বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ি বাকিংহাম প্যালেস আছে সেই সুদূর লন্ডনে আর আমরা সবাই জানি ইংল্যান্ডের রানীর দখলে আছে এই বাড়িটি। বিলাসবহুল এই বাড়িটির নির্মাণ ব্যয় ছিল ১.৫৫ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের দ্বিতীয় বিলাসবহুল বাড়ি হচ্ছে মুকেশ আম্বানির ২৭ তলা বিশিষ্ট অ্যান্টালিয়া। আর এই বাড়িটিও তৈরি করতে অর্থ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের মত। যেহেতু বাকিংহাম প্যালেস ইংল্যান্ডের রাজকীয় প্রপার্টি তাই প্রাইভেট প্রপার্টি হিসেবে অ্যান্টালিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ি বলা হয়। এই বাড়িগুলো সম্বন্ধে জানার আছে আরও অনেক কিছু। চলুন শুরু করা যাক।
বাকিংহাম প্যালেস, ইংল্যান্ড

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাসভবন বাকিংহাম প্যালেস বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়ি। ওয়েস্ট মিনিস্টার শহরে অবস্থিত এই রাজপ্রাসাদটি নির্মাণ করা হয় ১৭০৩ সালে। এই প্রাসাদটিতে রয়েছে মোট ৭৭৫ টি কক্ষ, ১৪৪ টি স্টাফ রুম রয়েছে, যার মধ্যে ৫২টি রাজকীয় ও অতিথি শয়নকক্ষ, ৯২টি অফিস, ৭৮ টি বাথরুম এবং ১৯টি স্টেট রুম রয়েছে। এই প্রাসাদে আরো রয়েছে একটি পোস্ট অফিস, সিনেমা হল, সুইমিং পুল এবং জুয়েলারির কারখানা। এছাড়াও এই প্রাসাদে সংরক্ষিত আছে ভিন্ন ভিন্ন রাজতন্ত্রের ইতিহাস বহনকারী নিদর্শন। রানী এলিজাবেথের গ্যালারিতে রয়েছে বিখ্যাত সব চিত্রশিল্পীর কাজ- ভারমির, রুবেন্স, কানালেতো, দুচিয়ো এবং দুরের। প্রাসাদের ছবির কালেকশনের মধ্যে রয়েছে ৭ হাজার পেইন্টিং, ৫ লাখ প্রিন্ট এবং ৩০ হাজার ওয়াটার কালার এবং ড্রয়িং।
অ্যান্টালিয়া, ভারত

মুকেশ আম্বানি যে বাড়িতে বসবাস করেন সেটি কোন সাধারণ বাড়ি নয়, সেটি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও বিলাসাবহুল বাড়ি। এই বাড়িটি ২৭ তলা আর সেখানে বাস করেন আম্বানি পরিবারের মোট ছয় সদস্য। আর তাদের সেবায় নিয়োজিত আছেন ৬০০ কর্মচারী। বাড়িটির নাম রাখা হয়েছে আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে এক রহস্যময় দ্বীপের নামানুসারে। ভারতের মুম্বাইয়ে সবচেয়ে বিলাসবহুল এলাকা হিসেবে পরিচিত আলটামাউন্ট সড়কে এ বাড়িটির অবস্থান। বাড়ির মোট আয়তন চার লাখ স্কয়ার ফিট। ভবনটি ২৭ তলা বিশিষ্ট হলেও কিন্তু উচ্চতায় এটি স্বাভাবিক ২৭ তলা ভবনেরও দ্বিগুণ বা তার চেয়েও বেশি। ভবনের মোট উচ্চতা ৫৬৮ ফুট, এই উচ্চতায় সাধারণ একটি ভবন হতে পারে ৬০ তলা। ভবনের একটি বিশেষত্ব হলো রিখটার স্কেলে আট মাত্রার ভূমিকম্প অনায়াসে সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে।
ভীল্লা লিওপোল্ড, ফ্রান্স

সমূদ্রের কিনারা ঘেঁষে অবস্থিত এই বাড়ির চারপাশে অসংখ্যা গাছপালায় ঘেরা গার্ডেন রয়েছে। ফ্রান্সের কোট ডি’আজ্যুরে এর অবস্থান। ৫০ একর জমির উপর অবস্থিত এই বাড়িটি ‘কমার্শিয়াল গ্রিন হাউজ’ হিসেবেও পরিচিত। এতে একটি সুইমিং পুল, পুল হাউজ, আউটডোর কিচেন এবং গেস্ট হাউজ রয়েছে। ১৯৫৫ সালে হিচককের ‘টু ক্যাচ আ থিভ’ ছবিতে এই বাড়িটি ব্যবহৃত হয়। ব্রাজিলীয়ান সমাজতান্ত্রিক ও লেবাননের ব্যাংকার উইলিয়াম সাফার এর বিধবা স্ত্রী লিলি সাফরা এই বাড়ির মালিক। এর মূল্য ৭৫ কোটি ডলার।
কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেন, লন্ডন

লন্ডনে অবস্থিত রাজকীয় এই বাড়ির মালিক রাশিয়ান ধনকুবের রোমান আব্রামোবিচ। তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের বিখ্যাত দল চেলসি ফুটবল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা। সুবিশাল এই বাড়িতে টেনিস কোর্ট, প্রাইভেট হেলথ সেন্টারসহ একটি জাদুঘরও রয়েছে। আর এই বাড়িটির পাশেই কিন্তু প্রিন্স উইলিয়ামেএবং কেট মিডলটনের প্রাসাদ। এই বাড়িটিতে ১২টি বেডরুম, টার্কিশ বাথ, একটি ইনডোর পুলসহ ২০টি কার পার্কিংয়ের জায়গা রয়েছে। বাড়িটির বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ১৪০ মিলিয়ন ডলার।
এলিসন এস্টেট

ক্যালিফোর্নিয়ার উডসাইডে অবস্থিত এই বাড়ির মালিক হলেন ল্যারি ইলিসন। তিনি ওরাকলের সহ প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ২০১৩ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের তৃতীয় ধনকুবের হিসেবে পরিচিতি পান। ২৩ একর সম্পত্তির উপর ছোট ছোট ১০টি ভবনকে জোড়া দেয়া এই বাড়িটির সামনে লেক রয়েছে। এবং এর পেছনে বেশ ঘন জঙ্গল। সন্ধ্যায় বাড়িটি দেখলে অনেকটা গাঁ ছমছমে ভাব আসবে। তবে এর ভেতরটা অসাধারণ। একটি বাথ হাউজও রয়েছে বাড়িটিতে। এর মূল্য প্রায় ২০ কোটি লাখ ডলার।
এই ছিল আমাদের আজকের তালিকার ৫টি বিলাসবহুল বাড়ি। কোন বাড়িটি আপনার সবচেয়ে পছন্দের? জানিয়ে কমেন্ট করুন।