সাধারণত লিভিং রুমটাই বাড়ির সবচেয়ে বড় ঘর। আর বাড়ির সকল কার্যক্রম হোক তা সকালের চা কিংবা কোন আড্ডা সব যেন হয়ে থাকে এখানেই। বাড়ির অ্যাক্টিভিটি হাব বলা যায় এই ঘরকে। তাই এটা সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার দায়িত্বটা যেন আপনারই। কিন্তু, এই ঘরটা সাজানো গোছানো যেন আরও মুশকিল। কেননা, এই ঘরটা কখনো হয়ে ওঠে সিনেমা দেখার হল আবার কখনো হয়ে ওঠে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার কোজি একটি জায়গা। কখনো বাচ্চাদের খেলার মাঠ আবার কখনো নিরিবিলি সময় কাটানোর ঘর। যে ঘরটি একে একে সব কয়টি ঘরে রূপান্তরিত হয় সেই ঘরের জন্য এম্বিয়েন্ট তৈরি করা কিছুটা কঠিন হতেও পারে। লিভিং রুমে এম্বিয়েন্ট তৈরি করতে বেছে নিতে পারেন এই চমৎকার কিছু লাইটিং হ্যাকস। কেমন সেগুলো জানতে পড়তে থাকুন।
ওভার সাইজ স্টেটমেন্ট লাইট
লিভিং রুমের এম্বিয়েন্ট তৈরি করতে আপনি চাইলে ওভার সাইজ স্টেটমেন্ট লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এটা যেমন ঘরের ভেতর আলাদা একটা পরিবেশ তৈরি করবে তেমনি ওয়ার্ম টোনের একটা আলো দিয়ে থাকবে। আলো জ্বালানোর সাথে সাথে ঘরের ভেতর আলাদা পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। শুধু আলোর মাধ্যমে পরিবেশ হয় তা নয়। এই ওভার সাইজ লাইটগুলো দেখতেও বেশ দৃষ্টি নন্দন। নানান আকৃতিতে খুঁজে পাওয়া এই লাইটগুলো আপনার ঘরের জন্য উপযুক্ত একটি ডেকোর পিস হিসেবে প্রমাণিত হবে। আপনি চাইলে মিড সেঞ্চুরি মডার্ন স্টাইলের যেকোন লাইট বেছে নিতে পারেন।
মরক্কান লেনটার্ন
মরক্কান লেনটার্ন ব্যবহারের জন্য একদমই প্রয়োজন নয় যে কোন নির্দিষ্ট স্টাইল ডেকোর আপনার বাসায় থাকতেই হবে। মরক্কান লেনটার্ন দেখতে ভীষণ সুন্দর। একদম যেন স্বপ্নপুরী থেকে নিয়ে আসা এক টুকরো জ্যোৎস্নার আলো। আলো ছায়ার একটা আবহ তৈরি করতে লিভিং রুমের জন্য বেছে নেওয়া যায় এই লেনটার্নগুলো। বিভিন্ন আকৃতিতে পাওয়া যায় এই লেনটার্নগুলো। গায়ে খচিত থাকে নানারকম নকশা। কোথাও আয়না বসানো কথাও আবার রাখা হয়েছে রঙের কারুকাজ। সবকিছু মিলিয়ে ঘরের ভেতর এক অন্যরকম আম্বিয়েন্ট তৈরি করবে মরক্কান লেনটার্ন।
ঝাড়বাতি
ঘরের সৌন্দর্যে ঝাড়বাতির খ্যাতি অনেক আগে থেকেই। ঝাড়বাতির ব্যবহার কেবল লিভিং রুম ছাড়িয়ে ছড়িয়ে গেছে বাড়ির সব জায়গায়। ঝাড়বাতি যেমন ঘরের মধ্যে পর্যাপ্ত আলো ছড়ায় তেমনি দেখতেও বেশ দৃষ্টিনন্দন। বাহারি নকশায় এগুলো বেশ চমৎকার লাগে দেখতে। ঝাড়বাতি ডিজাইন স্টাইল, শেপ, মেটারিয়াল এবং লাইটিং স্টাইল ভেদে নানারকম হতে পারে। এবং আপনার ঘরের ডেকোর অনুযায়ী এই ঝাড়বাতিগুলো বেছে নিতে হবে। আপনি চাইলে ঘরের ভিতর দুই রকম স্টাইলের ফিউশন করতে পারবেন আবার চাইলে স্টাইল মিলিয়েও ঝাড়বাতি কিনতে পারবেন।
রঙিন লাইট
রঙিন লাইট বলতে বঝানো হয়েছে রং বেরঙের লাইটকে। সাধারণত এম্বিয়েন্ট লাইটও অনেকে বলে থাকেন। বিগত সময়ে আমরা দেখেছি ঘরের জন্য কেবল সাদা ও হলুদ বাতি ব্যবহার করতে। কিন্তু, সময়ের সাথে হোম ইন্টেরিয়রে বিভিন্ন রঙের আলোর ব্যবহারও দেখা গিয়েছে। লাল, হলুদ, নীল ও বেগুনি রঙের লাইট দেখা যায়। এই রঙগুলো ঘরের ভেতর খুব সহজেই একটা এম্বিয়েন্ট তৈরি করতে পারে। যেটা আপনি সাদা বা হলুদ রঙের লাইটে পাবেন না। আপনি চাইলে দেয়ালের রঙের সাথে মিলিয়ে লাইট বেছে নিতে পারেন আবার চাইলে বিপরীত রঙের লাইটও বেছে নিতে পারেন। ঘরে খুব বেশি কিছু না করেও অনেক কিছু করা যায় শুধু মাত্র এই লাইটের মাধ্যমে।
ভাস্কর্য লাইট
স্কাল্পচার লাইট হিসেবে খ্যাত এই লাইটগুলো এম্বিয়েন্ট তৈরি করার পাশাপাশি ঘরের ভেতর সুন্দর একটি আবহ তৈরি করতে পারে। এনে দিতে পারে একটি স্টাইলিশ লুক। এই ভাস্কর্য লাইটে দেখা যায় নানা রকম রং ও আকৃতির বাল্ব। ভাস্কর্য লাইট আকৃতিতে একটু বড় হতে পারে। তাই এক রঙা লাইট ব্যবহার করা হলেই ভালো। ভাস্কর্যের আকার অনুযায়ী আপনি বিভিন্ন রকম লাইট বেছে নিতে পারেন। এম্বিয়েন্ট তৈরির পাশাপাশি ঘরের ভেতর একটা শৈল্পিক পরিবেশও তৈরি হয়ে গেল সহজে।
লিভিং রুমে এম্বিয়েন্ট তৈরি করতে এই কয়েকটি উপায় আপনি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। আপনার ঘরটা হয়তো নতুন একটি রূপ পাবে। আপনার কাছে কোন লাইটিং হ্যাকসটি বেশি পছন্দ হয়েছে তা জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না যেন!