Reading Time: 3 minutes

বাংলাদেশের মাঝে বিনিয়োগের জন্য সেরা সিদ্ধান্ত হতে পারে রিয়েল এস্টেট। তবে প্রপার্টিতে বিনিয়োগের আগে প্রপার্টির ধরণ বোঝা ও এর আইনী প্রক্রিয়াগুলো কেমন সে বিষয়েও ধারণা থাকা জরুরি। এক্ষেত্রে প্রথম প্রশ্নটি আসে প্রপার্টি  আসলে কত রকমের। মালিকানা ও আইনী প্রক্রিয়া বিবেচনায় বাংলাশের প্রপার্টিকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ লিজহোল্ড প্রপার্টি ও ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি।  লিজহোল্ড প্রপার্টি ও ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি কেন আলাদা? এ ধরনের প্রপার্টি ক্রয় ও বিক্রয়ের আইনি প্রক্রিয়াতেই বা ভিন্নতা কতটুকু? এসব প্রশ্নের বিস্তারিত জানাব আজকের আর্টিকেলে।

বিনিয়োগের জন্য সেরা সিদ্ধান্ত হতে পারে রিয়েল এস্টেট

লিজহোল্ড প্রপার্টি

রাজউক  বা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হচ্ছে রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের জন্য নিবেদিত একমাত্র সরকারি সংস্থা।  রাজউকের আওতাধীন প্রপার্টিগুলোকেই আসলে বলা হয় লিজহোল্ড প্রপার্টি। আসলে ঢাকার মাঝে রাজউক এর তত্ত্বাবধানে থাকা কোন জমি বা প্লটই বিক্রি হয় না বরং তা ১০০ বছরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। এটি সরকার অনুমিত লিজের মাধ্যমে নিতে হয়। অর্থাৎ রাজউকের প্রপার্টি কেনা মানে কিন্তু সারাজীবনের জন্য কিনে নেয়া নয়, বরং ১০০ বছরের জন্য লিজ নেয়া। আর  এ ধরনের প্রপার্টিগুলোতে যে কোনও ধরণের কেনা, বেচা বা নির্মাণের ক্ষেত্রে পূর্বঅনুমোদন এবং অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। প্রপার্টি যদি রাজউকের তত্ত্বাবধানে থাকে, তবে তা অবশ্যই লিজহোল্ড প্রপার্টি এটি কেনার জন্য আপনাকে অবশ্যই কয়েকটি নির্ধারিত আইনী প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে।  

লিজহোল্ড প্রপার্টি কেনার ক্ষেত্রে কয়েকটি জরুরি বিষয়

লিজ ডিড বা লিজ দলিলই হচ্ছে মালিকানার প্রমাণ

লিজহোল্ড প্রপার্টি কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি হচ্ছে রাজউকের লিজ ডিড বা লিজ দলিল। এই দলিলটিই হচ্ছে মালিকানার প্রমাণ। লিজহোল্ড প্রপার্টি কেনা বেচার  আগে এই গুরুত্বপূর্ণ কাগজটিতে বিক্রেতার নাম অবশ্যই ভেরিফাই করতে হবে। এই দলিলেই প্রপার্টি ধরণ উল্লেখ থাকে এবং বিগত ২৫ বছরের ইতিহাস এতে রেকর্ড রাখা হয়। যার সাহায্যে আপনি এর পূর্ববর্তী মালিকদের সম্পর্কেও জানতে পারবেন।  রাজউক অধীনস্থ যে কোনো প্লটে যেকোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করার জন্যও প্রয়োজন হয় অকুপেন্সি সার্টিফিকেট। যা রাজউক থেকে সংগ্রহ করতে হয়। 

ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি

ঢাকায় প্রপার্টি
ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি মানে হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রপার্টি

ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য মালিক ব্যতীত অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের হোল্ড থেকে মুক্ত থাকে। অর্থাৎ ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি মানে হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রপার্টি যা রাজউক বা অন্য কোন সংস্থার অধীনস্থ নয়। যেহেতু এ ধরনের প্রপার্টি ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং এর জন্য কোন নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ নেই, তাই এ প্রপার্টিগুলো নিয়ে লেনদেন করার সময় লিগ্যাল ডকুমেন্ট থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে আপনাকে আরো বেশি সচেতন থাকা উচিৎ। 

ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি কেনার ক্ষেত্রে কয়েকটি জরুরি বিষয়

ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি নিজের নামে রেজিস্ট্রি হওয়ার পর মিউটেশন করে নিতে ভুলবেন না

যে কোনো ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি কেনার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হচ্ছে মালিকানা দলিল। যে কোন ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তির মূল মালিকানার প্রমাণ হল এই রেজিস্ট্রেশন কপি। এটি অনেকটা রাজউক মালিকানাধীন প্রপার্টিগুলোর লিজ ডিলের মতো। পার্থক্য হচ্ছে, যেখানে লিজহোল্ড প্রপার্টির মালিকানা ১০০ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ সেখানে, ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি কেনা মানেই আজীবনের জন্য প্রপার্টির মালিক হওয়া, যদি না আপনি পরবর্তীতে তা দান বা বিক্রি করে থাকেন।

প্রতিটি এলাকার ল্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অফিস মালিকানা দলিল এর অনুমোদন দেয় যার উপর ভিত্তি করে প্রপার্টির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়। সাধারণত এই রেজিস্ট্রেশন রেকর্ডটির দুটি কপি জারি করা হয়, একটি প্রপার্টির নতুন মালিক হিসেবে তা আপনার কাছে থাকবে, এবং অন্যটি বরাদ্দ থাকবে রেজিস্ট্রি অফিসের জন্য।  তাই,  কেনার আগে এ ধরনের প্রপার্টির দলিল ও ণথিপত্র ভেরিফাই করার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে হয় এবং বিক্রেতার দেয়া মূল মালিকানা দলিলের কপির সাথে রেজিস্ট্রি অফিসের কপি মিলিয়ে দেখতে হয়।  

মিউটেশন হল আরেকটি সরকারী রেকর্ড যেখানে প্রতিটি প্রপার্টির নতুন মালিকানার তথ্য হালনাগাদ করা হয়। এটিই রেজিস্ট্রি অফিসের স্বীকৃতি এবং প্রপার্টির হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সফল সমাপ্তি নির্দেশ করে। তাই, যে কোনো ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি নিজের নামে রেজিস্ট্রি হওয়ার পর মিউটেশন করে নিতে ভুলবেন না।  

লিজহোল্ড প্রপার্টি ও ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনী সহায়তাগুলো রয়েছে বিপ্রপার্টির লিগ্যাল সল্যুশনে। আমাদের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার সাথে যোগাযোগ করে লিজহোল্ড প্রপার্টি ও ফ্রিহোল্ড প্রপার্টি এর আইনী জটিলতাগুলো এড়াতে পারেন খুব সহজে আর পছন্দের প্রপার্টিতে বিনিয়োগ করতে পারেন নিশ্চিন্তে। তাই প্রপার্টির ধরণ যেমনই হোক এর ডকুমেন্টেশন, ভেটিং, মিউটেশন, অকুপেন্সি সার্টিফিকেটসহ যে কোনো প্রয়োজনে চলে আসুন বিপ্রপার্টিতে।  

Write A Comment

Author