কোন মুভি দেখে হোক কিংবা নিজের সামনে কাউকে দেখে, আমাদের সবারই ইচ্ছে থাকে নিজেদের শরীরকে ফিট রাখার। সেজন্য বেশিরভাগ মানুষ বেছে নেন ব্যায়ামাগার বা জিমন্যাশিয়ামকে। ঢাকা শহরসহ সারা দেশেই এখন গড়ে উঠেছে অনেক জিম যেখানে শুধু ব্যায়ামের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামই নয় বরং পরিবেশও মেলে। তবে, সময়ের সাথে সাথে মানুষের ব্যস্ততাও বাড়ে। তাই ছাত্র জীবনে যত সহজে সময় বের করা সম্ভব জিমের জন্য, কর্মজীবনে তা কিছুটা কঠিন। সেক্ষেত্রে চমৎকার বিকল্প হতে পারে যদি বাসাতেই আপনি একটি হোম জিম বানিয়ে নিতে পারেন। কীভাবে বাসায় একটি হোম জিম বানাবেন এবং ব্যায়ামের পরিবেশ গড়ে তুলবেন? সেই বিষয় নিয়েই সাহায্য করতে এই লেখার অবতারনা। ধাপে ধাপে দেখে নেব কীভাবে আপনি বাসাতেই তৈরি করে ফেলতে পারেন সেটি।
কোথায় হবে হোম জিম সেই জায়গা নির্ধারণ করুন
বাসাতে জিম তৈরি করার প্রথম ধাপ হল একটি স্থান নির্ধারন করা। অনেক বেশি স্পেস যে লাগবে এমন না, হাত পা প্রশস্থ করা যায় এটুকু জায়গা হলেই চলবে। জন্য নিজের স্টাডিরুম কিংবা গেস্টরুমই যথেষ্ট। যদি তা না থাকে তাহলে বসার ঘর বা ড্রয়িং রুমকেও চাইলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে ড্রয়িংরুমে যেহেতু আগে থেকেই বেশ কিছু জিনিসপত্র থাকে তাই অনেক সরঞ্জাম লাগে এমন ব্যায়াম সেখানে না করাই ভাল। তবে কাজ চালিয়ে নেয়া সম্ভব অবশ্যই। অনেক বড় জায়গা না পেলেও যেটুকু জায়গা আছে তারই সঠিক ব্যবহার করুন।
ব্যায়ামের জন্য আদর্শ পরিবেশ নিশ্চিত করুন
স্থান নির্ধারন হয়ে গেলে নজর দিন জিমের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরির দিকে। যে রুমে হোম জিম হবে সেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কারণ ওয়ার্কআউটের জন্য আলো বাতাস জরুরী। রুমের কৃত্রিম আলোও হবে হবে সাদা, মৃদু আলো, যা চোখের উপর চাপ সৃষ্টি না করে। সম্ভব হলে রুমের একদিকে বড় একটি আয়না লাগিয়ে নিন। এতে ব্যায়াম সঠিক পদ্ধতিতে হচ্ছে কী না তা দেখা যাবে, এবং ওয়ার্কআউটের প্রতি আরও আগ্রহ জাগবে। আর রুমে যদি সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তো আরও ভাল!
যথাযথ সরঞ্জাম দিয়ে সাজিয়ে নিন আপনার হোম জিম
হোম জিম বানানোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এখন দরকার জিমের জন্য কিছু সরঞ্জামের। জিনিসের আতিসায্যে ভরে ফেলার কোন দরকার নেই, বরং শুধুমাত্র যা না হলেই না, প্রথমে তা সংগ্রহ করুন। শুরুতে একটি ইয়োগা ম্যাট কিংবা এক্সারসাইজ ম্যাট নিয়ে আসুন, যার উপরে আপনি শুধু যে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারবেন তাই না, চাইলে হেভি ওয়েট লিফটিং ও করা যাবে। স্ট্রেচিং এবং পেশীর ব্যায়ামের জন্য রেজিস্ট্যান্টস ব্যান্ড ও কিনতে পারেন। এছাড়া ভারত্তোলনের জন্য (ওয়েট এক্সারসাইজ) ডামবেল কিংবা কেটেলবেল কিনতে পারেন। বাজেট এবং স্থানসংকুলান হলে একটি দৌড়ানোর যন্ত্র তথা ট্রেডমিলের জায়গা হতে পারে আপনার হোম জিমে। তবে না হলেও ক্ষতি নেই, সামান্য একটি জাম্প রোপই হতে পারে আপনার কার্ডিও এক্সারসাইজের সমাধান। আর এর সবই একদিনে একইবারে কিনে ফেলতে হবে এমন না। স্থান নির্ধারন হয়ে গেলে আস্তে আস্তে গড়ে তুলুন আপনার সাধের হোম জিম ।
ব্যবহার শুরু করুন আপনার নিজের জিম
ব্যস! হয়ে গেল আপনার হোম জিম! তবে, এ কেবল শুরু। এতটা শ্রম এবং অর্থ দিয়েছেন এর পেছনে, সময় এখন একে কাজে লাগানোর! আপনার সুবিধাজনক সময়কে মাথায় রেখে রুটিন তৈরি করুন। জোগাড় করা সরঞ্জামের উপযুক্ত ব্যবহার করুন। আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনাও কিন্তু জরুরী। আর সবচেয়ে জরুরী হল কখনোই হাল না ছেড়ে দেয়া!
বাড়িতে নিজের একটি হোম জিম তৈরি করাকে প্রথমে মনে হয় অত্যধিক কঠিন কাজ। কিন্তু ধাপেধাপে আগালে সেই কাজ হয়ে উঠে জলবৎ তরলং। আর সেই গাইড হিসাবেই কাজ করবে এই ব্লগটি। আমাদের এই নির্দেশনা কী আপনার কাজে লেগেছে? মন্তব্যের ঘরে জানাতে ভুলবেন না। আর এমনই চমৎকার সব ব্লগ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের বিপ্রপার্টি ব্লগে।