Reading Time: 4 minutes

কয়েকদিন পরেই নতুন বছর। আর এই নতুন বছরকে বরণ করে নিতে আপনার পরিকল্পনার সীমা নেই। তাহলে সেই পরিকল্পনা ঘরের জন্য থাকবে না কেনো?এই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ঘরকে নতুন করে সাজিয়ে নিতে পারেন। অনেকে মনে করেন, ঘর সাজানো মানেই অনেক খরচ। ধারণাটি সঠিক নয়। স্বল্প খরচেই আপনার ঘর সাজিয়ে তুলতে পারেন নতুন ভাবে। এই ব্লগে সে কথা মাথায় রেখেই জানাচ্ছি নতুন বছরে ঘর সাজানোর টিপস। 

বদলে ফেলুন পর্দা

পর্দা
নতুন পর্দা একটি নতুন মাত্রা যোগ তো করেই, এতে এছাড়া পুরো বাড়ির লুকই যেন চেঞ্জ হয়ে যায়

নতুন বছরে ঘর সাজানোর টিপস এর মধ্যে প্রথমটি হলো ঘরের পর্দা বদলে ফেলা। নতুন পর্দা একটি নতুন মাত্রা যোগ তো করেই, এতে এছাড়া পুরো বাড়ির লুকই যেন চেঞ্জ হয়ে যায়। বাজারে সাধারণত বিভিন্ন সাইজের ও রঙের কাপড়ের পর্দা পাওয়া যায়; সুতি, চায়নিজ, সেরেয়ারস, বাঁশ বা বেত, নেট, মাদুর বা ভার্টিকাল বাইন্ড ইত্যাদি। পর্দার কাপড় কেনার সময় অবশ্যই দরজা-জানালার আকার-আকৃতি মেপে নেবেন। তা না হলে ছোট-বড় হলে ব্যাপারটা ভালো দেখায় না। গুলশান, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, মৌচাক, এলিফ্যান্ট রোড সব জায়গায়ই পর্দা পাওয়া যায়। ভালো হয় যদি ঘরের দেয়ালের রঙের সঙ্গে মিল রেখে পর্দা কেনা যায়।

ঘরকে উজ্জ্বল করতে চাইলে সাদা, নীল, আকাশি রঙের বিকল্প নেই। আর যদি চান ঘরের ভেতরটা থাকবে একটু আবছা তাহলে লাল, বেগুনি, খয়েরি যে কোনো গাঢ় রং ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঘরের পর্দায় হিজিবিজি ডিজাইন না থাকাই ভালো। হালকা কাজের মধ্যেই পর্দাগুলো হয়ে ওঠে অসাধারণ। আর নতুন বছরে পর্দা পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই ঋতুর প্রতিও খেয়াল রাখুন, যেন সব ঋতুতেই এটি মানিয়ে যায়।

পাল্টে ফেলুন বেডশিট 

চাদর
হালকা রংয়ের চাদর চোখের জন্য আরামদায়ক

বিছানার চাদরও আপনার রুচিকে তুলে ধরে। সারা দিনের ক্লান্তির পর আয়েশ করে ঘুমাতে বিছানায় যান সবাই। আর নতুন বছরে নতুন চাদর আপনার ঘরে যেমন নতুন আবহ সৃষ্টি করবে তেমনি আপনাকে দেবে প্রশান্তি। তাই নতুন বছরে ঘর সাজানোর টিপস এর তালিকায় এটি অবশ্যই থাকবে। 

সুতি চাদরের পাশাপাশি স্যাটিন, সিল্ক কাপরের চাদরও ঘরে ভিন্নতা আনতে পারে। হালকা রংয়ের চাদর চোখের জন্য আরামদায়ক। নতুন বছর উপলক্ষে দেশী ফ্যাশান হাউসগুলো থেকে নকশি কাঁথার বুননে তৈরি বা এম্ব্রয়ডারি করা চাদর কিনতে পারেন। 

নতুন রঙে রঙিন দেয়াল 

হলুদ দেয়াল
কোন রুম কীকাজে ব্যবহার হচ্ছে সেটির উপর নির্ভর করবে রং এর পছন্দ

দেয়াল রং করা মানে পুরো ঘর রং করা না। বরং বসার ঘরের কোনো একটি দেয়াল বা খাবার ঘরের অ্যাকসেন্ট ওয়াল রং করে ফেলতে পারেন সহজেই। হলুদের বিভিন্ন শেড বা পার্পলের ওয়ার্ম শেডগুলো বেছে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন, গাঢ় রং কিন্তু রুমের সাইজকে আরও ছোট করে তুলতে পারে। আর হালকা রং হলে রুমটি বড় মনে হবে। কোন রুম কীকাজে ব্যবহার হচ্ছে সেটির উপর নির্ভর করবে রং এর পছন্দ। ধরুন আপনার কাজের ঘরটি আপনাকে যেমন এনার্জি দেয়, তাই তাতে আপনি গাঢ় কালার করতে পারেন। উজ্জ্বল হলুদ বা কমলা হতে পারে সেঘরের রং। আবার এমন উজ্জ্বল রং যারা এড়াতে চান তারা বেছে নিতে পারেন ব্রাউন বা ধূসরের শেড গুলো।

ঘরে আনুন কুশন 

কুশন
কোন ঘরে কোন স্থানে ব্যবহার করতে চাইছেন, এর ভিত্তিতে কুশনের আকার বেছে নিতে হবে

শুধু কুশন দিয়েই এখন ঘরের চেহারায় আনা যায় নতুনত্ব। নতুন বছরে ঘর সাজানোর টিপস গুলোর মধ্যে তাই এটি থাকবেই কুশন সাজিয়ে রাখার পরিবেশনাতেও যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন ঢং। বড় সোফা হোক বা নিচু, ঘরে ডিভান-শতরঞ্জি, যা-ই রাখা হোক, কুশন থাকবেই। 

বসার ঘর ছাড়াও শোয়ার ঘর আর শিশুর ঘরে কুশন রাখতে পারেন। থাকতে পারে ঘর বা বারান্দার এক কোণে রাখা দোলনাটাতেও। নানান স্থানে ব্যবহারের উপযোগী কুশন পাবেন অনায়াসেই। শুধু অন্দরসজ্জার বাকি দিকগুলো খেয়াল রাখুন কুশন কভার কেনার সময়, তাহলে ঘর সাজানোর সময় আর আলাদা করে ভাবতে হবে না। কোন ঘরে কোন স্থানে ব্যবহার করতে চাইছেন, এর ভিত্তিতে কুশনের আকার বেছে নিতে হবে। একটি জায়গার জন্য ভিন্ন নকশায় তৈরি একই রঙের কুশন কভার বেছে নেওয়া যায়। ভিন্ন রঙের কাপড়ে একই নকশা থাকলে তা-ও সুন্দর দেখাবে। এমনকি রং বা নকশায় মিল না থাকলেও অন্তত একই কাপড়ে তৈরি কুশন ব্যবহার করা উচিত। একেবারেই মিল না রেখে নানান ধরনের কুশন বেছে নিলে তা ভালো দেখায় না।

ফার্নিচারে আনুন ছোটখাটো পরিবর্তন 

কাউচ
বসার ঘরে যোগ করতে পারেন উজ্জ্বল রঙের কোনো কাউচ বা ডিভান

পুরো বাসার ফার্নিচার যে বদলে ফেলতে হবে তা কিন্তু নয়। তিন ভাবে ফার্নিচারের অদল-বদল করা যায়। এক, চাইলে টুকিটাকি কিছু ফার্নিচার কিনে ফেলতে পারেন। যেমন, বসার ঘরে যোগ করতে পারেন উজ্জ্বল রঙের কোনো কাউচ বা ডিভান। বারান্দায় রাখতে পারেন নতুন ডিজাইনের কোনো দোলনা। এমন দৃষ্টি আকর্ষণ করা একটি ফার্নিচারও ঘরের রূপ বদলে দিতে পারে। ফার্নিচারের মাধ্যমে পরিবর্তন আনার দ্বিতীয় উপায় হলো, পুরোনো ফার্নিচারকে জায়গা দেয়া। চাইলেই আপনার পুরোনো বাড়ি থেকে বা মা-বাবার কাছ থেকে বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পুরোনো ফার্নিচার ঘরে আনতে পারেন আপনি। তাতে ঘরে বেশ ভিন্টেজ আবহ সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে তৃতীয় উপায় হলো, কিছু ফার্নিচার বিক্রি করে দিয়ে ঘরের স্পেস বাড়ানো। তাতে যে ফার্নিচারগুলো থেকে যাবে সেসবের স্থান পরিবর্তন করে নতুন লুক আনতে পারেন আপনি। 

নতুন বছরে ঘর সাজানোর টিপস গুলো আপনাকে দেবে কম খরচে, সহজেই ঘরে ভিন্ন আবহ সৃষ্টির সুযোগ। এ সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে লিখতে পারেন আমাদের কমেন্টস বক্সে! 

Write A Comment