অ্যাপার্টমেন্ট কেনার পরিকল্পনা করছেন? নির্মাণ সামগ্রীর চড়া দামের এই সময়ে অনেকেই অ্যাপার্টমেন্ট কেনার পরিকল্পনার রাখছেন পুরাতন বা ব্যবহৃত অ্যাপার্টমেন্ট। ব্যবহৃত অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সুবিধা ও অসুবিধা দুটিই আছে। তবে ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়ও রয়েছে বেশ কয়েকটি। এই বিষয়গুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করে তবেই প্রপার্টিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। তবে চলুন আজকের ব্লগ থেকে জেনে নেই ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে বিবেচ্য বিষয় সমূহের বিস্তারিত।
প্রপার্টির মূল্য কমে যাওয়া
প্রপার্টি কেনার ক্ষেত্রে অনেকেই ইদানিং ব্যবহৃত প্রপার্টির উপর নির্ভর করছেন। হুটহাট করে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়ি কেনার স্বপ্ন যখন ম্লান হয় হয় অবস্থা, এরকম ক্ষেত্রে গ্রাহকেরা আরও বেশি ঝুঁকছেন ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার দিকে। এ ধরনের ক্ষেত্রে একটি নতুন প্রপার্টির চেয়ে ব্যবহৃত প্রপার্টির মূল্য কম হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। কেননা, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার প্রভাব পুরাতন বা ব্যবহৃত প্রপার্টির উপর না পড়লেও এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে নতুন করে নির্মিত প্রপার্টির উপর। তবে ব্যবহৃত প্রপার্টির মূল্য যদি কমে যায় অথবা যেই মূল্যটা চাওয়া হচ্ছে সেটা অনেক বেশি লাভজনক বা কম মনে হয়। তবে সেক্ষেত্রে প্রপার্টি বিষয়ে অবশ্যই আরও ভালোভাবে খোঁজখবর করতে হবে। কেননা, ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে বিবেচ্য বিষয় এর মধ্যে এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট।
লিখিত চুক্তি না থাকা
যখন আপনি কোন প্রপার্টিতে এত টাকা বিনিয়োগ করছেন, তখন মৌখিক কোন চুক্তির উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া কখনোই বুদ্ধিমানের মতো কাজ হবে না। ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে বিবেচ্য বিষয় এর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হল লিখিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করা। লিখিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করার ফলে প্রতিটি বিষয়ের রেকর্ড লিখিতভাবে দলিলে উল্লেখ করা থাকবে, যা কিনা চাইলেও পরবর্তীতে পরিবর্তন করা যাবে না, অথবা যে কেউ চাইলেই তা অস্বীকার করতে পারবে না। আর তাই নিশ্চিন্তে বিনিয়োগের জন্য লিখিত চুক্তি থাকা অত্যন্ত জরুরি।
ফাউন্ডেশনে ফাটল ধরা
ব্যবহৃত বা পুরাতন প্রপার্টি কেনার আগে প্রপার্টির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে নেয়া অনেক জরুরি। কেননা, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরনো প্রপার্টিতে অনেক ধরনের সমস্যা থেকে যায়। এত টাকা বিনিয়োগ করার পর যদি পরবর্তীতে প্রপার্টির বিভিন্ন সমস্যা সামনে আসে, তবে আসলে কিছুই করার থাকে না। যেমন ধরুন অ্যাপার্টমেন্টের কোন অংশে যদি ফাটল থাকে, তবে বিষয়টাকে কিন্তু কোনভাবেই হালকাভাবে নেয়া যাবে না। কেননা ফাটলটা কতটা গভীর তা আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি কোন ফাটল আধা ইঞ্চির বেশি হয়, তবে তা অবশ্যই কোন বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে এবং তার মতামত নিয়ে তবেই প্রপার্টি কেনার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রপার্টি দীর্ঘসময় ধরে বিক্রি না হয়ে পড়ে থাকা
কোন প্রপার্টি যদি দীর্ঘসময় ধরে বিক্রি না হওয়া ছাড়া পড়ে থাকে, তবে কেন তা বিক্রি হচ্ছে না এই বিষয়টি খুব সহজে নির্ধারণ করা বা জানা সম্ভব নাও হতে পারে। প্রপার্টি যদি অনেক দামী হয়, তবে তা অল্প সময়ের মধ্যে বিক্রি নাও হতে পারে। কিন্তু এছাড়া আর কী কী কারণ থাকতে পারে কোন প্রপার্টি দীর্ঘসময় ধরে বিক্রি না হওয়ার পেছনে, তা বের করা ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে বিবেচ্য বিষয় এর মধ্যে অন্যতম আরেকটি।
প্রপার্টির আশেপাশের অবস্থা
প্রপার্টি যে এলাকায় অবস্থিত এর আশেপাশের অবস্থা কেমন? আশেপাশে কন্সট্রাকশনের কোন কাজ চলছে কিনা বা উক্ত এলাকা থেকে শহরের অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা কতটা উন্নত ইত্যাদি বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। রেসিডেন্সিয়াল এরিয়াতে প্রপার্টি হলে সেখানে কয়টি অ্যাপার্টমেন্ট খালি পড়ে আছে বা কতদিন ধরে তা খালি পড়ে আছে ইত্যাদি বিষয় সমূহ ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়ের মধ্যে অন্যতম।
ব্যবহৃত প্রপার্টি কেনার আগে প্রপার্টির প্রতিটি দিক অত্যন্ত ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখে, তবেই প্রপার্টি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। কেননা, প্রপার্টি বিক্রেতার কাছ থেকে যেকোনো কথা শুনে খুব সহজে সন্তুষ্ট না হয়ে বরং, সময় নিয়ে ভালোভাবে দেখেশুনে তবেই প্রপার্টি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বুদ্ধিমানের মতো কাজ।