এখনকার ফ্ল্যাটগুলোতে প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের বাতির ব্যবহার। টাংস্টেন, ফ্লোরোসেন্ট ও এনার্জি বাল্ব এর যুগ পেরিয়ে এখন এলইডি বাল্ব এর জনপ্রিয়তা সর্বত্র। তাই জানতে হবে, কোন ঘরে কতটুকু আলো দরকার এবং সেই আলোর জন্য বাল্ব বা বাতির ধরন কেমন হবে। আলো ইন্টেরিয়র ডেকোরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি আপনার জীবনকেও নানাভাবে প্রভাবিত করে। প্রাকৃতিক আলোর পাশাপাশি আমরা চাইলেই বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম লাইটের মাধ্যমে ঘরকে আলোকিত করতে পারি। আলোর সাহায্যে ঘরের আকৃতিতেও আসে ভিন্নতা। সঠিকভাবে লাইট ব্যবহার করলে আপনার ছোট্ট এবং অন্ধকার ঘরটিও বড় ও উজ্জ্বল দেখাতে সহায়তা করবে। ফুটে উঠবে বাড়ির আলাদা সৌন্দর্য। বিভিন্ন ঘরের জন্য লাইট নিয়ে লেখা আজকের ব্লগটি। পড়তে থাকুন!
শোবার ঘর
সবার কাছেই নিজস্ব এক ভুবন হচ্ছে শোবার ঘর। শোবার ঘরের লাইট হতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী। এই ঘরেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো হয় আবার তেমনি আরাম ও অবসরও কাটে। শোবার ঘরে বিছানার পাশে একটি টেবিলে ল্যাম্প শেড রাখা যেতে পারে আবার একটা ঝুলন্ত লাইটও রাখা যেতে পারে। ঘুমানোর আগে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে বা বই পড়ার সময় এই লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। শোবার ঘরে নরম বা হালকা আলো ব্যবহার করাই ভালো। তবে, টেবিলে একটি উজ্জ্বল আলো রাখা যেতেই পারে। সেজন্য স্পট-লাইট ব্যবহার করা যায়। এছাড়া শোবার ঘরে কাজ করলে উজ্জ্বল লাইট লাগানো যেতে পারে। এলইডি লাইটের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে সুতরাং, শোবার ঘরের জন্য এলইডি বেছে নিতে পারেন।
বসার ঘর
ঘরের ধরন ও আকার অনুযায়ী আলোর ধরন ও পরিমাণ নির্বাচন করতে হবে। এক ঘরে এক ধরনের আলো না রেখে কয়েক রকম আলোর সংমিশ্রণ রাখুন। প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে সেই সাথে ঘরের সাজেও বৈচিত্র্য আসবে। যেমন বসার ঘরে দেয়ালের আলোর পাশাপাশি রঙিন আলোর এক বা একাধিক টেবিল ল্যাম্প রাখতে পারেন। সেন্টার টেবিলের উপরে গুচ্ছাকারে বা সারি বেধে কয়েকটি ঝুলন্ত লাইট লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। ঘরের কোণা সাজানো থাকলে সেখানেও লাইট লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। লাইটগুলো উপর থেকে নিচের দিকে লাগালে বেশ ভালো দেখা যাবে। বসার ঘরের থিমের সাথে মানিয়ে দেশীয় বা আধুনিক যে কোনোভাবে সাজানো যেতে পারে। তাহলে বসার ঘরের আড্ডা আরো জমে উঠবে।
খাবার ঘর
ডাইনিং রুমটা কেবল খাবার খাওয়ার ঘর না। কখনো এটি ডিনার পার্টি কখনো অফিস ডেস্ক আবার কখনো মিটিং রুম। যেন একের ভেতর সবকিছু। অফিসের থেকে পারিবারিক সময়টা এখানেই বেশি কাটানো হয়। গল্প আড্ডায় চায়ের কাপগুলো এখানেই জড়ো হয় বেশি। যে ঘরটা একেক সময় একেক রূপে ধরা দেয় সেই খাবার ঘরটার ডেকোরও হওয়া চাই একদমই আলাদা। আর হোম ডেকোরে বরাবরই লাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নানা রকম কৃত্রিম আলোর সাহায্যে আপনি পেতে পারেন বিভিন্ন রকমের আমেজ। সেই আলোটি যদি হয় ঝুলন্ত লাইট তাহলে দেখতেও সুন্দর লাগবে, কাজেও দিবে। খাবার ঘরে যদি কোন পেইন্টিং বা ছবি থাকে সেটাকে আলোকিত করার জন্য স্পটলাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। টেবিলে মাপ অনুযায়ী পরিমানমতো ঝুলন্ত লাইট টেবিলের উপরে ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। গোলাকার টেবিলে ত্রিভুজের মতো করে সাজিয়ে দেওয়া যেতে পারে। লাইট এমনভাবে ঝোলাতে হবে যাতে আলো খাবারে পড়ে।
রান্নাঘর ও বাথরুম
রান্নাঘরের দেয়ালে ও উপরের ক্যাবিনেটের নিচের দিকে পর্যাপ্ত লাইট রাখুন। এতে কাটা-বাছা ও রান্নার সময় সুবিধা হবে। বাথরুমে আয়নার ওপর এবং শাওয়ারের জায়গায় যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা রাখা জরুরি। রান্নাঘর ও বাথরুমের জন্য ১০ থেকে ১২ ওয়াটের একাধিক এলইডি লাইট রাখুন।
করিডোর
করিডোরের ক্যাবিনেটে একটি ঝুলন্ত লাইট লাগানো যেতে পারে। তাহলে ঘরের সৌন্দর্য আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। বারান্দায় বসার ব্যবস্থা থাকলে একটি লাইট লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। দেশীয় মোটিফের গোলাকার বা বলের মতো লাইট লাগানো যেতে পারে।
বিভিন্ন ঘরের জন্য লাইট নির্বাচন করতে হবে ঘরের ধরন বুঝে। কেমন আলো পছন্দ করছেন এবং ঘরের দৈর্ঘ্য কেমন এই দুটো বিষয় বিবেচনা করে তবেই লাইট বেছে নিন।