Reading Time: 3 minutes

জোরপূর্বক জমি দখল আমাদের দেশের জন্য অনেক বড় একটি ইস্যু। ভূমি দখল, নদী দখল আমাদের দেশের অনেক পুরানো একটি সমস্যা, বছরের পর বছর ধরে এই জোরপূর্বক জমি দখল চলে আসছে। বলাই বাহুল্য যে, দুর্নীতি, অপসংস্কৃতি, অবৈধ লেনদেন বা ক্ষমতার অপব্যবহারের মত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ভূমি অধিগ্রহণের সময় হরহামেশাই ঘটে থাকে। তবে, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এমন একটি সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে সে তুলনায় খুব কম আলোচনা হয়। হয়ত একারণেই এই ইস্যু এখনো প্রকটভাবে রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা রয়েছে এই লেখাটিতে। দেখুন কীভাবে আপনার সীমানার বাইরে সামান্য ভূমিও যদি আপনি দখল করেন তা নগরায়নের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

প্রতিবেশীর জমি দখল কী এবং তা কীভাবে থামানো যেতে পারে

ইমারত
অবৈধ ভূমি দখল রোধ করতে হবে যত দ্রুত সম্ভব

প্রতিবেশী বা আশপাশের জমি দখল বলতে মূলত বুঝায় কোন জমির মালিক যখন তার জমির সীমা ছাড়িয়ে পাশের জমির কিছু দখল করে নেন কিংবা সেখানে থাকা কোন কিছু সরিয়ে নিজের স্থাপনা নির্মাণ করেন। শুধু দখলই না, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাও এর মাঝে পরে। যেমন, বাসার গেট এমনভাবে নির্মাণ যাতে পাশের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অথবা বাগান করার নামে সামনের কিছু বাড়তি জায়গা দখল করে নেয়া। অর্থ্যাৎ অ-অনুমোদিতভাবে যে কারো জমি ভোগ দখল করা।   

অনেক সময় দেখা যায় এরকম জমি দখলের ঘটনা ঘটছে অনিচ্ছাকৃতভাবে। কোন প্রপার্টি মালিকের হয়ত তার জমি সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে হয়ত তার জমির সীমানা তিনি জানেন না, তা ভুলে বাড়তি জমি নিয়ে ফেলেছেন। এসব ক্ষেত্রে জমির কাগজপত্র এবং সার্ভে রেকর্ড ঘেটে বের করা যাবে জমির সঠিক পরিমাপ। এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে ভুক্তভুগী তার জমির অংশ ফেরত পাবার দাবী জানাতে পারেন।

সদিচ্ছা থাকলে এমন সমস্যা দুপক্ষ বসে নিজেরা নিজেরাই মিটিয়ে ফেলতে পারেন। তবে এভাবে যদি দুপক্ষ মতৈক্যে পৌঁছাতে না পারেন, যদি দুপক্ষের মধ্যেই সমস্যা চলতে থাকে তবে দ্বন্দ নিরসনে বিবাদমান পক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।

এছাড়া আরেক প্রকারের দখল রয়েছে যেখানে কেউ স্থাপনা নির্মাণের সময় সামনের বেশকিছু জায়গা দখল করে ফেলে। সাধারনত কোন প্রাইভেট প্রপার্টি বর্ধিত করতে গিয়ে পাবলিক স্পেস যেমন সাইডওয়াক বা রাস্তার কিছু অংশ দখল করে ফেললে এটি হয়। এটি অনেক বড় একটি ইস্যু কারণ এটি কোন ব্যক্তিমালিকানাধীন কারো সম্পত্তি দখল নয় বরং জনগনের সম্পত্তি দখল। এমনভাবে দখল করা কোন জায়গায় একবার দালান উঠে গেলে তার প্রতিকার করা অনেক কঠিন। কারণ এটি সম্পূর্ণ একটি এলাকার নকশা বদলে ফেলতে পারে। অনেকক্ষেত্রেই সক্রা এগুলোতে হস্তক্ষেপ করে এবং দরকারে পুরো স্থাপনাটিই গুড়িয়ে দেয়। আর যেহেতু অবৈধভাবে জায়গা দখল করে প্রপার্টির মালিক অপরাধ করেছেন, তাই তার সম্পত্তি ভেঙ্গে দিলেও হয়ত তিনি কোন ক্ষতিপূরণ পাবেন না।

জোরপূর্বক জমি দখল এবং এর প্রভাব

জোরপূর্বক জমি দখল
ভূমিদখল এখনো দেশের প্রধান সমস্যার একটি

অনেকেই এখনো এরকম টুকিটাকি জায়গা দখল করচেহ্ন এবং পারও পেয়ে যাচ্ছেন। এরূপ অপরিকল্পিত জায়গা দখলের প্রভাব বেশ সুদূরপ্রসারী। শুধু দেশের মানুষই নয় বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপরেও এর প্রভাব রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, এমন জায়গা দখলের হার যদি কমিয়ে আনা না যায়, মানুষ হয়ত প্রপার্টিতে বিনিয়োগের আগ্রহই হারিয়ে ফেলবে ভবিষ্যতে। প্রপার্টি কেনাবেচার উপরে বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে, সিস্টেমের উপরে বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে বাড়ি বা প্রপার্টি কিনতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা একসময় কমে যাবে এবং তার বৃহত্তর প্রভাব পড়বে আবাসন খাতের উপর।

অন্যদিকে এভাবে যাদের জমি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে তাদের, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ করতে হয় প্রপার্টি ফিরে পেতে। অনেকসময় দেখা যায়, দখলকারী অনেক পাওয়ারফুল কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। তাই সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পরে, হয়তবা চিরদিনেরমতই দখল হারায় তার সম্পত্তির।

এছাড়াও, মানুষ দখল করতে করতে পুকুর, নদীসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ও ভরাট করে ফেলে। তাই পরিবেশের উপর চাপও পরে প্রচুর।

সবকিছু মাথায় রেখেই বলতে হয়, নতুন প্রপার্টি কেনার সময় এমন সমস্যা সহজেই এড়ানো সম্ভব। কোন প্রপার্টি কেনার আগে যদি আপনার মনে হয় এই প্রপার্টির তথ্য সঠিক নয়, তিনি চাইলে একজন প্রফেশনাল প্রপার্টি এক্সপার্টকে দায়িত্ব দিতে পারেন বিষয়টি যাচাই করার জন্য। বিপ্রপার্টি.কম এ আমরা নিশ্চিত করি কোন প্রপার্টির মালিককেই যেন এমন সমস্যায় পড়তে না হয়। একারণে অন্য সব সাপোর্টে সাথে সাথে ক্রেতাকে আমরা দেই লিগ্যাল সাপোর্টও।

Write A Comment