুল নোটবুক রাখতে পারেন। কালারফুল কাভার দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আর্টিস্টিক। আর তাই আপনার ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপের পাশে রেখে দিন একটি কালারফুল নোটবুক এবং পেন।
আয়না
আয়নায় নিজেকে দেখতে আমরা কে না ভালোবাসি! অফিসের ডেস্ক সাজানোর টিপস হিসেবে আপনি ডেস্কের উপর কারুকাজ করা কাঠের ছোট একটা আয়না রাখতে পারেন। ডেস্কে বসেই আপনি চট করে রেডিও হতে পারছেন। আবার শুধুমাত্র ডেকোরেশন আইটেম হিসেবেও আয়না রাখতে পারেন ডেস্কের একপাশে।
ফ্যামিলি ফটো
দিনের বেশিরভাগ সময়ই যেহেতু অফিসে কাটানো হয়, তাই আপনার অফিসের ডেস্কে রেখে দিন পরিবারের সাথে কাটানো সুন্দর কোন মুহূর্তের ছবি। যেহেতু ডেস্কের উপরে ফ্রেম রাখা হবে তাই ফ্রেমের সাইজটা বেশি বড় না হওয়াই ভালো। ছোট বা মাঝারি আকৃতির কাঠের ফ্রেমে ছবিটি সাজিয়ে রাখুন। আর ফটোফ্রেমের ঠিক পাশেই রেখে দিন ছোট সাইজের কোন ইনডোর প্ল্যান্ট।
পছন্দের বই বা ম্যাগাজিন
একটানা অফিসের কাজ করতে গেলে অনেক সময়ই একঘেয়ে বা বিরক্ত লাগে। এই সময়টায় ছোট একটা ব্রেক নিয়ে পড়ে নিতে পারেন পছন্দের কোন বই বা ম্যাগাজিন। আর তাই আপনার ডেস্কের এক কোণে একটি বাস্কেট রেখে তার মধ্যে বই এবং ম্যাগাজিনগুলো গুছিয়ে রাখুন, যেন কাজের ফাঁকে অবসরের সময়টুকুতে বই পড়তে পারেন।
দিনের বেশিরভাগ সময় যেহেতু অফিসে কাটানো হয়, তাই অফিসের ডেস্কটাও নিজের পছন্দের জিনিস দিয়ে সাজিয়ে রাখলে বেশ পজিটিভ একটা আবহ তৈরি হবে। আর তাই অফিস ডেস্ক সাজানোর টিপস অনুযায়ী সাজিয়ে নিন আপনার অফিসের ডেস্কটিও।